স্টাফ রিপোর্টার : বরিশালে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দোল পূর্ণিমা উৎসব পালিত হচ্ছে। সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল থেকেই মন্দিরে মন্দিরে পূজার আয়োজন করা হয়।
এছাড়া নিজেদের বসতবাড়িতেও ভগবানের পূজা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। পরে রং খেলায় মেতে ওঠেন তারা।
দোল উৎসব উপলক্ষে দেশের সব থেকে বড় আয়োজন ছিল বরিশাল নগরের এলাকার শ্রী শ্রী শংকর মঠে। এখানে পূজা উদযাপন কমিটি-১৪৩০ এর উদ্যোগে সকালে শিব পূজার মধ্য দিয়ে শ্রী শ্রী শংকর মঠে উৎসবের শুরু হয়।
সকাল সাড়ে ১০টায় দোল উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শ্রী শ্রী শংকর মঠ পূজা উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ট্রাস্টি ভানু লাল দে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সুরঞ্জিত দত্ত লিটু, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষ বিষু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ গোপাল সাহা, শ্রী শ্রী শংকর মঠ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কানু সাহা ও সাধারণ সম্পাদক তন্ময় দাস তপু।
পরে মঠ প্রাঙ্গণে তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আবির খেলায় মেতে ওঠেন। যে উৎসবের আনন্দ বাড়িয়ে দেয় ডিজে গান, যা পরিচালনা করেন ডিজে আজিম। এরপর দুপুর দেড়টায় মঠ প্রাঙ্গণে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।
শ্রী শ্রী শংকর মঠ পূজা উদযাপন কমিটির সহ-সভাপতি আকাশ দাস বলেন, শ্রী শ্রী শংকর মঠে এবারের দোল উৎসবের আয়োজন শুধু বরিশাল নয়, গোটা দেশের মধ্যেই সব থেকে বড় আয়োজন। যেখানে শুধু বরিশাল নয় ফরিদপুর, রাজশাহী, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের বাসিন্দারা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে দেড় হাজারের বেশি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অংশগ্রহণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, এ আয়োজনকে ঘিরে আগে থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি আগে থেকেই নেওয়া ছিল। অংশগ্রহণকারীরা সবাই আগে থেকে কুপন ও টি-শার্ট সংগ্রহ করেছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে কুপন ছাড়া কেউ মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। আর যথেষ্ট ভলান্টিয়ারও রাখা ছিল। ফলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই উৎসবমুখর পরিবেশে এত বড় আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে ভক্ত ও কলেজ ছাত্রী সম্পা দাস বলেন, ভারতসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় দোল উৎসবে অংশগ্রহণ করেছি, তবে এত শৃঙ্খল ও উৎসবমুখর পরিবেশে বিশাল এ আয়োজন বরিশালেও যে সম্ভব তা বুঝিয়ে দিল শংকর মঠ পূজা উদযাপন কমিটি। যেখানে শত শত বিভিন্ন শ্রেণি ও বয়সের নারী-পুরুষ হোলি খোলায় মেতে ওঠেন আপটন মনে। আশা করি তারা এ ধারাবাহিকতায় বজায় রাখবে।
এদিকে সরকারি ব্রজমোহন কলেজেও দোল উৎসব পালন করা হয়। রাধা কৃষ্ণের অষ্টসখীর নৃত্যের তালে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ চত্বরে শুরু হয় দোল উৎসবের এখানকার সূচনাপর্ব। মানুষে মানুষ প্রেম ভালোবাসার বন্ধনে অনিন্দ্য সুন্দর পৃথিবী গড়ার বার্তা দেওয়া হয়। আবিরের রঙে রঙিন করে একে অপরের সঙ্গে সৌহার্দ্য স্থাপনেই এ আয়োজন বলে জানান আয়োজক সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
উল্লেখ্য, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন রাধা কৃষ্ণের মূর্তিতে আবির মাখিয়ে ভজন কীর্তনে ভক্তেরা পরস্পর রং খেলেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোল পূর্ণিমা বলা হয়। আবার এ পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌর পূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।