Take a fresh look at your lifestyle.

ঘূর্ণিঝড় রেমালে বরিশালে ৩০লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বিরুদ্ধে

আনোয়ার হোসেন।। বরিশাল ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখিয়ে সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৫শত পরিবারের নাম দিয়ে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্ধ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বরিশাল রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

ক্ষয়ক্ষতির বিবরণীতে বলা হয়েছে-ঘূর্ণিঝড়ে ৫শত পরিবারের বসবাসের ঘর ভেঙ্গে গেছে, টিন সেড উড়ে গেছে, কোথাও জানালা, টয়লেটের ক্ষতি হয়েছে। ব্যক্তি স্বার্থে বরিশাল রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট কর্মকর্তারা এমন মনগড়া তথ্য দিয়ে সরকারি অর্থ বরাদ্ধ পাওয়ায় হতবাক ইউনিয়ন পর্যায়ের ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্থত পরিবার ও সুশিলসমাজের মানুষ।

অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে জেলা পরিষদ বরিশাল এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত বছর ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বিরুদ্ধে ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্থদের বরাদ্দ আত্মসাতে অভিযোগ দায়ের করেন সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেন।

অভিযোগের তদন্তের আশ্বাস দিয়ে ছিলেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পরিষদের কর্মকার্তারা। কিন্তু বিগত এক বছরেও তদন্ত করতে পারেনি সরকারি দপ্তর দুইটি। দপ্তর দুইটির প্রধানেরা তদন্ত নিয়ে নয়-ছয় করছে কারন তারা নিজের ছিলো ওই কমিটির লোক, তাই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ কি করবে, কর্মকর্তারা নিজেরাই দুর্নীতির সাথে জরিত বলে জানান অভিযোগকারী মোঃ আনোয়ার হোসেন।

গত বছরের ২৬ মে রাতে বরিশাল উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বরাদ্ধের তালিকায় দেখা গেছে-নগরীর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৫শত পরিবার ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে সিটি কর্পোরেশন এলাকার ১নং ওয়ার্ডে ৪ পরিবার, ২নং ওয়ার্ডে ২৭ পরিবার, ৩নং ওয়ার্ডে ৩৫ পরিবার, ৪নং ওয়ার্ডে ২৬ পরিবার, ৫নং ওয়ার্ডে ১৩ পরিবার, ৬নং ওয়ার্ডে ১৯ পরিবার, ৭নং ওয়ার্ডে ৫০ পরিবার,৯নং ওয়ার্ডে ২২ পরিবার, ১০নং ওয়ার্ডে ৫৬ পরিবার, ১১নং ওয়ার্ডে ৮ পরিবার, ১২নং ওয়ার্ডে ৩ পরিবার, ১৩নং ওয়ার্ডে ৩ পরিবার,১৫নং ওয়ার্ডে ২৩ পরিবার, ১৬নং ২৮ পরিবার, ১৭নং ওয়ার্ডে ২৯ পরিবার, ১৮নং ওয়ার্ডে ১৭ পরিবার, ১৯নং ওয়ার্ডে ১৯ পরিবার, ২০নং ওয়ার্ডে ৩৬ পরিবার, ২১নং ওয়ার্ডে ৬ পরিবার, ২২নং ওয়ার্ডে ৩ পরিবার, ২৩নং ওয়ার্ডে ১৬ পরিবার, ২৪নং ওয়ার্ডে ১০ পরিবার, ২৫নং ওয়ার্ডে ২৪ পরিবার, ২৬নং ওয়ার্ডে ২৪ পরিবার, ২৮ নং ওয়ার্ডে ২ পরিবারে মাঝে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কর্মকর্তাদের ব্যক্তি স্বার্থে ক্ষয়ক্ষতি কাগজে কলমে দেখিয়ে ৫শত পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়ার নামে, নয়া কৌশলে ৩০ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্ধ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি ও সাধারন মানুষদের।

২৩ নং ওয়ার্ড দক্ষিন দরগা বাড়ির স্থানীয় বাসীন্দা মোঃ মাইদুল, নুরু হাওলাদারের ছেলে ছাবেদ খলিফা, নাজমা বেগম, আলী আক্কর মিলন, হেলাল শরিফ, রোজী , মিঠু, সৈরভ মঞ্জিলের মালিক লাজু, সুখি, রত্তন খলিফা, মেহেদী, তানজিলা, কুলসুমসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, আমাদের মোবাইলে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে ৬হাজার টাকা বিকাশে আসছে, কিন্তু একই এলাকার বিকাশ এজেন্টে চাকরী করে মেহেদী ২৫শত টাকা আমাদের দিয়ে বাকি টাকা নিয়ে গেছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ বরাদ্ধ নিয়ে লোপাট করছেন জড়িত এমন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

অভিযুক্ত মেহেদী বলেন, বরিশাল রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মকর্তারা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে যাদের মোবাইলে বিকাশে টাকা দিবেন তাদের কাছ থেকে ৩৫শত টাকা আপনি রেখে আমাদের অফিসে জমা দিবেন। আমি তাই করছি।

সরকারি অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে জানতে, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বরিশাল ইউনিটির সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তার যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

দুর্নীতির বিষয়ে জানতে ,রেড ক্রিসেন্টের নতুন চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. রফিকুল ইসলাল(অব.)এর সাথে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির অনিয়ম ও আর্থিক দূর্নীতি বিষয়ে জানতে, বরিশাল জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

Auto House

Leave A Reply

Your email address will not be published.