মাজারুল ইসলাম,
লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নে অবস্থিত মডেল কলেজে শিক্ষক নিয়োগে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কলেজটি ২০০৪ সালে স্থানীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আলিমুদ্দিন কলেজের প্রভাষক ইউনুস আলী।
সূত্র জানায়, দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ইউনুস আলী একটি পদের বিপরীতে একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে আলোচনায় আসেন। এ নিয়ে কলেজে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হলে, তিনি প্রতিষ্ঠান ছেড়ে সরে যান। পরে কলেজের অধ্যক্ষ পদ নিয়ে একাধিক দাবিদার তৈরি হয়, যার প্রেক্ষিতে শিক্ষা অধিদপ্তর তদন্ত শুরু করে।
২০২৩ সালে কলেজটি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই ১৩ জন শিক্ষকের ইনডেক্স নম্বর ইস্যু হয়। এর মধ্যে তিনজন শিক্ষককে কলেজে কেউ কোনোদিন দেখেননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। কলেজের একাধিক সূত্র বলছে, রংপুর ডিডি অফিসের এক কর্মকর্তার মেয়ে, ভাতিজা ও আত্মীয়কে বেআইনিভাবে নিয়োগ দিয়ে বিল পাঠানো হয়েছে। তবে এসব বিল সভাপতির স্বাক্ষর ছাড়াই পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা।
অভিযোগ রয়েছে, ইউনুস আলী কলেজে না এসেও কলেজের নিজস্ব লোককে অধ্যক্ষ বানিয়ে রংপুর থেকে কলেজটি নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি একাধিক জনকে নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকার দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৭টি পদের বিপরীতে প্রায় ১২০ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
সম্পর্কিত পোস্ট
কলেজের স্টাফ আবু সায়েম বুলেট বলেন, আমাকে ২০১৬ সালে নিয়োগ দেওয়া হলেও পরে ওই একই পদে আরও একাধিক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়েছেন ইউনুস আলী।
অপর শিক্ষক ছাবেদ হোসেন জানান, আমাকে অধ্যক্ষ বানানোর কথা বলে আমার কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা নিয়েছেন। বর্তমানে আমি লালমনিরহাট জজ কোর্টে তার বিরুদ্ধে আত্মসাতের মামলা করেছি।
তাছাড়া কলেজের দাতা সদস্য হওয়ার জন্য মহিউল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকেও ২০ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, যিনি ইতিমধ্যেই আদালতে মামলা করেছেন।
এ ব্যাপারে ইউনুস আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে, নতুন এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে ইউনুস আলীর নাম প্রস্তাব করায় শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের দাবি, তিনি সভাপতি হলে কলেজের পরিবেশ আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।
