স্টাফ রিপোর্টার: বরিশালে সিটি কর্পোরেশন চাকরিচ্যুত চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারীদের দুই দফা দাবি আদায়ের জন্য বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বরিশাল নগর ভবন সম্মুখে এ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সানু লাল জানান, আমাদের গত জানুয়ারির ২ তারিখ হঠাৎ করেই মৌখিক ভাবে চাকরি থেকে বাদ দেবার কথা জানায় সিটি কর্পোরেশনের সিও স্যার। এর পর একাধিক বার তার সাথে কথা বলেও কোনো সঠিক সমাধান আমরা পাইনি। এর মধ্যে একবার সমন্বয়কদের সাথে নিয়ে আলোচনা করেছি আমরা। তখন এক মাসের বেতন ও পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি দেবার কথা বললেও এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। কর্ম করে খাচ্ছি এত বছর কিন্তু এখন কোনো নোটিশ ছাড়াই আমাদের পরিবারসহ রাস্তায় নামিয়ে দিলো আমাদের। সামনে ঈদ অথচ এখন একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি কর্মস্থান হারিয়ে বাড়িগুলোতে শোকের মাতম চলছে।
চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী কল্পনা বেগম বলেন, আমাদের পরিবার আমাদের বেতনের টাকায় চলে। আমাদের গত দুই মাসের বেতন বকেয়া, আবার চাকরি নাই। বিভাগীয় কমিশনার স্যার ফেব্রুয়ারির ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় নিয়েও কোনো সমাধান দিতে পারেননি। এমন কি গত ৬ তারিখ আলোচনা করেও ব্যর্থ হয়েছে তিনি। ৪৮ জন কে চাকরি দিবে আর বাকিনা না খেতে পেয়ে মারা যাবে ? আমাদের অসহায় পরিবার গুলোর কথা মাথায় রেখে এখনো কোনো সমাধান দেননি। এখন আমাদের সকল কে হয় বকেয়া বেতন ও চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। নতুবা আমাদের ক্ষতি পূরণ হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে।
চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী হোসেন ঢালি জানান, আমরা গত দেড় মাস যাবত চাকরি হারা। আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে করুণ ভাবে দিন পার করছি। বিভাগীয় কমিশনার স্যারের সাথে আমরা বসেছিলাম আমাদের কষ্টের কথা জানাতে। তিনি তার কথা অমান্য করেছেন। আমাদের ১৬০ জন কর্মীর মধ্যে ৪৮ জন চাকরি পাবে ও বাকিদের মধ্যে কিছু পরিবারের সদস্যদের চাকরি দিবে আবার যারা চাকরি একদমই পাবেনা তাদের দেড় লক্ষ টাকা দিতে রাজি হলেও। আমাদের দাবি অনুযায়ী সেই টাকা এককালীন তিনি দিবেন না বলে জানিয়েছেন। ৩/৪ কিস্তিতে যদি টাকা পেতে হয় তাহলে আমাদের সন্দেহ রয়েছে প্রথম পর্যায়ে কিছু টাকা দিলেও পরে বিভিন্ন টালবাহানায় আর বাকি টাকা পরিবার গুলো পাবে না। যেহেতু আমাদের কথার গুরুত্ব পায়নি তাদের কাছে তাই আমরা তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছি না।
প্রসংগত, গত ২ ফেব্রুয়ারী বরিশাল সিটি করপোরেশন চতুর্থ শ্রেণির ১৬০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। ২ বারের আলোচনায় বসার পর ৪৮ জন কে পুনরায় চাকরিতে বহাল কবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যারা ৬০ বছর বয়স এবং কাজে অক্ষম এবং সিটি করপোরেশনে ২৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে কাজ করছেন তাদের দেড় লক্ষ টাকা করে ও ক্রম আনুপাতিক হারে তিন থেকে চার কিস্তিতে টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই সাথে যাদের পরিবারে শুধুমাত্র একজনই কর্মক্ষম ও উপার্জন করবার ব্যক্তি ছিলেন তার কোনো সদস্য কাজের পূর্ণ বয়স হলে সিটি কর্পোরেশনে কাজ করবার সুযোগ পাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ সিদ্ধান্তে চাকরিচ্যুত চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।