Take a fresh look at your lifestyle.

বরিশালের বাকেরগঞ্জে বিএনপি নেতার চাঁদা দাবির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের বাকেরগঞ্জে প্রবাসীর মালিকানাধীন বাড়িতে গিয়ে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে চাঁদা দাবি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (১ অক্টোবর) বেলা ১২ টায় বরিশাল রিপোর্টস ইউনিটির হলে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী শিমু বেগম। এসময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে ভিডিওসসহ তথ্য প্রামণ তুলে ধরেন।

শিমু বেগম বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার দাড়িয়াল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ২০২২ সালে তিনি নিজ উদ্যোগে দাড়িয়াল গ্রামে একটি বসতবাড়ি নির্মাণ করেন, যার মালিকানা তার বড় মেয়ে জাহিদা আক্তারের নামে। বাড়ি নির্মাণের পর থেকে তার স্বামী বজলু হাওলাদার বাড়িটি নিজের নামে লিখে নেওয়ার জন্য নিয়মিতভাবে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন। এ বিষয়ে তিনি আইনের আশ্রয় নিলে বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও দাড়িয়াল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মিজান মিয়া মামলা তুলে নেওয়ার জন্য জোরপূর্বক চাপ প্রয়োগ করেন। পরে বাধ্য হয়ে তিনি মামলা তুলে নেন।

শিমু বেগমের দাবি, গত ২২ অক্টোবর তার মেয়ে জাহিদা আক্তার প্রবাস থেকে দেশে ফেরার পর থেকে বজলু হাওলাদার ও তার সহযোগীরা তাদের কাছে নানা অজুহাতে অর্থ দাবি করতে থাকে।

সবশেষে গত (৩১ অক্টোবর) শুক্রবার সকালে কামরুজ্জামান মিজান মিয়ার নেতৃত্বে কয়েকজন লোক তাদের বাড়িতে গিয়ে ৪০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং বাড়িটি বজলু হাওলাদারের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।

শিমু বেগমের অভিযোগ করে বলেন, এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাদেরকে অশালীন ভাষায় গালাগালি করা হয় এবং ‘পোস্টিটিউট’ বলে অপমান করা হয়। এতে পুরো গ্রামের সামনে তারা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হন। পরবর্তীতে পুলিশ বা প্রশাসনের সহায়তা চাইলে বজলু হাওলাদার ও মিজান মিয়া হুমকি দেন “টাকা না দিলে বাড়ি ও এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে।”

শিমু বেগম আরো বলেন, তার দ্বিতীয় স্বামী বজলু হাওলাদারের সঙ্গে প্রায় এক বছর আগে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। তবুও তিনি এখনো বাড়ির মালিকানা দাবি করছেন এবং বিএনপি নেতা মিজান মিয়া তার পক্ষ নিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।

এদিকে, এই ঘটনার একটি ভিডিও সাংবাদিকদের হাতে এসেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বরিশাল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক (দক্ষিণ) ও এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী আবুল হোসেন খানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী এবং বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান মিজান মিয়াকে বলতে শোনা যায়-“তোমরা এখানে ক্যমনে থাকবা, আমি দেখবো?” ভিডিওতে শিমু বেগমের পরিবারকে নানা ধরণের হুমকি-ধামকি দিতেও দেখা যায়।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক (দক্ষিণ) আবুল হোসেন খানের সঙ্গে মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান মিজান মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেন, “ওই নারীর একাধিক বিয়ে হয়েছে। বজলু আমার পাশের গ্রামের বাসিন্দা। সে ওই নারীকে বছরে তিনবার তালাক দিয়েছে। আর যে বাড়ির কথা বলা হচ্ছে, সেটি বজলুর জমির ওপর নির্মিত। তাই বজলু তার মালিকানা বুঝে নিতে চায়।”

তিনি আরও বলেন, “ওই নারী পাশের এলাকার কামাল মাস্টারের সঙ্গে পরকীয়ার পর তাকে বিয়ে করেছে। কিন্তু সেই স্বামীর বাড়ি যায় না।”

তাদের এলাকা ছাড়তে বলা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে মিজান মিয়া বলেন, “যেহেতু তার বজলুর সঙ্গে তালাক হয়েছে, তাই ওই নারীকে বলেছি কামাল মাস্টারের সঙ্গে গিয়ে থাকুক।”

৪০ লাখ টাকার দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি ৩১ অক্টোবর তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম সালিসিতে। বজলু বলেছে বাড়ি করতে ৬৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, ওই নারী দিয়েছে ২৮ লাখ টাকা। এখন যদি ওই বাড়িতে বজলুকে থাকতে না দেয়, তাহলে তার পাওনা ৪০ লাখ টাকা দিয়ে দেবে। এখানে কোনো চাঁদা দাবি করা হয়নি।”

অন্যদিকে, বজলু হাওলাদার বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। আমি ১৯৯৮ সাল থেকে ব্যবসা করি। ২০১৯ সালে এই বাড়ি করতে গিয়ে বাবার সম্পত্তি বিক্রি করেছি। এখন সেই বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে।”

তিনি আরও দাবি করেন, “তাদের বলা হয়েছে, তারা তাদের অংশ নিয়ে যাবে, আর আমি যা পাই বুঝে নেব। কিন্তু তারা কোনো শালিষ মানে না।”

Auto House

Leave A Reply

Your email address will not be published.