অনলাইনেডেস্ক: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেরারি আসামিরা প্রার্থী হতে পারবে না।এছাড়া অনলাইনে নয়, কেবল সশরীরেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। এছাড়াও প্রার্থী হতে হলে জামানাত দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা। এমন বিধান আনতে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে এমন বিধান আনতে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংস্থাটির সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিং হয়ে এলেই গেজেট করা হবে।
সংশোধনী প্রস্তাব অনুযায়ী, কোনো আদালত থেকে ফেরারি ঘোষিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য হবেন। ফলে মামলায় যারা পলাতক হিসেবে আদালত কর্তৃক ঘোষিত হবেন তারাই আর ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না।
এদিকে প্রার্থীর জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। মনোনয়নপত্র বর্তমানে অনলাইনে দাখিল করা গেলেও তা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রার্থী বা তার প্রস্তাবক বা সমর্থককে সশরীরে রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। তারা তারিখ ও সময় উল্লেখ করে রশিদ দেবেন।
প্রার্থীকে সর্বশেষ ট্যাক্স বছরের রিটার্ন দাখিল করতে হবে৷ দিতে হবে দেশে ও বিদেশে থাকা সম্পদের বিবরণ ও আয়ের উৎস।
আরপিও সংশোধনী প্রস্তাবে সরকারি চাকরিজীবী, কয়েদি ও প্রবাসীদের জন্য অনলাইন নিবন্ধনের মাধ্যমে পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের বিধান যুক্ত করা হচ্ছে। এতে ভোটের হার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রেসিটেন্স যোদ্ধাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের পথও নিশ্চিত হচ্ছে।
একক প্রার্থীর আসনে ‘না’ ভোটের বিধান রাখা হয়েছে। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পথ বন্ধ হচ্ছে৷ এতে কোনো আসনে একজন প্রার্থী থাকলে সেই প্রার্থীকে ‘না’ ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। ‘না’ ভোট জয়ী হলে ফের ভোট হবে। দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী থাকলে তিনিই নির্বাচিত বলে ঘোষিত হবেন।
এছাড়া সমভোটের ক্ষেত্রে লটারি প্রথা বাতিল, অনিয়মের কারণে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা ইসির কাছে পুনর্ন্যস্তকরণ, জোট করলেও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে নিজ প্রতীকে ভোটের লড়াই করা, হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বিষয় প্রমাণ হলে সংসদ সদস্যপদ বাতিল, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সজ্ঞায় আর্মি, নেভি, বিমান বাহিনী ও কোস্ট গার্ডকে যুক্ত করা, ইভিএম বাতিল, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান গ্রহণের সর্বোচ্চ সীমা ২৫ লাখ করা, পুলিশ প্রশাসনের বদলিতে ডিআইজি পর্যন্ত ইসির অনুমতি নির্ভর করা, এআই ভিত্তিক মিথ্যাচারে মিডিয়ার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থার বিধান, দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ বা স্থগিত হলে নিবন্ধনও স্থগিত, নিবন্ধন না দিলে তার কারণ ১৫ দিনের মধ্যে দলকে অবহিতকরণসহ মোট ৪৫টির মতো বিধান যুক্ত হচ্ছে আরপিওতে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইন মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে কোনো পরিবর্তন না এলে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে সংশোধনী প্রস্তাব তোলা হবে। এরপর সেখানে অনুমোদন হলে অধ্যাদেশ আকারে সংশোধন হবে আরপিও।