Take a fresh look at your lifestyle.

উজিরপুর উপজেলার সাতলায় মৎস্য ঘের নিয়ে জটিলতায় সংবাদ সম্মেলন

২৯

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশাল উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের পটি বাড়ি মৎস্য ঘেরে মাছ চাষ নিয়ে জটিলতার তথ্য উপস্থাপন করে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৯ মে) বেলা বারো টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পটি বাড়ি মৎস্য ঘের কমিটির সদস্যবৃন্দর আয়োজনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- মো: ফজলুল হক বিশ্বাস।

তিনি বলেন, আমি উজিরপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক, বরিশাল জজ কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এ.পি.পি), সাতলা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাতলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড এর অন্তর্গত পটি বাড়ি মৎস্য প্রকল্পের নব গঠিত কমিটির প্রধান সমন্বায়ক হিসেবে উক্ত সংবাদ সম্মেলন করতে এসেছি।

আমার সাথে রয়েছেন উপজেলা ৯নং ওয়ার্ডের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির সভাপতি জাকির খন্দকার এবং বাংলাদেশ ইসলামি আন্দোলনের ৯নং ওয়ার্ডের সভাপতি শাহিন সরদার এবং ৭নং ওয়ার্ডের সভাপতি আতাহার বিশ্বাস সহ বিশ্বস্ত সহযোগীরা।

বরিশালের কম বেশি প্রায় সকলেই জানে উজিরপুরের সাতলা ইউনিয়নে ছোট বড় মিলে শতাধিক মাছের ঘের রয়েছে। এর মধ্যে পটি বাড়ি মৌজায় হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় দুই হাজার বিঘা জমি নিয়ে একটি মাছের ঘের রয়েছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এ মাছের ঘেরটি প্রয়াত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উজিরপুর উপজেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল খালেক আজাদ জোরপূর্বক জবর দখল করে মাছ চাষ করে আসছিলেন। এ মাছের ঘেরটির জমি হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের হলেও তাদের কাছ থেকে কোন শেয়ার নেয়নি তিনি। গায়ের জোরে তার ২/৪ জন কর্মি সমর্থককে নিয়ে একাই মাছের ঘেরটি ভোগ দখল করেছিলেন খালেক আজাদ।

এ কারণে অল্প দিনের মধ্যেই অর্ধশত কোটি টাকার মালিক হয়েছিলেন তিনি। খালেক আজাদের মৃত্যুর পর তার পুত্র উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর মিঞা জোর পূর্বক মাছ চাষ শুরু করেন। তাদের সাথে সহযোগী হিসেবে ছিলেন বিএনপির নামধারী নেতা বলে দাবিদার মো: আনোয়ার মিঞাসহ তার সাঙ্গ পাঙ্গরা। ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এলাকা থেকে আত্মগোপনে চলে যায় আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত আব্দুল খালেক আজাদের পুত্র উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর মিঞা। কিন্তু আ.লীগ সরকার পতনের পর মো: আনোয়ার মিঞা নিজেকে বিএনপির বড় নেতা দাবি করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করে।

এমনকি আ.লীগের নেতা মশিউরের দোসর আনোয়ার মিঞা আ.লীগ নেতা কর্মীদের কাছে বলেন, আমি মাছ চাষ করলেই মশিউরের মাছ চাষ করা হয়ে যাবে। আমি মানেই মশিউর। মশিউরের ইশারা এবং মশিউরের টাকায়ই সব কিছু হচ্ছে। তাই আপনারা আমার সাথে থাকবেন। এমনকি ওয়ার্ড বিএনপি নেতা বলে দাবিদার আনোয়ার মিঞা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে পটি বাড়ি আমতলা কার্তিক মন্ডল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বৈঠক করেন। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃস্টি হয় এবং বিএনপি নেতাকর্মীরা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পরেন।

মাষ চাষ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ বিএনপি নেতা কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে এলাকার প্রকৃত ভূমি মালিকদের নিয়ে মাছ চাষ করার নির্দেশ দেন। এ লক্ষ্যে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম আলাউদ্দিন ও সদস্য সচিব মো: হুমাউন খান এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি মাছ চাষের জন্য আমাকে (ফজলুল হক বিশ্বাস) প্রধান সমন্বায়ক করে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট একটি সার্চ কমিটি গঠন করে একত্রে মাছ চাষ করার সিদ্ধান্ত দেন। ওই কমিটির ২ নম্বর সমন্বায়ক করা হয় আনোয়ার মিঞাকে।

কিন্তু এতে ক্ষিপ্ত হন নামধারী বিএনপি নেতা আনোয়ার মিঞা। সার্চ কমিটি ও দলীয় সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে আওয়ামী লীগ নেতা মশিউরের নির্দেশে গত ১১ মে সকালে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের নিয়ে ১০/১২ হাজার টাকা মূল্যের অল্প কিছু মাছ ছাড়েন আনোয়ার মিঞা ও তার সমর্থকরা। এ ঘটনার পর দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক কমিটির দুই তৃতীয়াংশ সদস্যদের উপস্থিতিতে আমি গত ১৩ মে সহ দুই দফায় ১০ লক্ষ টাকার মাছের পোনা অবমুক্ত করি।

এ ঘটনার পরদিন ১৪ মে আনোয়ার মিঞা স্থানীয় মুড়ি বাড়ি বাজারে কিছু সাংবাদিক ভাইদের সাতলায় ডেকে নিয়ে আমাকে ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী বাহিনী বলে আখ্যায়িত করে আমার ও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার করেন। এ সময় আনোয়ার মিঞা আওয়ামী লীগ নেতা মশিউরের কিছু কর্মি সমর্থকদের নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখে।

আমি নাকি উল্লিখিত উপজেলা বিএনপি নেতাদের ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ১ বছরের মাছ চাষের কন্টাক নিয়েছি বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে এবং সাংবাদিকদের কাছে এসব অসত্য তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন আনোয়ার মিঞা। এতে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে বলে আমি মনে করছি। একই ভাবে ওই ঘেরে আমার কোন জমি নেই বলে অপপ্রচার শুরু করে।

কিন্তু আমাদের পরিবারের ওই ঘেরে ১২ বিঘা সম্পত্তি রয়েছে যা এলাকার সবাই জানেন।

Auto House

Leave A Reply

Your email address will not be published.