স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদার দাবীতে বরিশাল নগরীতে হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুরে নগরীর সার্কিট হাউজের বিপরীত পাশে সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনষ্টিক (প্রাঃ) লিমিটেডের নিজস্ব সম্পত্তিতে সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করে চাঁদার দাবীতে একাধিক ব্যক্তির উপর হামলা চালিয়ে হত্যা চেষ্টা করে।
সরোজমিনে গিয়ে ও স্থানীয়রা জানান, বরিশাল মৌজার এস.এ খতিয়ান নং ১১৯৫, ১৩৯৭, ১২৩৯, এস এ দাগ নং ৮১, যাহার বিএস খতিয়ান ডিপি ৩৩৭, যাহার বিএস ১৮৩৩ নং দাগের ৩১.৭ শতাংশ জমি সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনষ্টিক (প্রাঃ) লিমিটেডের সম্পত্তি।
উক্ত সম্পত্তিতে টিনসেড পাকা বিল্ডিং একতলা ঘরে ভাড়াটিয়া ছিলো। ভাড়াটিয়া চুক্তি অনুযায়ী চলিয়া যাওয়ার পর উক্ত ঘরে সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনষ্টিক (প্রাঃ) লিমিটেডের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের পরিবারসহ আবাসিক থাকার ব্যবস্থা করার জন্য গেলে বরিশাল নগরীর সুপরিচিত মাদক ব্যবসায়ী, একাধিক মামলার আসামী ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী সদর রোড এলাকার মৃত রিয়াদ খোকনের ছেলে তুষার (৩৫), জর্ডন রোডের মৃত আকতার হোসেনের ছেলে রিয়াদ (৩০), বালির মাঠ বস্তির মৃত রুস্তুমের ছেলে মোঃ সেলিম (৪৫), মুসলিম গোরস্থান এলাকার আফসার আলী আকনের ছেলে হারুন অর রশিদ আকন (৫৪), কালীবাড়ী রোডের মৃত ফজলে করিমের ছেলে মাসুদ করিম (৫৫) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন সন্ত্রাসী একত্রে দলবদ্ধ হয়ে উক্ত সম্পত্তিতে বেআইনীভাবে প্রবেশ করিয়া লোহার রড, খোন্তা, কুড়াল, লাঠি সোটাসহ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। মল্লিক রোডের মৃত আসাদুজ্জামান (রেফাত) এর ছেলে রফিকুজ্জামান রউফ (ওয়াসিফ) মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হামলাকারীদের হুকুম দেয় যে, উক্ত টিনসেড ঘরে কাউকে উঠতে দিবি না, যদি কেউ উক্ত টিনসেড ঘরে উঠতে চায় তাহলে তাদেরকে মারধর করে তাড়াইয়া দিতে বলে এবং উক্ত সম্পত্তিতে এ্যাপোলো ডায়াগণষ্টিক এর কর্মচারী ও কর্মচারীদের পরিবারের লোকজনকে বসবাস করিতে হইলে তাকে ও সদর রোড এলাকার মৃত রিয়াদ খোকনের ছেলে তুষার (৩৫), জর্ডন রোডের মৃত আকতার হোসেনের ছেলে রিয়াদ (৩০) কে ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা চাঁদা দিতে হইবে। তখন মল্লিক রোডের মৃত আসাদুজ্জামান (রেফাত) এর ছেলে রফিকুজ্জামান রউফ (ওয়াসিফ) এর নির্দেশে সদর রোড এলাকার মৃত রিয়াদ খোকনের ছেলে তুষারের হাতে থাকা লোহার রড দিয়া সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনষ্টিক (প্রাঃ) লিমিটেডের কর্মকর্তা মোঃ জিয়াউল হক উজ্জলকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করিয়া বারি মারিলে উক্ত বারি মাথার মাঝ বরাবরে লাগিয়া ফাটিয়া রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম হয়। উজ্জলকে বাচানোর জন্য সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনষ্টিক (প্রাঃ) লিমিটেডের কর্মচারী মোঃ আনোয়ার হোসেন, আগাইয়া আসিলে জর্ডন রোডের মৃত আকতার হোসেনের ছেলে রিয়াদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়া আনোয়ারকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করিয়া বারি মারিলে, উক্ত বারি ডান হাত দিয়া ঠেকাইতে গেলে আনোয়ারে ডান হাতের বাহুতে লাগিয়া ভাঙ্গিয়া যায় এবং হাড় ভাঙ্গার পর মুখ মন্ডলের ও মাথায় লাগিয়া ছেড়া ফাটা রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম হয়। সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনষ্টিক (প্রাঃ) লিমিটেডের কর্মকর্তা মোঃ জিয়াউল হক উজ্জল ও কর্মচারী মোঃ আনোয়ার হোসেনকে বাচানোর জন্য সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনষ্টিক (প্রাঃ) লিমিটেডের কর্মচারী মোঃ হারুন সরদার আগাইয়া গেলে বালির মাঠ বস্তির মৃত রুস্তুমের ছেলে মোঃ সেলিমের হাতে থাকা লোহার রড দিয়া হারুনকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করিয়া বারি মারিলে উক্ত বারি হারুনের মাথার মাঝ বরাবর লাগিয়া ফাটিয়া রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম হয়।
এসময় কর্মচারী রিয়াজ এর মাতা শাহানুর বেগম কর্মকর্তা মোঃ জিয়াউল হক উজ্জল ও কর্মচারী মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মোঃ হারুন সরদারকে হামলা হইতে রক্ষা করার জন্য আগাইয়া গেলে মুসলিম গোরস্থান এলাকার আফসার আলী আকনের ছেলে হারুন অর রশিদ আকন (৫৪) তার পড়নের কাপড় চোপড় টানা হেচড়া করিয়া শ্লীলতাহানি ঘটায়। কালীবাড়ী রোডের মৃত ফজলে করিমের ছেলে মাসুদ করিম (৫৫) এসময়ে কর্মকর্তা মোঃ জিয়াউল হক উজ্জলের পকেট হইতে ৩৫,০০০/- টাকা জোরপূর্বক ছিনাইয়া নিয়া যায়।
এসময় আহতদের ডাকচিৎকার শুনিয়া আশে পাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসিয়া পড়িলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পূর্বে তার হুমকি প্রদান করে, উক্ত বিষয় নিয়া মামলা মোকদ্দমা করিলে আহতদেরকে খুন জখম করিয়া লাশ গুম করিয়া ফালাইবে। হামলাকারীরা পরস্পর যোগসাজসে উক্ত ঘটনা ঘটাইছে। আহদের স্থানীয় লোকজন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া যায় এবং ভর্তি করে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। এঘটনায় বরিশল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী মামলা দায়ের হয়েছে।