Take a fresh look at your lifestyle.

মাটির গর্তে ১৭ বছর ধরে বসবাস: ৪০ হাজার টাকা পেল সেই দম্পতি

৩৬

মাটি খুঁড়ে গর্ত করে সেই গর্তে ১৭ বছর ধরে বসবাস করা সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার গৃহহীন রুহুল আমিন ও রেহেনা দম্পতির পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা ও জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসকের পক্ষে ওই দম্পতির হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিম। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন তাদের ২০ হাজার টাকা ও পাঁচটি কম্বল দেওয়া হয়েছে।

এদিকে পুলিশ দপ্তর থেকে বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করা হয়।

অর্থ সহায়তা পেয়ে রুহুল আমিন  বলেন, ‌‘জীবনে এতো কষ্ট করেছি যে দুইবারে ৪০ হাজার টাকা পেয়ে এখন আর কষ্ট মনেই হচ্ছে না। যারা আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন, তাদের জন্য আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া কামনা করছি।’

তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিম বলেন, ‘মাটির গর্তে বসবাসকারী রুহুল আমিন ও রেহেনা দম্পতির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। জেলা প্রশাসক ওই দম্পতির জন্য ২০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। আজ বিকেলে নিজে তাদের হাতে টাকা তুলে দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, এর আগে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা ও পাঁচটি কম্বল দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহায় ওই দম্পতিকে আরও সাহায্য-সহযোগিতা করা হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ডা. ফারুক আহম্মদ  বলেন, ‘ডিজিটালের এই যুগে ১৭ বছর মাটির গর্তে বসবাস খুবই দুঃখজনক। খবর পেয়ে আমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা পাঠিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তাদের দিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।’

রুহুল আমিন-রেহেনা দম্পতির বাড়ি তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের দিঘরিয়া গ্রামের সরদার পাড়ায়।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি ‘১৭ বছর ধরে মাটির গর্তে বসবাস-’ শিরোনামে এই দম্পতির মানবেতর জীবনযাপনের একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাগোনিউজ২৪.কম।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৭ সালে রেহেনা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় রুহুল আমিনের। এরপর দিঘরিয়া গ্রামের সরদার পাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই থেকেছেন পাঁচ বছর। তিন বছর থেকেছেন একই পাড়ায় মামার বাড়িতে। কিন্তু মামাতো ভাইয়ের বিয়ের পর বাধ্য হয়ে ঘর খালি করে দিতে হয়। এরপর চলে আসেন পৈতৃক ভিটায়। সেখানে সামান্য জায়গা ছিল। সেই জায়গাতেই গর্ত করে রয়েছেন প্রায় ১৭ বছর।

অভাবের সংসারে মেজ মেয়ে মীমকে মাত্র এক সপ্তাহ বয়সে দত্তক দিতে বাধ্য হন রুহুল আমিন। বড় মেয়ে বিলকিছ খাতুনকে সতিনের সংসারে বিয়ে দেন।

রুহুল আমিন-রেহেনা দম্পতি জানিয়েছেন, মাটির গর্তে থাকতে তাদের অনেক সমস্যা হয়। বিশেষ করে বৃষ্টির সময় গর্তের ভেতর ও চারপাশ স্যাঁতসেঁতে থাকে। মাটির ভেতর থেকে পোকামাকড় বেরিয়ে পড়ে।

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়ার আশায় আবেদন করেছিলেন এই দম্পতি। কিন্তু সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.