স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলন কর্মসূচীর জনসংযোগকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হোসাইন আল সুহান সহ ৭জনকে আটক করে নিয়ে গেছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।
সেইসাথে আন্দোলনকারী নারী সদস্যদের শারীরিকভাবে হেনস্তা করা এবং আটককৃতদের বিষয়ে কোনো তথ্যও না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, বরিশাল নগর ভবনের সামনে থেকে বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানা, স্টিমারঘাট ফাঁড়ি ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে সুহানকে আটক করে। এসময় সুহানকে ধরে নিয়ে যেতে পুলিশকে বাধা দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি ও বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে সুহানকে পুলিশ তাদের গাড়িতে তুললে ৬ জন শিক্ষার্থী পুলিশের গাড়িতে উঠে পরে। পরে যাদেরসহ সুহানকে থানায় না নিয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে পুলিশ জানিয়েছে- অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে তারা সুহান নামে একজন ডেভিলকে গ্রেপ্তার করেছে। যার বিরুদ্ধে পূর্বের কার্যক্রমসহ বর্তমানে খারাপ কার্যক্রম পরিচালনা করার মতো অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী দাইয়ান ও নাফিস জানান, আজ তাদের ২৩ তম দিনের আন্দোলন কর্মসূচি ছিল। তবে বিএনপির প্রোগ্রামের কারণে তাদের কর্মসূচি ছোট করে শুধু জনসংযোগ কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন তারা। পাশাপাশি জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেয়ারও কথা ছিল। কিন্তু কর্মসূচি পরিচালনা শুরুর পরপরই পুলিশ এসে সুহান নামে এক শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যেতে চায়। এসময় শিক্ষার্থীদের তাদের কাছে ওয়ারেন্ট দেখতে চাইলে পুলিশের কেউ তা দেখাতে পারেনি। পরে শিক্ষার্থীরা সুহান ভাইকে নিতে বাধা দিলে পুলিশ তাদের ওপর চড়াউ হয় এবং বন্ধুক দিয়ে আঘাত করে। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে নারী পুলিশ সদস্য না থাকলেও পুরুষ পুলিশের সদস্যরা নারী শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে হেনস্তা করে।
এ দুই শিক্ষার্থী বলেন, সুহান ভাই, নাফি, তাশমি, রোহান, তামিমসহ ৭ জনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। পরে আমরা পুলিশের গাড়ির পিছু নিলেও কোনো কাজ হয়নি। থানায় গিয়েও আটককৃত শিক্ষার্থীদের কোন সন্ধান পাইনি। পরে পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে এসে কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি জানালে তারাও তেমন কোন তথ্য দেয়নি। তবে পুলিশ কমিশনার মহোদয় একজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে বাকী ৬ জন কোথায়। আর সুহান ভাইকে কি মামলায় গ্রেপ্তার করা হলো তাও তারা বলছে না, শুধু বলছে পূর্বের মামলায়। কিন্তু পূর্বে তো তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ করছে তা সঠিক নয়। ঘটনাস্থল থেকে সুহান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকীরা নিষেধ করা সত্তেও পুলিশের গাড়িতে উঠে গেছে। যাদের পরে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। আর সুহানের অতীত রেকর্ড খারাপ রয়েছে, এখনও খারাপ আছে। তার সম্প্রতি একটি ধারালো অস্ত্রসহ ছবিও ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, সুহানকে ডেভিল হিসেবে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তবে এরসাথে এখনও স্বাস্থ্য খাত সংস্কার আন্দোলনের কোনো বিষয় জড়িত নেই। তবে তদন্তে যদি হাসপাতালে চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার সাথে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায় তাহলে সেই অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।