Take a fresh look at your lifestyle.

বরিশালে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জমে উঠেছে বরিশালের ঈদের বাজার। সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত কেনা-কাটায় ব্যস্ত থাকছেন নগরীর মানুষজন। তবে ছুটির দিনে বেশি ভির দেখা যাচ্ছে ঈদ বাজারে। ছুটিতে ঈদের কেনাকাটা সেরে ফেলছেন বরিশালের বেশির ভাগ মানুষ। পহেলা বৈশাখ থেকে নগরীর ঈদবাজার জমজমাট হয়ে উঠেছে।

তীব্র গরম উপেক্ষা করে রবিবার ক্রেতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। অবশ্য করোনার সংকট কাটিয়ে না ওঠা অনেক পরিবার বাজারে গিয়ে বাজেটের সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে। কেননা নানা প্রলোভনে পোশাকের দাম উঠছে আকাশচুম্বী। টানা দুই বছর পর ব্যবসায়ীরা এবার লাভের মুখ দেখার আশায় থাকলেও পণ্যের মান ও গলাকাটা দাম নিয়ে হতাশ ক্রেতারা।

ঈদ মৌসুম পোশাক কিনতে আসা অনেক ক্রেতা পোশাক দেখে পছন্দ না হলে বিক্রয়কর্মীদের রোশানলের শিকার হচ্ছে। বরিশাল নগরীর ঈদবাজারে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা এখন অহরহ। নগরীর চকবাজার, কাটপট্টি, সদর রোড, ফজলুল হক অ্যাভিনিউ, নতুন বাজার, পুলিশ লাইন রোড, বটতলাসহ বিভিন্ন সড়কের শপিংমলগুলোতে পোশাক কেনাকাটায় প্রতিনিয়তই ভিড় বাড়ছে। মেয়েদের বাহারি পোশাক, থ্রি পিস, শাড়ি ও পুরুষের শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জাবি, বাচ্চাদের পোশাক কিনতেই স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করছেন সবাই। দেশি পণ্যের পাশাপাশি বিদেশি পণ্যও কিনতে ঝুকছেন ক্রেতারা। তবে আগামী ২/১ দিনের মধ্যে বরিশালের ঈদ বাজারে আরো বেশি ভিড় হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা।

নগরীর সাগরদী এলাকা থেকে শপিংমলে পোশাক কিনতে আসা আফিফা সুলতানা পিনা বলেন, গত দুই বছর করোনাকালীন সময়ে শপিংমলে এসে পোশাক কিনতে পারিনি। এ বছর করোনা সংক্রমন একটু কমায় শপিং করতে এসেছি। তবে শপিংমলে নতুন পোশাকের উপস্থিতি একটু কম। আর পোশাকের দামও আগের তুলনায় একটু বেশি।

একাধীক ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নগরীর গীর্জা মহল্লা ও চকবাজারের অধিকাংশ দোকানে ঈদকে কেন্দ্র করে বেচাকেনার নামে গলা কাটছে ব্যবসায়ীরা। দামের সঙ্গে মানের মিল নেই।

চকবাজারের পোশাকের জোনাকি মার্কেটে থ্রি-পিস কিনতে আসা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সাথী আক্তার জানান, এবারের অধিকাংশ কালেকশনই পুরোনো। যে থ্রি-পিস ৩ হাজার টাকা হাঁকানো হয়েছে, তা ঢাকা থেকে তিনি কিনে এনেছেন ১ হাজার ৮০০ টাকায়। সদর রোডের অভিজাত পোশাকের দোকান দাম নিয়ে আরও অসন্তোষ ক্রেতাদের। সংগ্রহও পুরোনো বলে দাবি করেন অনেকে। তবে প্রতিবছর বাজারে বাহারী নামের পোশাক থাকে, এ বছরও তেমন বাহারী নামের পোশাকের উপস্থিতি লক্ষ্যকরা গেছে। তার মধ্যে ‘কাঁচা বাদাম’ উল্ল্যেখযোগ্য। কাঁচা বাদাম ছাড়াও পুষ্পা ও সাহারারা নামের বাহারি পোশাকের চাহিদা বাজারে এবার অনেক বেশি। প্রলোভন দেখিয়ে এসব পোশাক বিক্রি হচ্ছে উঠতি তরুণ-তরুণীদের কাছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পোশাকে এই নাম বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের পণ্য আছে কি না জানা নেই। যদিও কিছু দোকানে ক্রেতাদের ভিড় যেমন বেশি তেমনি দামটাও সাশ্রয়ী এমন মন্তব্য কেনাকাটা করতে আসা স্কুলশিক্ষিকা সাদিয়া আফরিনের। তবে তাঁর দাবি বিগত বছরগুলোতে জেলা প্রশাসন যেভাবে ঈদবাজারে অভিযান চালাত, এ বছর সেটা জোরালো না। এখানকার বিভিন্ন দোকান ঘুরেও একই ধরনের মন্তব্য পাওয়া গেছে ক্রেতাদের কাছ থেকে। তাঁদের দাবি ছুটির দিনে ভিড় বাড়ার সুযোগে দাম হাঁকানো হচ্ছে বেশি। অবশ্য বিক্রেতারা ন্যায্য দাম রাখার দাবিই করছেন।

বাজার রোডের রামকৃঞ্চ বস্ত্রালয়ের বিক্রেতা হৃদয় খান বলেন, তাঁরা ক্রেতাদের সামর্থ্য বিবেচনা করে বিক্রি করছেন। বরিশাল চঁন্দ্রবিন্দু ফ্যাশন হাউজের মালিক আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রতি বছরের মতো বরিশালের ঈদ বাজারে পোশাকের দাম তেমন একটা বাড়েনি। আর পোশাকে রয়েছে নতুনত্য ও বাহারি ডিজাইন। এ কারণে ক্রেতারা তাদের সাধ্যমতই কেনাকাটা করতে পারছেন।

বরিশাল নেক্সট প্লাস এর মালিক রতন চৌধুরী বলেন, এ বছর পোশাকের বাজারে নতুন নতুন পোশাক এসেছে। বিক্রিও একটু ভালো। এভাবে চলতে থাকলে গত দুই বছর করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠা যাবে বলে আসাকরি। ক্রেতাদের চাহিদা মত পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে। দামও ক্রেতাদের হাতের নাগালের মধ্যে রয়েছে।

কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ দত্ত বলেন, সরকার চেষ্টা করলেও ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা আদায়ের প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। উৎসব এলে বাড়তি দামে ক্রেতাকে ঠকানো রোধ করা দরকার। বিক্রেতা নাজেহাল করলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.