ইসি ও সার্চ কমিটি নিয়ে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছে বিএনপি: কাদের

জনমনে ধোঁয়াশা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত নির্বাচন কমিশন ও সার্চ কমিটি নিয়ে বিএনপি নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিকর কথা বলছে অভিযোগ করে এর কঠোর সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নির্বাচন কমিশন ও সার্চ কমিটি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের লাগাতার বিশদাগারের প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের কাজ। নির্বাচন কমিশন দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইনের মধ্য থেকেই নির্বাচন পরিচালনা করে। নির্বাচনের সময় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। কোনো দল বা সরকার নির্বাচন পরিচালনা করে না। নির্বাচনকালীন সরকার শুধুমাত্র তাদের রুটিন ওর্য়াক করে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। সুতরাং নির্বাচন পরিচালনার কাজে সরকারের পক্ষ থেকে কখনই নির্বাচন কমিশনের ওপর প্রভাব বিস্তার করা হয়নি, হবেও না। বরং সরকারের পক্ষ থেকে সর্বদাই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করা হয়।’

বিএনপির শাসনামলে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য কীভাবে প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন কমিশনকে যথেচ্ছাভাবে ব্যবহার করা হয়েছে তা জনগণ দেখেছে মন্তব‌্য করে কাদের বলেন, ‘ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে মাগুরা ও মিরপুর উপ-নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভূতপূর্ব ঘটনার জন্ম দেয় তারা। গণবিরোধী অবস্থান নিয়ে অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে বিএনপি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন যে নির্বাচন করেছিল, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের সমুজ্জল স্মৃতির পাতায় তা একটি কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই গণতন্ত্রের বিপরীত মেরুতে বিএনপির অবস্থান।’

তিনি বলেন, ‘‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নসাৎ করে অসাংবিধানিক ও অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল করে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা খুনি-সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান। সেই সামরিকতন্ত্র নীতির অনুসারী বিএনপির আজ নির্বাচন কমিশন ও গণতান্ত্রিক পন্থায় গঠিত সার্চ কমিটি নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই।

‘মূল কথা হলো- স্বৈরতন্ত্রের নীতিতে পুষ্ট বিএনপির গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি এক ধরনের অশ্রদ্ধা ও অবজ্ঞা রয়েছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল ও ক্ষমতাসীন হয়ে জোর জবরদস্তির মাধ্যমে টিকে থাকা যাদের রাজনৈতিক কৌশল তারা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হবে এটাই স্বাভাবিক।”

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হয়ে সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান সেনাছাউনিতে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিল। বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই বিরোধী রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছে। সেই দুঃসহ সময় কাটিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক সময়ের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত বাংলাদেশ আজ শান্তিপূর্ণ জনপদে রূপান্তরিত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরতন্ত্রের নাগপাশ থেকে মুক্ত বাংলাদেশে আজ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুপ্রতিষ্ঠিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক দল সর্বোপরি সকল স্তরের জনগণের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একটি দেশবিরোধী চিহ্নিত রাজনৈতিক শক্তি যখন লাগাতারভাবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকে তখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমুন্নত রাখা কষ্ঠসাধ্য হয়ে পড়ে।’

‘যেকোনো মূল্যে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে দেশবিরোধী মহল ও তার প্রতিভূ বিএনপিকে পরাস্ত করব। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল দেশপ্রেমিক জনগণকে পাকিস্তানি ভাবধারার এই প্রেতাত্মা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানাব’ বলেন তিনি।

Comments (০)
Add Comment