বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তরিকুল ইসলামের ওপর দফায় দফায় হামলার ঘটনায় মামলায় প্রধান অভিযুক্ত শাহিন হোসেন মল্লিক মামুমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
থানায় গ্রেপ্তার মামুনের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের গালাগাল ও গোপনাঙ্গ দেখানোর পাশাপাশি হুমকি দেয়া হয়। এটিকে বিকৃত মস্তিষ্কের বহিঃপ্রকাশ বলছে দায়িত্বরত পুলিশ। সোমবার বিকাল তিনটায় বরিশাল নগরীর শীতলাখোলা এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
এর আগে রোববার বিকালে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় শাহিন হোসেন মল্লিক মামুনকে প্রধান আসামি ও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত করে একটি মামলা দায়ের করেন হামলার শিকার শিক্ষক তরিকুল ইসলাম। সোমবার বিকালে মামুনকে আটকের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম। বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও জানান ওসি।
সহযোগী অধ্যাপক তরিকুল ইসলাম বলেন, বরিশাল নগরীর শীতলা খোলা এলাকায় আমি চন্দ্রদীপ টাওয়ার নামে একটি ১০তলা ভবনে ফ্ল্যাট ক্রয় করি। তবে আমরা যারা মালিক ছিলাম সবাই জিম্মি ছিলাম জমির মালিক শাহিন হোসেন মল্লিক মামুনের কাছে। প্লান অনুযায়ী আমাদের মূল সিঁড়ি দিয়ে ভবনে প্রবেশের কথা থাকলেও মামুনের কারণে আমাদের ইমার্জেন্সি সিঁড়ি দিয়ে চলাফেরা করতে হতো। আর মামুন মূল সিঁড়ির জায়গায় দেয়াল তুলে নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় মুমীতু কমিউনিটি সেন্টার গড়ে তুলেছিলেন অবৈধভাবে। ইমার্জেন্সি সিঁড়ি দিয়ে আমাদের চলাচল করার কারণে বিষয়টি ডেভেলপার নজরুল ইসলামকে জানালে সে আমাদের নিয়ে সিটি করপোরেশনে অভিযোগ দেয়।
তিনবার নোটিশ দেয়ার পর মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর নির্দেশে ৩০ মে আমাদের মূল পথে গড়ে তোলা দেয়াল ভেঙে ফেলে করপোরেশন। এ কারণে মামুন ক্ষিপ্ত ছিল আমার ওপর। তিনি আরও বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় মোবাইলে রিচার্জ করার জন্য লিফট থেকে নিচতলায় নামার সাথে সাথেই হঠাৎ করে মামুন আমাকে গালাগাল শুরু করে এবং বলতে থাকে আমার জন্য দেয়াল ভাঙা হইছে। এরপর মামুন একটা ইট নিয়ে আমার মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে সেটি আমার হাতে লাগে এবং ভীষণ ব্যথা পাই। পরে আমাকে লাথি, কিল-ঘুসি মারা হয় পেটে। এরপর দৌড়ে ভবন থেকে বের হয়ে দ্রুত একটা রিকশায় উঠি। তারপর মামুনের ৪-৫ জন সহযোগী আমাকে ধাওয়া করে মুন্সী গ্যারেজ এলাকায় রাস্তায় ফেলে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এই মামুনের নির্দেশেই সাংবাদিক অপূর্ব অপুর উপর হামলা করা হয়েছিলো। মামুন তাদের সহযোগিদের নিয়ে এই ভবনে থাকা মুমীতু কমিউনিটি সেন্টারে মাদক কেনা বেচা করে। নগরীর চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবীদের আড্ডা হয় এখানটাতে।
সরকারি সরকারি ব্রজমোহন কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আলামিন সরোয়ার বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে এ ঘটনার নিন্দা জানানো হয়েছে। হামলাকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির পক্ষ থেকেও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।