Take a fresh look at your lifestyle.

বরিশাল বিবি পুকুরের পূর্ব পাড়ে সরকারি জমিতে অবৈধভাবে চলছে মসজিদ নির্মাণ

৩৬

স্টাফ রিপোর্টার :  বরিশালে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে কতিপয় ধর্ম ব্যবসায়ী মহলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও নগর প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে সচেতন মহল। তবুও ধর্মকে সামনে রেখে অবৈধভাবে ফাঁকে ফাঁকে মসজিদ নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছেন। ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব বা বিরােধপূর্ণ জমিতে কেউ জোরপূর্বক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উত্তোলন করলে সেখানে ইবাদত পালন হয় না। ধর্মপ্রাণ একাধিক মুসুল্লি এ কথার সত্যতা স্বীকার করলেও বরিশাল বিবি পুকুরের পূর্ব পাড়ে থাকা মসজিদের কতিপয় ব্যক্তি তা মানছে না।  ইসলামের নিয়ম কানুন না মেনেই জোরপূর্বক মসজিদ নির্মাণ করে যাচ্ছে। মসজিদ নির্মাণের নামে পথচারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন উত্তোলন করা হচ্ছে টাকা। দিনের বেলায় নামাজের সময় রাস্তা আটকে আদায় করা হয় নামাজ। সেই সময় ভোগান্তি পোহাতে হয় পথচারীদের। যা দেখে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। সচেতন মহলের পক্ষে ২৬ ফেব্রুয়ারি মোস্তফা কামাল খানের দেওয়া ওই অভিযোগের পর অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেছেন সিটি করপোরেশন কয়েক জন কর্মকর্তা।

জমির মালিক বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং অবৈধ নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। সরকারি জায়গায় অনুমতি ছাড়া কেউ স্থাপনা নির্মাণ করতে পারে না। যদি কেউ অনুমতি ছাড়াই কাজ চালিয়ে যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার মিয়াও স্বীকার করেন বিরোধপূর্ণ জমিতে মসজিদ নির্মাণ করলে সেখানে ইবাদত কবুল হয় না। তবে ডিসির কাছ থেকে অনুমতি নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মসজিদের একাধিক মুসুল্লি বলেন,  এই মসজিদে যারা নামাজ পড়ে তারা বেশি ভাগই পথচারী। অনেকে জানেই না। এই মসজিদ জনগণের পথ চলাচলের রাস্তা দখল করে ২ বছর আগে মসজিদের বারান্দা নির্মাণ করেছে। এখন আবারও সরকারি জমি দখল করে আবারো নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছে।

একাধিক আরো মুসুল্লি বলেন, বিষয়টি দেখবেন স্থানীয় প্রশাসন। কারণ,  তারা মসজিদ নির্মাণে বৈধতা ভূমিকা না রাখলে পথচারী মুসুল্লিদের কারো নামাজ আদায় হয়। হয়ত যারা না জেনে নামাজ আদায় করছে তাদের ক্ষমা হলেও অবৈধ নির্মাণ কার্যক্রম সম্পর্কে জেনেও পদক্ষেপ না নেয়ায় পাপের ক্ষমা হবে না। এ পাপে ফেঁসে যেতে পারে মসজিদের ইমামও।

লিখিত ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের আওতায় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিবির পুকুরের পূর্ব পাড়ে অবস্থিত প্রাক্তন জেলা প্রশাসকের স্ত্রী নামে নির্মিত জাহানারা হল ঘেঁষে অবৈধ ভাবে টয়লেট ও ভারী স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি এ ধরনের জঘন্য কাজ উভয় পার্শ্বে টিনের বেড়া দিয়ে রাতের আধারে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ১নং খতিয়ানভুক্ত জমিতে এ ধরনের নির্মাণ কাজ অবৈধ ভাবে চলমান থাকায় স্থানীয় সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এটি নির্মিত হলে এটি, নির্মিত হলে, পাবলিক লাইব্রেরি ও জাহানারা হলের, কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জমি বেহাত সহ এলাকার পরিবেশ দূষিত হবে।

এছাড়াও টয়লেট নির্মাণের স্থানে ইতঃপূর্বে সিটি করপোরেশন ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি ওয়াটার ট্যাঙ্কি ট্যাঙ্কি নির্মাণ করেছে। এটি নির্মিত হলে ঐ ওয়াটার ট্যাঙ্কিটিও বেহাত হবে ও সরকারের সম্পদ বিনষ্ট হবে। এ ট্যাংকের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী বিবির পুকুরের ফোয়ারা চালু করা অসম্ভব হয়ে পরবে। তাই সচেতন নাগরিক হিসেবে এ ধরনের অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে পরিবেশ রক্ষার দাবি জানাচ্ছে।

অভিযোগ দেয়ার পর অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলাম। বিষয়টি নগর প্রশাসক স্যারকে অবহিত করা হবে। আর মসজিদ নির্মাণের জন্য বিসিসি থেকে কোনো অনুমতি বা প্ল্যান নেয়নি। আরাে নগর ভবনের ফোয়ারা পরিচালনা করা ট্যাঙ্কির উপরও নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছে।

Auto House

Leave A Reply

Your email address will not be published.