নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ১৬ বছর পর জুমার নামাজ পরালেন বরিশাল কালেক্টরেট জামে মসজিদের খতিব মাওলানা এবিএম মুশাররফ হোসাইন।
আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দোয়া চাওয়ায় ১৬ বছর আগে মসজিদের ইমামের পদ থেকে চাকুরী ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল মাওলানা মুশাররফ হোসাইনকে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) তিনি বরিশাল কালেক্টরেট জামে মসজিদে ইমামের ভূমিকায় থেকে মুসল্লিদের উদ্দেশে খুতবা পাঠ ও জুমার নামাজ আদায় করান। এতে স্থানীয় মুসুল্লিদের মধ্যে বিরাজ করছে আনন্দ।
ভূক্তভোগী মুশাররফ হোসাইনের ছেলে সাংবাদিক খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, তৎকালীন বরিশাল কোর্ট মসজিদ ও বর্তমান কালেক্টরেট জামে মসজিদ ১৯৭৭ সালে উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর একটানা ৩৩ বছর ইমামতি করেন তার বাবা মুশাররফ হোসাইন। কিন্তু আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দোয়া চাওয়ায় তার বাবার কাছ থেকে ২০১০ সালের ১৪ মার্চ জোর করে অব্যাহতিপত্র নিয়েছিল তৎকালীন প্রশাসন। তখন আমাদের বাসা মসজিদের সঙ্গেই ছিল। বাবাকে চাকরীচ্যুত করার তিন মাস পর র্যাব সদস্যরা গিয়ে বাসা থেকে নামিয়ে দেয়। এর কিছুদিন পরে আছমত আলী খান (এ.কে) ইনস্টিটিউশনের শিক্ষকের চাকরীও হারান আমার বাবা। পরে গ্রেফতার আতংকের মধ্যে বরিশাল নগরীর বটতলার এলাকায় বাসায় ১৪টি বছর কাটিয়েছেন। মুশাররফ হোমিও চিকিৎসক হওয়ায় চাকরীচ্যুত অবস্থায় চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
খালিদ সাইফুল্লাহ আরও বলেন, ১৬ বছর পর বাবা তার স্মৃতিবিজরিত মসজিদে মুসল্লিদের নিয়ে নামাজ আদায় করেছেন। বাবা নামাজ পড়িয়ে যেমন নিজে আবেগ আপ্লুত তেমনি, আমরাও আবেগ আপ্লুত।
নামাজ আদায় শেষে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, বিষয়টি অনেক আগে থেকেই আমি জানতাম। আজ (শুক্রবার) তার পেছনে নামাজ আদায় করতে পেরে সত্যিই ভিন্ন অনুভূতি কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, মানুষের বাকস্বাধীনতা থাকা উচিত। তিনি তো খারাপ কিছু করেননি, দোয়া চেয়েছেন মাত্র। আর তাতেই চাকরি যাওয়াটা অন্যায়।
মসজিদের মুসুল্লি ওহাব বলেন, তিনি আজ (শুক্রবার) নামাজ পড়াতে পারবেন তা প্রথমে ভাবতে পারিনি। কারণ এখানে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নামাজ আদায় করেন। সবকিছু শোনার পর বর্তমান বিভাগীয় কমিশনার স্যার নিজেই মাওলানা মুশাররফকে খুতবা পাঠ ও নামাজ পড়ানোর জন্য বলেন। মসজিদের খতিবের দায়িত্বে থাকা সানী ইমাম হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শুধু যে আজকের জুমা এমনটা নয়, বিভাগীয় কমিশনার স্যার রমজানের পরবর্তী জুমার দিনগুলোতেও তাকে ইমামতি করতে বলেছেন।
মুসুল্লিরা জানান এখন পর্যন্ত ইমামের পদটি শূন্য রয়েছে। সরকারি কোনো পদ না হওয়ায় কোন আইনি জটিলতা নেই, তাকে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মুসুল্লিরা।