Take a fresh look at your lifestyle.

বরিশালে পরিবেশ বিধ্বংসী পলিথিন পুড়িয়ে জ্বালানি তেল উৎপাদন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

২১

পলিথিন পুড়িয়ে পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি তেল উৎপাদন শুরু হয়েছে বরিশাল বিসিক শিল্প নগরীতে। সেই তেলে চলছে মোটরযান। খবর পেয়ে দেখতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা।

জানা গেছে, টানা তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা উৎপাদন পদ্ধতিতে প্রদত্ত পলিথিনের চেয়েও দুই লিটার বেশি জ্বালানি পাওয়া যায়। আরও কয়েকদিন প্লান্ট পর্যবেক্ষণ করে বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা এম এ রশিদ আরিফ।

বরিশাল নগরীতে সামান্য বৃষ্টি বা কীর্তনখোলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই নগরীর বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যায়। নদীর পানি কমতে থাকলেও নগরী থেকে পানি নিষ্কাশনে অনেক সময় লাগে। মূলত ড্রেনেজে পলিথিন জমে থাকায় নিষ্কাশনে সময় লাগে। এই সমস্যার সমাধান চিন্তা করতে গিয়েই পলিথিনের বিকল্প ব্যবহারের উপায় খোঁজেন।

বৃহস্পতিবার,২৯ সেপ্টেম্বর বিসিকের হাসিনা কুটির শিল্পের বর্ধিতাংশে পরীক্ষামূলক প্লান্টে কথা হয় রশিদ আরিফের সঙ্গে। তিনি বলেন, পলিথিনের বিকল্প ব্যবহারের চিন্তা আগে থেকেই ছিল। ইউটিউবে পলিথিন পুড়িয়ে জ্বালানি তেল উৎপাদনের প্লান্ট দেখে উৎসাহ পাই। তা দেখে প্লান্ট প্রস্তুতের পর বেশ কয়েক দিন চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হই। এরপর পুনরায় নিজের মতো করে প্লান্টটি তৈরি করি। আর গত তিন দিন ধরে প্লান্টে সঠিকভাবে জ্বালানি উৎপন্ন হচ্ছে।

তিনি বলেন,ফেলে দেওয়া পলিথিন ও প্লাস্টিক রিসাইকেল করে জ্বালানি তেল তৈরির একটা প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি, যেটা এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। আপাতত আমরা কোন ধরনের পলিথিনে কতটুকু জ্বালানি তৈরি হয় এবং কতটুকু খরচ হয় তার হিসেব কষছি। আর খরচের পর কতটুকু আউটপুট আসবে এবং তা থেকে কতটুকু লাভ করতে পারি সেটাও দেখছি। প্রকল্পটি যদি লাভজনক হয় তাহলে বড় আকারে একটি প্লান্ট করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন এক থেকে দুই হাজার কেজি পলিথিন-প্লাস্টিক থেকে আমরা জ্বালানি তেল তৈরির চেষ্টা করবো।

এম এ রশিদ আরিফ বলেন, বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবেই এটা থেকে ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেন জাতীয় জ্বালানি তেল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। আর আমরা যখন প্লাস্টিককে তাপ দিচ্ছি তখন প্রথমে একটি বাষ্পীয় আকার তৈরি হচ্ছে। পরে সেখান থেকে তিন ধরনের জ্বালানি তেল তৈরি হওয়ার পরেও গ্যাস তৈরি হচ্ছে। যে গ্যাসকে আমরা প্রকল্পের জ্বালানি হিসেবে ঘুরিয়ে ব্যবহার করতে পারছি।

প্লান্ট দেখতে আসা সরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা মাকসুদুল হাসান মনির বলেন, পলিথিন পুড়িয়ে জ্বালানি উৎপাদনে দুই ধরনের উপকার হবে। প্রথমত আর্থিকখাতে যে লোকসান দিয়ে জ্বালানি আমদানি করা হয় তা কমানো সম্ভব। দ্বিতীয়ত পরিবেশ নষ্টকারী পলিথিন কমে আসবে। আজ প্লান্ট দেখতে এসে ভালোই লাগছে। সরকারের উচিত সম্ভাবনাময় এমন উদ্যোক্তার পাশে এসে দাঁড়ানো।

বরিশাল বিসিক জেলা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক জালিস মাহমুদ বলেন, এমন কোনো প্লান্টের বিষয় আমার জানা নেই। তবে প্লান্ট তৈরি করে যদি সফল হন এবং পরিবেশগত কোনো সমস্যা না থাকে, তাহলে অবশ্যই উদ্যোক্তার পাশে বিসিক থাকবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.