বরিশালে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে থ্রি হুইলার ছিনতাইচক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা আন্ত:জেলা চোর চক্রের সদস্য ও তাদের বিরুদ্ধে ডজনের বেশি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার জাকির হোসেন মজুমদার।
পুলিশ জানায়, ১৩ জুন সকালে থ্রি হুইলার অটোগাড়ি নিয়ে বাসা থেকে বের হয় বাবুগঞ্জ থানাধীন রাজকর এলাকার বাসিন্দা কাজী কামাল। ওইদিন বিকেল ৪টার দিকে কামাল বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানাধীন বকুলতলা এলাকার একটি ইটের ভাটার সামনে অটোগাড়িটি নিয়ে আসলে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আসামী ধরার কথা বলে কামালের থ্রি হুইলারে ওঠে। এরপর ওই ব্যক্তি থ্রিহুইলারটিসহ কামালকে ভয় দেখিয়ে প্রথমে এয়ারপোর্ট মোড়ে ও পরে দোয়ারিকা মধ্য ফেরিঘাট এলাকায় নিয়ে যায়।
বিকাল ৫ টার দিকে সেখানে ৪ জন ব্যক্তি মিলিত হয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয় এবং কামলাকে এক প্যাকেট বিস্কুট ও পানির বোতল দিয়ে তা খেতে বলে। সরল বিশ্বাসে তা খেলে কিছুক্ষন পরেই কামালের মাথায় হালকা ঝিম ঝিম দেখা দেয় এবং ঘুম ঘুম ভাব এসে পরে। বিষয়টি বিপদজনক বুঝতে পেরে কামাল তার গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে, ডিবি পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা চাবি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় কামালের সাথে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে মারধর করে রাস্তায় ফেলে দিলে কামাল চিৎকার দেয়, এতে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাদের মোটরসাইকেল ফেলে অটোগাড়ি ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় কামালের স্ত্রী মোসাঃ তানিয়া ১৭ জুন এয়ারপোর্ট থানায় ০৫ জন অজ্ঞাতনামাদের অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপরপরই থানা পুলিশ ঘটনার তদন্ত করার পাশাপাশি অভিযানে নামে। অভিযানে নেমে ১৭ ও ১৮ জুন ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদের মধ্যে গোপালগঞ্জের খান্দারপাড় এলাকার মোঃ সাখায়েত মুন্সি (৪০) ও ফরিদপুরের সালতা থানাধীন উত্তর চন্ডীবর্ধী এলাকার মোঃ জহির হাসান মোল্লাকে (৩৫) ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানাধীন ভাঙ্গা বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।অপরদিকে পটুয়াখালী সদর থানাধীন শিমুলবাগ এলাকার মোঃ সোহেল হাওলাদারকে (৪০) বরিশাল নগরীর খেয়াঘাট এলাকা থেকে এবং মাগুরা জেলার মোহাম্মাদপুর থানার উত্তর বিশ্বাস পাড়া এলাকার মোঃ মহসীন শেখ (৪৮) ও মোঃ আমিরুল ইসলামকে (৪০) মাগুড়া জেলার মোহাম্মাদপুর থানাধীন বিনোদপুর বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে সোহেল হাওলাদার বরিশাল নগরীর বাজাররোড এলাকা এবং সাখায়েত মুন্সি ফরিদপুরের ভাংগা থানাধীন হুগলাডাঙ্গা ও ফরিদপুর সদর থানাধীন গোয়ালচামট এলাকাতেও বসবাস করে।
উপ কমিশনার (উত্তর) জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাখায়েত মুন্সি এই চক্রের লিডার, আর জহির হাসান মোল্লা নিজেকে ডিবি পুলিশসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা পরিচয়ে টার্গেটকৃত গাড়িতে ওঠার কাজটি করেন। এছাড়া সোহেল হাওলাদার পেশায় মেকানিক হওয়ায় সে চোরাই বা ছিনতাই টিমের গাড়ি মেরামত ও যন্ত্রাংশ আলাদা করার কাজ করে থাকে এবং বাকি দুজন চোরাই মালামাল ক্রয় বিক্রয়ের কাজ করেন।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ওসি কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, ছিনতাই হওয়া থ্রি হুইলার অটো গাড়িটি এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি। তবে শিগগিরই উদ্ধার হবে।