বরিশাল নগরীর সুপেয় পানির সংকট মেটাতে শতকোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট দুটি উদ্বোধনের ৯ বছর পর পুনরায় চালু করা হচ্ছে।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়েছে, সুপেয় পানির সংকট মেটাতে চালু করা হচ্ছে সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট দুটি।
বিসিসি’র প্রশাসক মো. রায়হান কাওছার জানান, বরিশালে সিটি কর্পোরেশন নগরীর রুপাতলী এবং বেলতলা এলাকায় নির্মিতব্য দুটি বিকল সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট সচল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছে যার মধ্যে ৮ কোটি টাকা ইতোমধ্যে ব্যয় করে এগুলোকে সচল করার কাজ চলমান রয়েছে। যার একটি অক্টোবরের শেষ নাগাদ এবং অপরটি নভেম্বরের মধ্যে চালু হবে।
প্রশাসক আরও জানান, প্লান্ট ২টি পুরোপুরি ফাংশনে গেলে ৩৬০ কোটি লিটার পানি প্রতিদিন নদী থেকে সারফেস করে ব্যবহার উপযোগী করা যাবে। এতে করে ভূগর্ভস্থ পানির উপরে চাপ অর্ধেকে নেমে আসবে এবং ইতোমধ্যে নগরীর দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে আরো একটি ওয়াটার সারফেস প্লান্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে যা দিয়ে পুরোপুরি পানির ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হবে।
বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ও স্বার্থসংরক্ষণ কমিটি সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম খান রাজন বলেন, ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমাতে, দ্রুত প্লান্ট দু’টি চালুর উদ্যোগ নেয়া উচিত। তা নাহলে শুকনো মৌসুমে গভীর নলকুপ গুলোতে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। রাজন আরও বলেন, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পানির স্তর প্রতিনিয়ত নিচে নেমে যাওয়ায় নগরজুড়ে স্থাপন করা গভীর নলকূপগুলো থেকে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এতে দিন দিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সুপেয় পানির সমস্যা। সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে যারা অনিয়ম-দুর্নীতি করে এ দীর্ঘসূত্রিতা তৈরী করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে শতকোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল নগরীর রুপাতলী এবং বেলতলা এলাকায় নির্মাণ হয় দু’টি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। প্রতিটি থেকে প্রতিদিন ১ কোটি ৬০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ করার কথা ছিলো। কিন্তু পরীক্ষামূলকভাবে চালুর সময় সরবরাহ হয় মাত্র ২৫ লাখ লিটার পানি। দেখা দেয় নানা ক্রুটিও। নির্মাণ সংস্থা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও সিটি করপোরেশনের পাল্টাপাল্টি দোষারোপে এরপর আর চালু হয়নি প্ল্যান্ট দুটি। এ কারণে সুপেয় পানির তীব্র সংকট নগরীতে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুপেয় পানির সংকটে নগরবাসীর ভোগান্তির পাশাপাশি ছড়াচ্ছে পানি বাহিত নানা রোগ।