নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বরিশালের বাকেরগঞ্জ পৌরসভা ছাত্রদল আহ্বায়ক মো. রুহুল আমিন বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেছেন এমন অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ধর্ষিতা তরুণী। ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করায় সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান মামলা তুলে নিতে ভূক্তভোগী তরুণীকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১০ মে) বেলা সাড়ে ১২ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
- লিখিত বক্তব্যে এতিম তরুণী বলেন, তিনি গত বছর বরিশালের একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে নার্সিং কোর্স শেষ করেছে। তার বাবা বেঁচে নেই। বৃদ্ধা মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে ভাড়া বাসায় বসবাস করি। একই এলাকায় বসবাস করার সুবাদে বাকেরগঞ্জ পৌর ছাত্রদল আহ্বায়ক মো. রুহুল আমিনের সাথে পরিচয় হয়। বিয়ে করবে করবে বলে দীর্ঘদিন ধর্ষণ করে।
উপায়ন্ত না পেয়ে আমি বাকেরগঞ্জ থানায় গত ২২ জানুয়ারি একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করি। ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও অদ্যাবধি থানা পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি। উলটো সমঝোতার নামে গত ৭ মে বুধবার রাত ১১ টায় সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান স্থানীয় দুই যুবদল নেতার মাধ্যমে আমি ও আমার মাকে তার বাসভবনে ডেকে নেয়। আমি গিয়ে দেখতে পাই সেখানে আগে থেকেই বাকেরগঞ্জ থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই তোফাজ্জল উপস্থিত।
- সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান আমার কোন কথা না শুনেই তিনি আমাকে রুহুলের নামে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে বলেন। আর মামলা তুলে না নিলে সকালের মধ্যেই তিনি মামলা ফাইনাল দিবেন। এমনকি তিনি আমার নামে ২১১ ধারা দিবেন বলেও হুমকি দেন। ইতিমধ্যে গত কয়েক দিন আগে বাকেরগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি নাসির জোমাদ্দার ও পৌর বিএনপির ২নং ওয়ার্ডের সভাপতি শেখ মাহমুদুর রহমান রিমন আমার বাসায় গিয়ে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে হুমকি দেয়। এতে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি। বর্তমানে আমার অবস্থা এমন, যে কোন সময় আমি জুলাই আন্দোলনে দুমকি থানার শহীদ জসিম উদ্দিনের কন্যা লামিয়ার মত আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারি। অবশ্য তার দায় দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসন এবং হুমকিদাতা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সম্মানিত পুলিশের আইজিপি, বরিশালের ডিআইজিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই তোফাজ্জেলকে প্রত্যাহার ও সাবেক এমপি আবুল হোসেন খানের হুমকির কারণে আমি ও পরিবারের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
- সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে স্থানীয় জনগণ অবগত রয়েছে এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বসেছিল। পরে সমাধানের জন্য বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে আসে। আমি সমাধানের জন্য যা বলা দরকার তাই বলেছি। তবে জোরপূর্বক মামলা তুলে নিতেই হবে এমনটা বলা হয়নি। সমাধানের জন্য যা বলার উভয় পক্ষকে সেটাই বলা হয়েছে।