Take a fresh look at your lifestyle.

সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে আগুন লাগার ৪০ ঘণ্টা পরও ধিকি ধিকি জ্বলছে আগুন

অনলাইন ডেস্ক:

 

ডিপোতে দায়িত্বরত ফায়ার সার্ভিসের কুমিল্লা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান সোমবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, “আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে আছে, তবে পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। আমরা কাজ করছি।”

শনিবার রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বেসরকারি ওই কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগে।

সেখানে থাকা রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে আগুন ভয়ঙ্কর মাত্রা পায়। রোববার দিনভর চেষ্টা চালিয়েও তা নেভানো যায়নি পুরোপুরি।

 

ওই ঘটনায় রোববার রাত পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু এবং দুই শতাধিক মানুষের আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। নিহতদের মধ্যে নয়জনই ফায়ার সার্ভিসের কর্মী।

কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, আগুন লাগার সময় ২৪ একর আয়তনের ওই ডিপোতে ৪৩০০ কন্টেইনার ছিল। তার মধ্যে ৩ হাজার কন্টেইনার ছিল খালি। বাকিগুলোতে ছিল আমদানি করা এবং রপ্তানির জন্য রাখা বিভিন্ন পণ্য।

বিএম কন্টেইনার ডিপোর পরিচালক মুজিবুর রহমানের মালিকানাধীন আল রাজী কেমিকেল কমপ্লেক্সের উৎপাদিত হাইড্রোজেন পার অক্সাইডও রপ্তানির জন্য রাখা ছিল কনটেইনারে। ওই রাসায়নিকই আগুনকে ভয়ঙ্কর রূপ দিয়েছে বলে ফায়ার সোর্ভিসের ধারণা।

শনিবার রাতে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের কুমিরা ও সীতাকুণ্ডের দুটি ইউনিটের কর্মীরা তা নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে একের পর এক বিস্ফোরণ শুরু হলে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি

ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। রোববারও দিনভর আগুন নিভানোর চেষ্টা চালিয়ে যায় ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থা। রোববার গভীর রাতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।

 

সোমবার সকালেও ডিপোর বিভিন্ন অংশ থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। দুয়েকটি জায়গায় কন্টেইনারে আগুনও জ্বলছিল। কিছুক্ষণ পরপর কিছু ফেটে পড়ার মত শব্দ হচ্ছিল।

রোববার দুপুর থেকেই কিছু কন্টেইনার নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রাখার কাজ শুরু হয়। ডিপোর বিভিন্ন অংশে পাম্পের সাহায্যে আগুন জ্বলার স্থানগুলোতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের পানি ও ফোম ছিটাতে দেখা গেছে।

রোববার ভোরের দিকে আশপাশের পানির উৎস শেষ হয়ে যাওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিপাকে পড়েন। নৌবাহিনীর সদস্যরা পরে পানি সরবারহের পাশাপাশি বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে আগুন নেভানো এবং উদ্ধার কাজে যোগ দেন।

নৌবাহিনীর ভাটিয়ারি ঘাঁটির অধিনায়ক কমান্ডার এনএএসএন নাদিরুজ্জামান বলেন, “ফায়ারট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স ও জনবল নিয়ে অগ্নি নির্বাপনে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি পানি সরবরাহ নিশ্চিত করেছি।”

এদিকে ডিপোতে ড্রেন হয়ে মদনহাট খাল দিয়ে রাসায়নিকের দূষণ যাতে সাগরে না পৌঁছায়, সেজন্য কাজ করছে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল।

সেনাবাহিনীর ১ ইঞ্জিনিয়ার কোরের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিরা সুলতানা সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখানে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের ২৬টি কন্টেইনার ছিল। অন্য কোনো রাসায়নিক ছিল না কিনা তা এখনো জানা যায়নি। আমরা রাসায়নিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমানের সোমবার বিএম ডিপো পরিদর্শনের কথা রয়েছে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.