নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদান রাখায় বরিশালে ১২ জন নারীকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২৫ উপলক্ষ্যে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল নগরির নবগ্রাম রোডের একটি বেসরকারি সংস্থার হলরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সম্মাননা প্রাপ্তরা হলে বরিশাল সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়নের হেনারা বেগম ও লাইজু বেগম, চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ফরিদা ইয়াসমিন ও খাদিজা বেগম, চরকাউয়া ইউনিয়নের বেনজীর হাবিব ও নাজমুন নাহার, চাঁদপুরা ইউনিয়নের জোৎস্না আক্তার ও শাহিদা সুলতানা, রায়পাশা ইউনিয়নের তাসলিমা ও মাহিনুর বেগম এবং চরমোনাই ইউনিয়নের মরিয়ম আক্তার ও সুভ্রা রানী।
আয়োজক সংস্থার শুভংকর চক্রবর্তী বলেন,২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা ১৬ দিন ব্যাপি আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন করেছি। এ বছর বৈশ্বিকভাবে ঘোষিত বিষয়বস্তু হলো- নারী ও কন্যার প্রতি ডিজিটাল সহিংসাত বন্ধ করুন। ১৬ দিন ব্যাপি আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন শেষে আজ আমরা আমাদের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরছি, সেইসাথে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা ১২ নারীকে সম্মননা ক্রেস্ট ও সনদ দিচ্ছি।
তিনি বলেন, ১৬ দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২৫ উপলক্ষে আমাদের সম্মিলিত অঙ্গীকার হোক— নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা—অনলাইন ও অফলাইন—রোধে শূন্য সহনশীলতা প্রতিষ্ঠা; ভুক্তভোগীর কণ্ঠস্বরকে কেন্দ্র করে নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ; ডিজিটাল নিরাপত্তা ও দায়িত্বশীল প্রযুক্তি ব্যবহারে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সুসমন্বিত উদ্যোগ; পুরুষ ও ছেলেশিশুকে পরিবর্তনের সহযোগী হিসেবে যুক্ত করে, ন্যায়ভিত্তিক, সমতাপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ নির্মাণ।
আমাদের সবার লক্ষ্য হোক এমন এক বাংলাদেশ, যেখানে প্রতিটি নারী ও কন্যাশিশু ভয় ও সহিংসতার বাইরে থেকে ডিজিটাল ও বাস্তব উভয় জগতে নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে এবং সমঅধিকার নিয়ে বাঁচতে পারে—আর যেখানে পুরুষ ও ছেলেশিশুরা গর্বের সঙ্গে এই পরিবর্তনের অংশীদার হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি বরিশাল জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, নারী নির্যাতন ও নারীর অধিকার রক্ষায় সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। সেইসাথে সাংবাদিকদেরও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। যাতে যেখানেই নির্যাতন হবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্ধেকের বেশি জনসংখ্যা নারী। শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, শিল্পী, আইনজীবী, উদ্যোক্তা, সেবাদাতা, শ্রমিক, কৃষক বা নীতিনির্ধারক—সব ক্ষেত্রেই তাঁদের অবদান দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে। তাঁদের নিরাপত্তা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণকে সমর্থন করা শুধু পরিবার নয়, পুরো জাতিকে আরও স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ করে।
উল্লেখ্য, বিএনএনআরসি বাস্তবায়ন করছে ‘স্ট্রেনদেনিং রেজিলিয়েন্স এগেইনস্ট টেকনোলজি ফেসিলিটেটেড জেন্ডার বেইসড ভায়োলেন্স (টিএফজিবিভি) এন্ড প্রমোটিং ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পটি। প্রকল্পটি নাগরিকতা: সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ড (সিইএফ) কর্মসূচির অংশ। এটি বাস্তবায়নে কারিগরি সহায়তা করছে জিএফএ কনসালটিং গ্রুপ এবং অর্থায়ন করছে সুইজারল্যান্ড ও গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা ।
