বিশেষ প্রতিবেদকঃ শেখ হাসিনাতে আস্থা রেখে আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট দিতে চান চিকিৎসকরা। তাই বিনা বাঁধায় বিনা সহিংসতায় ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘শেখ হাসিনায় আস্থা, চিকিৎসক সমাবেশে এই আহ্বান জানান তারা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভাপতি পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপীল।
চিকিৎসকরা জানান, শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে বাংলাদেশকে কিভাবে চালিয়েছেন সেটি দৃশ্যমান। তিনি বিশ্বের কাছে সুন্দর ভাবে বাংলাদেশকে দৃশ্যমান করেছেন। দেশকে রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। দেশের গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন না থাকলে গণতন্ত্র থাকতে পারে না। কেউ কেউ নির্বাচন বানচাল করতে চাচ্ছে। তারা চাচ্ছে নির্বাচন না হোক। নির্বাচন না হলে সংবিধান থাকবে না। যারা আসবে না তারা ব্যর্থ। শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রতি সমর্থন জানাতে ৭ তারিখ ভোট দিতে যেতে হবে।
ডা. অনুপম সাহা বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে শেখ হাসিনার আস্থা রাখতে পরিবারের সবাইকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া দায়িত্ব হওয়া উচিত। মেগাপ্রকল্পগুলোর মাধ্যমে সারাদেশকে এক সুতায় নিয়ে এসেছেন। তার উন্নয়নের কথা সবার কাছে তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করানোর কারিগর তিনি। তার প্রতি আমাদের মতো তরুণ চিকিৎসকদের যে আস্থা তার প্রতিফলন ঘটাতে চিকিৎসক সমাজকে তাদের পরিবারসহ ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘নির্বাচন আসলেই সম্প্রীতি নষ্ট হয়। তার ভয়াবহ উদাহরণ ২০০১ সালের নির্বাচন। বীভৎস সেই নির্বাচনে আমাদের দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হত্যা, ধর্ষণ করেছে, লুণ্ঠন করেছে। যার কারণে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আজকের এই শঙ্কা। নির্বাচন পূর্ববর্তী এবং নির্বাচনকালীন সময়ে এবং বিশেষ করে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘু জনগণের ওপর যে নির্যাতন হয় সেতি সম্প্রীতি বিনষ্ট করে। চিকিৎসক সমাজ আমরা আজকে বলতে চাই, আমাদের শেখ হাসিনাতেই আস্থা। আমরা চাই ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আমরা চিকিৎসকরা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে চাই। আমার ভোট আমি বিনা বাঁধায়, বিনা সহিংসতায় দিতে চাই। আমাদের এই আবেদন নির্বাচন কমিশনের কাছে। ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘আজকে আমরা পৃথিবীর ৩৩তম দেশ।সারা বিশ্বেই এটি স্বীকৃত। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের ১০ জন নেত্রীর মধ্যে একজন। গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনায় ক্ষমতায় থেকে আমাদের অনেক মেগা প্রকল্প উপহার দিয়েছেন। একসময় আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকতো। এখন শতভাগ বিদ্যুৎ। এখন আছে বিদেশিদের ষড়যন্ত্র। আমাদের নেত্রী সাহসী বলেই তিনি আমাদের শক্তি। উনি নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছেন। উনি যেটা বলেন সেটা করেন। আগামি ৭ তারিখ ভোট দিয়ে পেশাজীবীদের তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, আজকে একসঙ্গে ১৬টি মেট্রোরেলের স্টেশন চলছে। ১৯৮১ সালে তিনি যখন দেশে ফিরে আসেন পুরো বাংলাদেশ তখন পাকিস্তান হয়ে গিয়েছিল ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক ঘটনার পর। মুক্তিযুদ্ধের সব চেতনা ভুলন্ঠিত করে একে একে সব ধ্বংস করা হচ্ছিল। শেখ হাসিনাতে আস্থা কেন? বাংলাদেশের অন্তর আত্মার জন্য। বাংলাদেশের অন্তর আত্মা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ, একটি অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশ যেই জায়গায় এখন আছে, সেই একই জায়গায় নিতে হলে শেখ হাসিনাতে আস্থা আছে। এটার কোন বিকল্প নেই। মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে এ ছাড়া আমাদের কাছে বিকল্প থাকে না।’
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা.শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ইশতেহারের ১১টি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য আছে। তার একটা হচ্ছে তরুণদের কর্মসংস্থান, দারিদ্র বিমোচন করবেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা দিবেন। আজকে বাংলাদেশের ১৬৬টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তার যে অবদান, দারিদ্র্যের হার কমানো, শিক্ষিতের হার বাড়ানো এসবই প্রধানমন্ত্রীর অবদান। আমাদের দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আগামীতেও তিনি উন্নত সমৃদ্ধ করে তুলবেন। ৪২টি রাজনৈতিক দল , ২৮টি অংশগ্রহণ করছে। দেশের ৭০ শতাংশ ভোটার অবস্থান করছেন। আমরা ৬০ শতাংশ ভোটার উপস্থিত থেকে ভোট দিতে চাই।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভাপতি পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তরুণদের মধ্যে ভোট দেওয়ার আনন্দ, উত্তেজনা, আগরহ বাড়ানোর দায়িত্ব রাজনিতিবিদদের যেমন, ঠিক একইভাবে আমাদেরও। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে কিন্তু তরুণদের জন্য অনেক ভালো ভালো কথা আছে। সেগুলো তাদেরকে বুঝাতে হবে। আমরা ধরে নিচ্ছি আগামি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হবে। সেই নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিজয়ী হবে।’