“আবদুল গাফফার চৌধুরী বেঁচে থাকবেন প্রভাত ফেরির মধ্য দিয়ে”-আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

”আবদুল গাফফার চৌধুরী বেঁচে থাকবেন প্রভাত ফেরির মধ্য দিয়ে” বরিশালে আবদুল গাফফার চৌধুরীর নাগরিক শোকসভায় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।

সাবেক মন্ত্রী, পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও ইত্তেফাক গ্রুপ অব পাবলিকেসন্স এর চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, গাফফার চৌধুরী মারা যাননি,আবদুল গাফফার চৌধুরী বেঁচে থাকবেন প্রভাত ফেরির মধ্য দিয়ে, প্রতি বছর তিনি ফিরে আসবেন আমাদের মাঝে। গাফফার চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর সহযোগি হিসেবে ছিলেন। তাদের অবদান ছিলো বাংলাদেশ সৃষ্টির পিছনে। গাফফার চৌধুরী বেঁচে থাকবেন তার কালজয়ী গান ও লেখনির মাধ্যমে প্রতিটি বাঙালীর হৃদয়ে। প্রভাত ফেরির ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ স্মরনে তিনি প্রতি বছর ফিরে আসবেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, যেই বাংলাদেশ সংগ্রামের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে, সেই বাংলাদেশকে যারা পুরানো অবস্থানে নিতে চায় তারা ভুল জগতে আছে। তিনি বলেন কারো মনে রাখার জন্য কাজ করে লাভ নাই, কাজের জন্য কাজ করতে হবে। টিকে থাকতে হলে সংগ্রাম করতে হবে। রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়। অমর একুশে গানের রচয়িতা, বরিশালের কৃতি সন্তান আবদুল গাফফার চৌধুরীর প্রয়ানে তাঁর প্রতি সর্বস্তরের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানাতে নাগরিক শোকসভার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।

এসময় তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন ম্যাজিশিয়ান। গাফফার চৌধুরী সাথে তার স্মৃতি নিয়ে বলেন তিনি ছাত্রলীগের ফজলুল হক হলের ছাত্রলীগের সভাপতি থাকাকালে অধিকারন আদায়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নানান কর্মসূচীতে বক্তা খুঁজে তখন গাফফার চৌধুরীকে পেয়ে থাকতেন। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, যারা বাংলাদেশের সমালোচনা করেন যারা বাংলাদেশের ত্রুটি- বিচ্যুতি নিয়ে আলোচনা করেন তাদের জেনে রাখা দরকার বাংলাদেশ আন্দোলন-সংগ্রাম এর মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছে।

তিনি বলেন ১৮৮৭ সালের সেই পাকিস্তান আমলের রুলস অব বিজনেস এর নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ চলছে। লেখা পড়া জানা লোকজদের আসতে হবে রাষ্ট্র পরিচালনা ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকাদের। রাষ্ট্র পরিচালনা করা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কিংবা জমিদারি করা নয়। রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়ম মানতেই হবে। ক্ষমতা কোথা থেকে আসে কোথা থেকে হয় এটা রহস্য। পুরাতন জিনিসকে নতুন ভাবে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেক স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করেছি। রাতারাতি কোনো কিছুর সংস্কার হবে না।

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, যে সমাজে গুণী লোকের সম্মান দেখানো হয় না, সে সমাজে গুনী লোক জন্মগ্রহন করলেও তারা অন্য কোথাও চলে যায়। গুনীদের সম্মান করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে সমাজকে পরিবর্তন করতে হবে। গাফফার চৌধুরী সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ, তিনি বাংলাভাষাসি মানুষের গৌরব। অমর একুশে গানের রচয়িতা, বরিশালের কৃতি সন্তান আবদুল গাফফার চৌধুরীর প্রয়ানে তাঁর প্রতি সর্বস্তরের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানাতে নাগরিক শোকসভা’র আয়োজন করা হয়।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় নাগরিক পর্ষদ বরিশালের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শোক সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রয়াত আবদুল গাফফার চৌধুরীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অতিথিবৃন্দ। পরবর্তীতে তার স্মরনে একমিনিট নিরবতা পালন করা হয়। শোক সভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নাগরিক পর্ষদ বরিশালের আহবায়ক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচকের বক্তৃতা করেন বিবিসি’র প্রযোজক কাজী জাওয়াদ, আলোচক ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন, নাগরিক পর্ষদ বরিশালের যুগ্ম আহবায়ক নজমুল হোসেন আকাশ ও সদস্য সচিব সৈয়দ দুলাল। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেয়র পত্নী লিপি আব্দুল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাড. একেএম জাহাঙ্গীর, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

এছাড়াও প্রধান অতিথির সফর সঙ্গী হিসেবে ভান্ডারিয়া উপজেলা জেপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহিবুল হোসেন মাহিম, জেপি’র উপজেলা যুগ্ম আহবায়ক ও পৌর কাউন্সিলর গোলাম সরওয়ার জমাদ্দার, জাতীয় পার্টি জেপি’র সদস্য সচিব ধাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান টুলু, কাউখালী উপজেলা জেপি’র সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাইদ মিয়া মনু, ইন্দুরকানী উপজেলা জেপি’র সভাপতি ও পত্তাসী ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহীন হাওলাদার, ভান্ডারিয়া উপজেলা যুব সংহতির আহবায়ক মো. রেজাউল হক রেজবি জমাদ্দার, ভান্ডারিয়া উজেলা ভাইসচেয়ারম্যান জেপি’র যুগ্ম আহবায়ক মশিউর রহমান মৃধা, জেপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইউসুফ আলী আকন, গৌরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও জেপি’র যুগ্ম আহবায়ক মজিবুর রহমান চৌধুরী।

Comments (০)
Add Comment