Take a fresh look at your lifestyle.

রাইডার্সকে হারিয়ে ফাইনালে ফরচুন

অনলাইন ডেস্ক: ফাইনালে ওঠার দু-দুটি সুযোগ পেয়েছিল রংপুর রাইডার্স। গ্রুপপর্বের এক নম্বর দলটি দুটি সুযোগই মিস করল। গতকাল রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠে গেল ফরচুন বরিশাল।

ব্যাটিং ব্যর্থতায় বিদায়ঘণ্টা বেজে গেল রংপুরের। গতকাল টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শামীম পাটওয়ারীর ক্যারিশম্যাটিক হাফ সেঞ্চুরিতে ১৪৯ রান করে রংপুর। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বরিশাল। মুশফিকুর রহিম ৩৮ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলে জয় নিশ্চিত করেই বাইশগজ ছাড়েন। ম্যাচসেরার পুরস্কারও তার হাতেই ওঠে।

দিবা-রাত্রির ম্যাচে টসই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। কিন্তু দুই কোয়ালিফায়ারে একবারও টস জিততে পারেননি রাইডার্স ক্যাপ্টেন নুরুল হাসান সোহান। দুই ম্যাচেই হারল তার দল। তবে রংপুর হারলেও শামীম পাটওয়ারীর ব্যাটিং ছিল দেখার মতো। দলের চরম বিপদে আট নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে খেলেন ৫৯ রানের এক সাইক্লোন ইনিংস। মাত্র ২৪ বলের এই ক্যামিও ইনিংসে ছিল পাঁচ ছক্কা ও পাঁচটি দৃষ্টিনন্দন চারের মার।

শামীম পাটওয়ারী যেন রংপুর রাইডার্সের ‘ডি ভিলিয়ার্স’! ৩৬০ ডিগ্রিতে ব্যাটিং করলেন। বাইশগজে গিয়েই মাঠের চারপাশ দিয়ে ছক্কা-চারের ফুলঝুরি ছোটালেন। মাত্র ২০ বলে করলেন হাফ সেঞ্চুরি।

আগের ম্যাচে শামীম ছিলেন ওপেনার, আর এ ম্যাচে নামলেন দলের সর্বশেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে। আট নম্বরে যখন তিনি ব্যাট হাতে নামেন তখন রংপুরের ব্যাটিংয়ে মহাবিপর্যয়। দলের ৭৬ রানে নেই ৬ উইকেট। শামীম উইকেটে থিতু হতে না হতেই অপরপ্রান্তে থাকা ক্যাপ্টেন নুরুল হাসান সোহান আউট। ৭৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে তখন হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে উত্তরাঞ্চলের দলটি।

‘যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ’- বাংলার জনপ্রিয় প্রবাদটি যেন শামীমকে দারুণভাবে উদ্দীপ্ত করে! তাই তো রংপুরের লেজের ব্যাটসম্যান (পড়ুন পেসার) আবু হায়দার রনিকে নিয়ে নতুন করে শুরু করলেন। আর শামীম-রনি জুটিই স্লগে বাজিমাত করে দিলেন। এই জুটিতে মাত্র ৩১ বলে আসে অপরাজিত ৭২ রান। অবশ্য পার্টনারশিপের ৫৮ রানই এসেছে শামীমের ব্যাট থেকে।

বরিশালের বোলারদের শেষ পাঁচ ওভার থেকে শামীম-রনি মিলে নিয়েছেন ৬৬ রান। স্লগে সবচেয়ে বড় ঝড় গেছে ফরচুনের বোলার ওবেদ ম্যাককয়ের ওপর দিয়ে। ১৯তম ওভারে ক্যারিবীয় পেসারের ছয় বল থেকে ২৬ রান নেন শামীম, তিন ছক্কার সঙ্গে দুটি চার।

অথচ গতকাল রংপুর রাইডার্সের পাওয়ার প্লে ছিল কতই দৃষ্টিকটূ! প্রথম ছয় ওভারে মাত্র ২৬ রান করতেই তিন উইকেট হারায়। টি-২০ ম্যাচের ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে পাওয়ার প্লে! সেখানেই দাপট দেখাতে পারেনি রাইডার্স।

অবশ্য রংপুর রাইডার্সের টপ অর্ডার যে খুবই নড়েবড়ে আগের দুই ম্যাচেই সে ইঙ্গিত পেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। ওপেনিং জুটি কোনো কাজেই লাগছে না। তিনে নেমে সাকিব আল হাসান যেদিন বড় ইনিংস খেলেন সেদিন পাওয়ার প্লেতে রান আসে। গতকাল সাকিব পারলেন না। আর ওপেনিং জুটিও তাদের ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে দ্রুত ফিরে গেলেন সাজঘরে।

টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের কেউ-ই নিজের স্কোরকে ডাবল ফিগারে নিয়ে যেতে পারেননি। যে দলের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের রানের যোগফল মাত্র ১১ সে দলের মোট রান আর কতইবা হবে!

এমন দিনে রাইডার্সের দরকার ছিল মিডল অর্ডারে কারও একটা ক্যামিও ইনিংস। ক্যারিবীয় তারকা নিকোলাস পুরানের দিকে তাকিয়ে ছিল দল। কিন্তু এ ম্যাচেও ব্যর্থ ক্যারিবীয় তারকা। ১২ বলে করলেন মাত্র ৩ রান। আগের দুই ম্যাচে দুটি তান্ডবে হাফ সেঞ্চুরি করা জিমি নিশাম গতকালও শুরু করেছিলেন দারুণভাবে। কিন্তু ২৮ রানেই থেমে গেলেন। ক্যাপ্টেন সোহানের ১৭ বলে ১৪ রানের ইনিংসও স্বস্তিদায়ক ছিল না।

শেষ পর্যন্ত শামীমের ঝড়ো ফিফটি রংপুরের স্কোরকে স্বাস্থ্যবান করলেও জয়ের জন্য তা মোটেও যথেষ্ট ছিল না। ১৫০ রানের টার্গেটে বরিশাল পৌঁছে যায় ৯ বল হাতে রেখেই। স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে যায় রংপুর রাইডার্সের।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.