Take a fresh look at your lifestyle.

বিমানবন্দর থানার সাবেক ওসি মাহবুব’র আসামির পক্ষ নেয়ার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশাল বিএম কলেজে অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী হত্যা মামলার চার্জশিটভূক্ত আসামি হাইকোর্টে “মামলা স্টে” করার আবেদন খারিজ হওয়ার পরদিন মামলার বাদি সহ চার স্বাক্ষীর বিরুদ্ধে সদর কোতোয়ালি মডেল থানায় উদ্দেশ্যমূলক একটি সাধারণ ডাইরি দায়ের করেছেন বিমানবন্দর থানার সাবেক ওসি এস. এম. মাহবুব-উল-আলম।

এমন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দায়েরকৃত মামলার বাদি ও মৃত শিক্ষার্থীর মা মোসাঃ পারভিন বেগম। শনিবার (৫ জুলাই) দুপুর দেড় টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে (বিআরইউ) এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বরিশাল উজিরপুর উপজেলার জুগিহাটি গ্রামের মৃত. আবুল কালাম আকনের স্ত্রী।

লিখিত বক্তব্যে মোসাঃ পারভিন বেগম বলেন, আমার ছোট মেয়ে মিলি ইসলাম ২০১৯ সালে বরিশাল বিএম কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স এর ৩য় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। লেখাপড়ার সুবাদে আমি সহ তিন মেয়েকে নিয়ে বরিশাল নথুল্লাবাদ সংলগ্ন লুৎফর রহমান সড়কে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেছিলাম। তখন আমার বড় মেয়ে নূরুননেছা নুপুরের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে শারমিন জান্নাত কেয়া কে ওই ভাড়ার বাসায় এসে প্রাইভেট পড়াতেন বরিশাল মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষক পুনিল চন্দ্র সরকার। প্রাইভেট পড়াতে আসা যাওয়ার সুবাদে মিলি ইসলামের সাথে শিক্ষক পুনিল চন্দ্র সরকারের সু-সম্পর্ক হয়। একপর্যায় তারা দুই জনে বরিশাল নথুল্লাবাদ সংলগ্ন ফিশারী রোডে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একটি বাসা ভাড়া নেয়। ভাড়া নেয়ার প্রথম দিনই অর্থাৎ ২০১৯ সালের ৩ মে ভাড়ার বসতঘরে পুনিল চন্দ্র সরকার কর্তৃক পরিকল্পিতক খুন হয় মিলি ইসলাম।

তখন বরিশাল বিমানবন্দর থানায় মামলা করতে গেলে ওসি এস. এম. মাহবুব-উল-আলম আসামির পক্ষ নিয়ে উল্টো আমাদের গালাগালি করে এবং থানা মামলা না নিয়ে তাড়িয়ে দেয়। উপায়ন্ত না পেয়ে আমি বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে পুনিল চন্দ্র সরকার সহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করি।

দায়েরকৃত হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট প্রদান করেছেন। চার্জশিটভূক্ত দুই আসামি হলেন- পুনিল চন্দ্র সরকার ও মো. পলাশ চৌধুরী। সম্প্রতি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে। চার্জশিটভূক্ত আসামি পুনিল চন্দ্র সরকার হাইকোর্টে “মামলা স্টে” করার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্ত গত ০১-০৭-২০২৫ তারিখে হাইকোর্ট থেকে মামলাটি স্টে আদেশ বাতিল করে দেয়।

এ ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে অর্থাৎ গত ২৬-০৬-২০২৫ তারিখে বরিশাল ১০ এপিবিএন পুলিশ কর্তৃপক্ষ নোটিশ পূর্বক আমাকে সহ ৪ জন স্বাক্ষীকে তাদের অফিস কার্যালয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এই তারিখ সকাল সাড়ে ১১ টায় আমি সহ স্বাক্ষী নূরননেছা নুপুর, জান্নাতুল ফেরদৌসি তুলি ও শারমিন জান্নাত কেয়া যাই। সেখানে বিমানবন্দর থানার সাবেক ওসি এস. এম. মাহবুব-উল-আলমও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সাবেক ওসি আমাকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেয়।

চার্জশিটভূক্ত আসামি পুনিল চন্দ্র সরকারের হাইকোর্টে “মামলা স্টে” এর আদেশটি বাতিল হবার পরদিন বিমানবন্দর থানার সাবেক ওসি এস. এম. মাহবুব-উল-আলম আমি সহ স্বাক্ষীদের অভিযুক্ত করে গত ০২-০৭-২০২৫ তারিখে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডাইরী দায়ের (নং-১০৬) করেন। যাতে হুমকি সহ আমরা ২০ লাখ টাকা ওসির কাছে চাঁদা চেয়েছি বলে জিডির বর্ণনায় উল্লেখ করেন। সাবেক ওসি হত্যা মামলার আসামি পুনিল চন্দ্র সরকারের পক্ষ হয়ে পরিকল্পিতভাবে এমন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।

আদালতে স্বাক্ষীর ধার্য্য তারিখের দিন পুলিশ আমাকে সহ স্বাক্ষীদের ওই জিডির অনুকূলে আটক বা গ্রেফতার করতে পারে। তাছাড়া আমি সহ স্বাক্ষীদের অন্য মামলায় ফাঁসাতে পারে। যাতে আমরা সঠিক সময় আদালতে স্বাক্ষী দিতে না পারি। সাবেক ওসি মাহবুব-উল-আলম আসামি পুনিল চন্দ্র সরকার পক্ষ হয়ে এমন কাজ করে যাচ্ছেন। তার এমন কার্যকলাপের সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ন্যায় বিচারের দাবি জানাই।

মুঠোফোনে সাবেক ওসি মাহবুব-উল-আলম বলেন, ওই সময়ে বরিশাল পুলিশ কমিশনার সহ ঊর্ধ্বতন কয়েক স্যারের নির্দেশ ছিল ময়না তদন্তের প্রতিবেদন আসার পর এজাহারভূক্ত মামলা নেয়া হবে। তবে সেই সময় অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছিল।

২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অনুকূলে জিডির বিষয় জানতে চাইলে তিনি (মাহবুব) বাদী সহ ডিজিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নানা কথা ব্যক্ত করার পাশাপাশি মৃত. মিলি ইসলামের মরদেহের ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার কোন আলামত পাওয়া যায়নি।

Auto House

Leave A Reply

Your email address will not be published.