Take a fresh look at your lifestyle.

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কার্যালয়ের প্রেস ব্রিফিং বিষয়ে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের প্রতিক্রিয়া

বিশেষ প্রতিনিধিঃ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কার্যালয়ের প্রেস ব্রিফিং বিষয়ে সমাজের ৮১ বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। তাদের বলছেন, নির্বিচার অগ্নিসংযোগ, পুলিশ হত্যা, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা এবং ভাঙচুরসহ সকল ধরনের সহিংসতাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিবাদ’- এর অন্তর্ভুক্ত করায় এই বিবৃতিটি অপরাধীদেরকে তাদের নৃশংস সহিংস কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ৩১শে অক্টোবর তারিখে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত *বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিবাদ’ শিরোনামের প্রেস ব্রিফিং আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এতে আমরা জানতে পেরেছি যে ২৮শে অক্টোবর তারিখে বিএনপি-জামায়াতের কর্মসূচি ও তৎপরবর্তীতে বাংলাদেশে সংঘটিত সহিংস ঘটনাবলি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। তবে, প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লিখিত কিছু পর্যবেক্ষণ তথ্যনির্ভর মনে হয়নি এবং এ কারণে এটি পুনর্বিবেচনার দাবী রাখে।

বিবৃতিদাতারা সুস্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারকের বাসভবনে হামলাকারী সকল দুষ্কৃতকারীকে বিএনপির কর্মী হিসেবে শনাক্ত করা হলেও জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সেই বিবৃতিতে তার প্রতিফলন ঘটেনি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে-‘বিরোধী দলের কর্মীরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে- এ ধরনের মন্তব্যে প্রকৃত অপরাধীদের পার পেয়ে যাবার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, বিবৃতিতে হামলাকারীদের যাদেরকে সরকারি দলের সমর্থক বলে মনে করা হয়। মন্তব্য করা হয়েছে। এ ধরনের বক্তব্যের কারণে জনমনে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হতে পারে।

বিবৃতিতে তারা বলেন, পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে মারার এবং কুপিয়ে হত্যা করার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কিছু আক্রমণকারী মুখোশ পরে ছিল। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় ( OHCHR)-এর অনুমান যে, মুখোশ পরা আক্রমণকারীরা ছিল ক্ষমতাসীন দলের লোক। তাদের এই অনুমান বিভ্রান্তিকর এবং বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে।
উল্লেখ্য যে, সকল গণমাধ্যম ২৮শে অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের (বিএনপি) সদস্য-সচিব রবিউল ইসলামের ‘প্রেস’ লেখা ভেস্ট পরে গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ছবি ও ভিডিও সহকারে সংবাদ প্রকাশ করেছে। ব্রিফিং নোটে বলা হয়েছে, পুলিশ রড দিয়ে বিক্ষোভকারীদের উপর আক্রমণ করেছে। অথচ এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। বরঞ্চ দেখা গেছে, আক্রমণকারীরা অত্যন্ত সহিংস হয়ে উঠলে পুলিশ বিধি মোতাবেক শুধুমাত্র লাঠি, টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পুলিশের তল্লাশি অভিযান ও নির্বিচার গ্রেফতার নিয়ে অভিযোগ বিষয়ে আমরা মনে করি পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২৮শে অক্টোবর সর্বোচ্চ ধৈর্য্য প্রদর্শন করেছে।

আমরা ওএইচসিএইচআর-কে অনুরোধ করছি যে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারপতির বাসভবনে হামলা, সাংবদিকদের উপর ন্যাক্কারজনক আক্রমণ, পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে মারা, সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ, কয়েক ডজন গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, বাংলাদেশ পুলিশের সেন্ট্রাল ও বৃহত্তম পুলিশ লাইনে হামলা করা, নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা ঘটনার তীব্রতা ও নিষ্ঠুরতা- এ বিষয়গুলি যেন সংঘটিত ঘটনার বিপরীতে গৃহীত ব্যবস্থা মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়। এমতাবস্থায়, উল্লিখিত বিষয় সম্পর্কে তথ্য ও পরিসংখ্যান আরও যাচাই-বাছাই করার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় ( OHCHR)-কে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

বিবৃতিতে সাক্ষরদাতাদের মধ্যে অন্যতম অর্থনীবিদ ডঃ কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ড. সারওয়ার আলী, অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান, মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), জনাব কে.এইচ. মাসুদ সিদ্দিকী, সাবেক সচিব এবং সাবেক সদস্য, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি), মোহাম্মদ নুরুল হুদা, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সচিব ও কলামিস্ট, প্রফেসর ড. মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান, সাবেক উপাচার্য, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত, সাবেক সচিব এবং সাবেক সদস্য, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি), রামেন্দু মজুমদার, অভিনেতা ও মঞ্চ পরিচালক, অধ্যাপক ড. কনক কান্তি বড়ুয়া, সাবেক উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ড. হাসান মাহমুদ খন্দকার, বাংলাদেশের সাবেক মহাপরিদর্শক ও রাষ্ট্রদূত, রাষ্ট্রদূত মোঃ আব্দুল হান্নান, মুক্তিযোদ্ধা লেখক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।

Leave A Reply

Your email address will not be published.