Take a fresh look at your lifestyle.

বরিশালে সমন্বয়ক ও ভুয়া সেনাবাহিনী পরিচয়ে চাঁদা দাবি হামলায় আহত ৪

৪৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় সমন্বয়ক ও সেনাবাহিনীর ভুয়া সদস্য পরিচয় দিয়ে প্রায় ১০/১২ মিলে চার জনকে পিটিয়ে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহতদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

৩০ মে,শুক্রবার রাত আনুমানিক সোয়া ১০টা থেকে পৌনে ১১ টার মধ্যে বরিশাল নথুল্লাবাদ সেন্টার পয়েন্ট মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বরিশাল বিমান বন্দর থানা পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর একটি টিম।

হামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বরিশাল বিমান বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির সিকদার বলেন, শোনা মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে থানায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। আর ঘটনাস্থলে পুলিশের পর সেনাবাহিনীর একটি টিম পৌঁছে ছিল। সেনাবাহিনীর পরিচয়পত্র দেখিয়ে এমন কাজ করার সুযোগ নেই। আর যদি কেউ হামলার আগে সিভিল ড্রেসে সেনাবাহিনীর পরিচয়পত্র দেখায় সেটা হবে জালিয়াতি পূর্বক প্রতারণা করার জন্য হয়ত কেউ পরিচয়পত্র তৈরি করেছে।

আহতরা হলেন- মো. আক্তার হোসেন খোকা (৪৮), জুয়েল হাওলাদার (৪৮), জিন্না খান (৫২) ও মাসুদ (৫৪)। তারা জানান- মার্কেটের সামনে থাকা দোকানগুলো থেকে চাঁদা উত্তোলনে বাঁধা দেয়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা হলেন- শাওনের নেতৃত্বে ভাই সজীব, ফোরকান ও সেনা বাহিনীর ভুয়া পরিচয় প্রদানকারী দুই সদস্যসহ প্রায় ১০/১২ জন।

আ.লীগ শাসনামলে ছাত্রলীগ কর্মী মো. শাওন গত ৫ আগস্টের পর সমন্বয়ক পরিচয়ে নানা অপকর্ম করে আসছে। শাওনের নেতৃত্বে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান- বরিশাল বিমানবন্দর থানার অন্তর্ভুক্ত পূর্ব পাংশা গ্রামের মো. শাহজান হাওলাদারের ছেলে আক্তার হোসেন খোকা। তিনি ওই সেন্টার পয়েন্ট মার্কেটের মালিক। ঘটনার শুরুতে দুই যুবক সিভিল ড্রেসে এসে নিজেদের সেনাবাহিনীর পরিচয়পত্র প্রদান করে হামলাকারীদের পক্ষে অবস্থান নেয়।

তিনি আরো বলেন- সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় পরিচয়পত্রে ছবি থাকলেও বাস্তবে এ দুই জন সেনাবাহিনী নয় বলে তার বিশ্বাস। কারণ, সেনাবাহিনী চাঁদাবাজির নোংরা কার্যক্রমে জড়াবে না। মূলত শাওনের সাঙ্গপাঙ্গরা ভুয়া সেনাবাহিনীর পরিচয়পত্র তৈরি করে এ সব অপকর্ম করে আসছে। শাওনের বিশ্বস্ত সহযোগী ভাই সজীব ও ফোরকান কে মাস কয়েক পূর্বে চাঁদা উত্তোলনের সময় বিমান বন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছিলাম। হামলাকারীরা আমার বাম হাত, পা ও পিঠ সহ শরীরের সব স্থানে কম বেশি বেদম মারধর করেছে। তাই অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডে ভর্তি হতে হয়েছে। বাকি তিনজন সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

অন্য আহতরা হলেন- নগরীর ২৩ নং ওয়ার্ড দরগাবাড়ি এলাকার মো. অলিউল ইসলামের ছেলে মাসুদ, নথুল্লাবাদ শের-ই বাংলা সড়ক এলাকার বাসিন্দা মৃত.আ. সত্তার খানের ছেলে জিন্না খান ও এম. এ কামাল হাওলাদারের ছেলে জুয়েল। তারা আহত আক্তার হোসেন খোকার বক্তব্যকে একমত বলে ব্যক্ত করে বলেন- হঠাৎ হামলা, প্রথমে ছাদে পরে মধ্যে ও নিচে।

মুঠোফোনে শাওন জানান- এ ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা নেই। তিনি আরো বিমান বন্দর থানা পুলিশকে অবগত করেছেন। তার জানা মতে, ওই মার্কেটের সামনে ভাসমান ভাবে ব্যবসা করা এক মহিলার দোকানের মালামাল ফেলে দেয়া হয়। কারণ মামুন নামের এক লোক এ মহিলার কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছে। আর মামুন হলে মার্কেট মালিকের ম্যানেজার। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় ও ছাত্র মিলে কারণ জানতে চাইলে তাদের মধ্যে কয়েক জনকে আটকে রাখা হয়। এই আটকে রাখার কারণেই মারামারির ঘটনা ঘটে। সেনাবাহিনীর সদস্য দুই জনে পরিচয় কারা দিয়েছে তা জানেন না তিনি। তবে হামলার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না।

বিষয়টি সম্পর্কে মুঠোফোনে সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলাপকালে জানা যায়, এভাবে মিডিয়ায় তাদের বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম নেই। তবে ঘটনা সম্পর্কে তারা অবগত রয়েছেন। কেননা, ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর একটি টিম পরিদর্শন করেছেন। আর সেনাবাহিনী সিভিল ড্রেসে কোনো কার্যক্রমে অবস্থান নেয়ার সুযোগ নেই। যদি এমনটা হয় তাহলে জালিয়াতিপূর্বক কেউ পরিচয়পত্র ব্যবহার করতে পারে।

স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করলেই ঘটনার মূল রহস্য বেড়িয়ে আসবে। আর দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর পরিচয়ে এমন ঘটনা ঘটলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ঘটনাস্থলের একাধিক বাসিন্দা।

 

Auto House

Leave A Reply

Your email address will not be published.