উজিরপুরে ছাত্রদল নেতার চাঁদা দাবি, হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: ব্রিজ নির্মানের ঠিকাদারের ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের কাছে দাবিকৃত চাঁদার ১০ লাখ টাকা না পেয়ে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে দুই দফায় শ্রমিকদের ওপর হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার উত্তর বড়াকোঠা এলাকার।

 

শনিবার দুপুরে এজাহার ও মামলার বাদি ঠিকাদার উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক রফিকুজ্জামান লিটন অভিযোগ করে বলেন, উজিরপুরের উত্তর বড়াকোঠা এলাকার সবুজ মল্লিকের বাড়ির সামনে এলজিইডির আইবিবিআইআরপি প্রকল্পের মাধ্যমে মের্সাস বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশনের অনুকূলে ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ব্রিজের নির্মান কাজ শুরু করা হয়। কাজের শুরুতে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক ও দক্ষিণ ধামুরা গ্রামের বাসিন্দা মনির হোসেন সরদার তার (ঠিকাদার) ব্যবসায়ীক পার্টনার মাসুম মল্লিকের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ায় ছাত্রদল নেতা ও তার সহযোগিরা ক্ষিপ্ত হয়। একপর্যায়ে প্রথম দফায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর পরই উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মনির হোসেন সরদার, তার সহযোগি স্বপন মল্লিক, কাওছার সিকদার, আনিচ মল্লিক, ইউনুস মল্লিক, দ্বীন ইসলাম আকন, জনি হাওলাদার, আকরাম হোসেন বুলু, জিহাদ আকনসহ ২০/২৫ জনে ব্রিজ নির্মানের শ্রমিকদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। হামলাকারীরা শ্রমিকদের মারধরসহ কাজের এলাকায় অস্থায়ী অফিস ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরসহ ঘটনাস্থলে থাকা ছয়টি সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। এসময়ে শ্রমিকদের রান্না করা খাবার বিনষ্ট করে। দ্বিতীয় দফায় ওইদিন রাতেই হামলাকারীরা ঠিকাদার রফিকুজ্জামান লিটনের ব্যবসায়ীক পার্টনার মাসুম মল্লিকের বসত ঘরে হামলা চালায়। উল্লেখিত হামলাকারীরা মাসুমের বসত ঘর থেকে মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এসময় স্থানীয় মসজিদের মাইকে ডাকাত প্রবেশের প্রচার করা হলে গ্রামবাসী এগিয়ে আসার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে, আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

 

ঠিকাদার ও বিএনপি নেতা রফিকুজ্জামান লিটন আরও বলেন, চাঁদাবাজদের হামলায় শ্রমিক আতিকুর রহমান, লিয়ন ইসলাম, রিয়াদ হোসেন গুরুত্বর আহত হন। এসময় আহতদের উদ্ধারে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা নারী শ্রমিক মায়া বেগমকে মারধরের পর শ্লীলতাহানী করে। এ ঘটনায় তিনি (ঠিকাদার রফিকুজ্জামান লিটন) বাদি হয়ে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মনির হোসেন সরদারসহ তার উল্লেখিত সহযোগিদের বিরুদ্ধে উজিরপুর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ঠিকাদার রফিকুজ্জামান লিটন বলেন, পুলিশ অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পেয়েও শুরুতে মামলা নিতে গরিমসি করে। পর শুক্রবার দিবাগত রাতে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করেছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, গত কয়েকমাস ধরে দলের দাপট দেখিয়ে এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, দখলদারি, হুমকি-ধমকিসহ সব রকম অপকর্মের নেতৃত্ব দিচ্ছে মনির হোসেন। ভয়ে মুখ খুলছে না এলাকাবাসী।

 

এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মনির হোসেন সরদারের সাথে শনিবার দুপুরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনার সাথে আমার কোনধরনের সম্পৃক্ততা নেই। তারপরেও কেন আমার বিরুদ্ধে ঠিকাদার অভিযোগ দায়ের করেছেন তা আমার বোধগম্য নয়।

উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা নেয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উজিরপুরে ছাত্রদল নেতার চাঁদা দাবিশ্রমিকদের ওপর হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় মামলাহামলা ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় মামলা
Comments (০)
Add Comment