বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি পরিক্ষার ফলাফলে এবার মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে।পরীক্ষায় পাসের হার ৫৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে ছেলেদের চেয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে।সেইসাথে এগিয়ে আছে বিজ্ঞান বিভাগ।
বরিশাল বোর্ডে এ বছর পাশের হার ৫৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ।গত বছর যা ছিল ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।
১০ জুলাই,বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মে. ইউনুস আলী সিদ্দিকী।
- ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী বিষয়ভিত্তিক পাশের হারে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগেও এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। বিজ্ঞান বিভাগে মেয়েদের পাসের হার ৮৫ দশমিক ৬২ এবং ছেলেদের পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। মানবিক বিভাগে মেয়েদের পাসের হার ৫২ দশমিক ২৭ এবং ছেলেদের পাসের হার ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে মেয়েদের পাসের হার ৬৭ দশমিক ৯৪ এবং ছেলেদের পাসের হার ৪৬ দশমিক ৩১ শতাংশ।
এদিকে মোট জিপিএ’র মধ্যে ১ হাজার ৬৮৫ জন মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে, যেখানে মেয়েদের থেকে ছেলেরা ২৫৬ জন জিপিএ-৫ কম পেয়েছে। ছেলেদের জিপিএ-৫ প্রাপ্তি সংখ্যা ১ হাজার ৪২৯ টি।
এদিকে তিন বিভাগের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার সর্বোচ্চ ৮৩ দশমিক ১৩, এরপর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৫৪ দশমিক ৬১ ও মানবিক বিভাগে পাসের হার ৪৩ দশমিক ১৪। সর্বোচ্চ পাসের হারে থাকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার পরীক্ষায় ২৪ হাজার ৯০৫ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহন করে পাশ করেছে ২০ হাজার ২০৭ জন আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৯২০ জন। এছাড়া মানবিক বিভাগ থেকে এবার পরীক্ষায় ৪৯ হাজার ১১২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহন করে পাশ করেছে ২১ হাজার ১৮৬ জন আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫৯ জন। অপরদিকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে এবার পরীক্ষায় ৮ হাজার ৯১৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহন করে পাশ করেছে ৪ হাজার ৮৬৮ জন আর জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩৫ জন।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার বরিশাল বোর্ডের অধীনে বিভাগের ৬ জেলার ১ হাজার ৫০২ টি স্কুল থেকে ৮৪ হাজার ৭০২ জন পরীক্ষার্থী ছিলো। এরমধ্যে ১৯৪ টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছে ৮২ হাজার ৯৩১ জন। পাশ করেছে ৪৬ হাজার ৭৫৮ জন।
- ফলাফল ঘোষণা কালে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মে. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, আমরা শিক্ষায় প্রকৃতপক্ষে কোন অবস্থায় রয়েছি সরকার সেটা জানতে চেয়েছিল । এজন্য নকলমুক্ত এবং সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশনা শতভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সেইসাথে শিক্ষার্থীদের খাতাও প্রকৃতভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। আর এজন্য প্রকৃত ফলাফল অনুযায়ী ৫৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ পাসের হার গিয়ে দাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, পাসের হার বিবেচনা করলে শহরাঞ্চলের থেকে গ্রামাঞ্চলে ফলাফল বিপর্যয় বেশি ঘটেছে। আর সেখানে ইংরেজি এবং গণিতে ফলাফল বেশি খারাপ করেছে পরীক্ষার্থীরা। এজন্য শিক্ষকদেরও আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। তবে বিগত দিনের সাথে তুলনা করে এটাকে ফল বিপর্যয় বলা যাবে না, এটি দিয়ে শিক্ষার বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করতে হবে।
- শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর জি, এম, শহীদুল ইসলাম বলেন, আগে পরীক্ষা সিলেবাস কমিয়ে কিংবা নম্বর কমিয়ে হয়েছে। তবে এবারে পূর্ণ মান ও পূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে। ফলাফলের পাসের হার কমার পেছনে বিভিন্ন কারণের সাথে এটিও থাকতে পারে। আবার শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হারও আগে কম ছিল, এ ধরনের ফলাফল তাদের ক্লাসরুমে যাওয়ার তাগিদ দিবে বলে আমরা মনে করছি।
তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষকদের মান উন্নয়নে আমরা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর জি, এম, শহীদুল ইসলাম বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করলে এবারেও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভালো করছে এবং ছেলেদের থেকে তুলনামূলক মেয়েরা পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে।