স্টাফ রিপোর্টার: পাঁচ দফা দাবিতে সারাদেশের মতো বরিশাল শেরে ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
বুধবার (১২ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মশিউল মুনীর।
তিনি জানান, পাঁচ দফা দাবিতে সারাদেশের সঙ্গে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ এবং ওটিসহ অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা সেবা চালু আছে।
শেবাচিমে পিরোজপুর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আবঃ আজাদ বলেন, আমি সকাল ৯ টা থেকে টিকিটের জন্য দাড়িশে আছি। বেলা ১১টা বাজে এখন পর্যন্ত না টিকিট পেলাম, না ডাক্তারের দেখা পেলাম।
আরেক রোগীর স্বজন লামিয়া আক্তার জানান, আমি আমার বড় ভাই কে দেখাতে আসছি কিন্তু টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট পেলাম না বা ডাক্তারও চেম্বারে নেই। শেরে ই বাংলার মত হাসপাতালে এমন ভাবে ডাক্তার দ্বারা রোগী ভোগান্তির শিকার হবে তা আমাদের চিন্তার বাহিরে। আমাদের সেবা সঠিক ভাবে দেন, নয় তো হাসপাতাল বন্ধ রাখেন। দূর দুরন্ত থেকে রোগী এসে ফিরে যাচ্ছে। তাদের মানুষ হিসেবে একটু গণ্য করা উচিত।
এ বিষয় উপ পরিচালক ডা. এস এম মনিরুজ্জামান জানান, আমি সত্যি বলতে পেপার পত্রিকায় জানতে পেরেছি যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাক্তাররা পাঁচ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছে। কিন্তু আমাদের মেডিকেল কলেজ ডাক্তাররা তা পালন করছে কিনা আমার জানা নেই। আমি ইন্টার্ন ও আউটডোর ডাক্তারদের সাথে সকালে কথা বলেছি। তারা আলোচনা করতেছে তবে আমার পক্ষ থেকে তাদের রোগীর কাংখিত সেবা ও সার্বিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডাক্তার জানান, আজ আমাদের পাঁচ দফা দাবির উপর বিচার বিশ্লেষণ করে আদালতে রায় দেবার কথা রয়েছে। এতে আদালতের রায় এমবিবিএস/ বিডিএস ডিগ্রিধারী ডাক্তারদের পক্ষে আসলে কর্মবিরতি থেকে সরে আসা হবে বলে জানান তিনি।
শেবাচিমে বহির্বিভাগের ডাক্তাররা যে পাঁচ দফা দাবিতে কর্মবিরতি করছেন
১. এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না। আদালতে চলমান এ সংক্রান্ত আইন ও জনস্বাস্থ্য বিরোধী সব রিট আবেদন আগামী ১২ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং বাংলাদেশে ‘ডিপ্লোমা চিকিৎসক’ নামে বিভ্রান্তিকর কোনো পদবির প্রচলন করা যাবে না, যার অস্তিত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা বিশ্বের কোথাও নেই। ২. ‘রেজিস্টার্ড চিকিৎসক (এমবিবিএস /বিডিএস) ছাড়া অন্য কেউ স্বাধীনভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না’ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। ৩. আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্স কারিকুলাম সংস্কার কমিটি গঠন করে তাদের কোর্স কারিকুলাম পুনর্নির্ধারণ এবং মানহীন সকল ম্যাটস (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বন্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। ৪. জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের জন্য শূন্যপদে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ এবং চিকিৎসকদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছরে উন্নীত করতে হবে। ৫. অবিলম্বে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো (পে-স্কেল) তৈরি করতে হবে।