Take a fresh look at your lifestyle.

সিলেটে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে, বাড়ছে দেশের মধ্যাঞ্চলে

অনলাইন ডেস্ক:

১৯

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র মঙ্গলবার জানিয়েছে, দেশের অধিকাংশ প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক দিনে সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও তা বিপৎসীমার উপরেই রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, দেশের ভেতরে এবং উজানের বিভিন্ন অংশে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা কম থাকায় আগামী এক দিনে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজর জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। তবে কিশোরগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।

উত্তরাঞ্চলে তিস্তা নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতি আগামী এক দিন স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা থাকলেও বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলার বন্যা পরিস্থিতি সামান্য অবনতি হতে পারে বলে পূর্বাভাস এসেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলেছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পানি ভাটির দিকে নামতে থাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় শরীয়তপুর, ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেট অঞ্চল গত বৃহস্পতিবার থেকে বন্যা কবলিত। ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে রেকর্ড বৃষ্টিতে বন্যার কবলে পড়ে বাংলাদেশের দাক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল।

তাতে মৌসুমের তৃতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি হয়ে আছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ৩৫ লাখ মানুষ। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটকসহ আশ্রয়ের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।

সিলেট-সুনামগঞ্জে পানি ঢুকে পড়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ রাখে বিদ্যুৎ বিভাগ। তাতে পুরো সুনামগঞ্জ জেলাসহ ১৬ উপজেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। সোমবার থেকে আবার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করেছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের আটটি নদীর ১৮ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় যমুনা নদী ফুলছড়িতে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার, বাহাদুরাবাদে ৫৫ সেন্টিমিটার, সারিয়াকান্দিতে ৫৯ সেন্টিমিটার, কাজীপুরে ৫৬ সেন্টিমিটার, সিরাজগঞ্জে ৪৯ সেন্টিমিটার এবং পোড়াবাড়িতে ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছিল।

ব্রহ্মপুত্র তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপরে রয়েছে। এর মধ্যে নুনখাওয়ায় ২৩ সেন্টিমিটার, হাতিয়ায় ১০৭ সেন্টিমিটার ও কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে ৫৭ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
উত্তরে ধরলা নদী কুড়িগ্রাম পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার, ঘাগট নদী গাইবান্ধা পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি বইছে।সিলেট অঞ্চলে সুরমা নদী কানাইঘাটে বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার, সিলেটে ৪১ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জে ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ওই তিনটি পয়েন্টেই পানি কিছুটা কমেছে।

কুশিয়ারা নদী অমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮৪ সেন্টিমিটার এবং শেওলা পয়েন্টে ৬৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি বইছিল মঙ্গলবার সকালে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ নদীর পানির উচ্চতায় হ্রাসবৃদ্ধি ঘটেনি।

তবে খোয়াই নদীর পানি বেড়ে বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার এবং সোমশ্বেরী নদী নেত্রকোণার কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমা থেকে ৮০ সেন্টিমিটার উপরে বইছিল।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৬৪ মিলিমিটার, অরুণাচলের পাসিঘাটে ৪৩ মিলিমিটার এবং জলপাইগুড়িতে ৫৭ মিলিমিটার।

একই সময়ে বাংলাদেশের টেকনাফে ৭৪ মিলিমিটার, বরগুনায় ৫৫ এবং পঞ্চগড়ে ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলী চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে রংপুর, খুলনা,বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া আগামী ৭২ ঘণ্টা বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.