উন্নয়নের ছোঁয়ায় দক্ষিণাঞ্চল

বর্তমান সরকারের উন্নয়নে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক গতিশীলতা

প্রিন্স তালুকদার, বিশেষ প্রতিবেদক ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টানা সরকার গঠনের সুফল ভোগ করছে পুরো বাংলাদেশ। তবে দক্ষিণাঞ্চল যেন উন্নয়নের এক পরিপূর্ণ নিদর্শন। সরকার গঠনের পর থেকেই দখিনের জানালায় শুধু উন্নয়ন আর উন্নয়ন। সরকারপ্রধান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সাক্ষী।

পদ্মা সেতুর পাশাপাশি বাংলাদেশ, কুয়েত, চীন, জাপান  এবং ওপেক তহবিলে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিনটি সেতু দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগসহ আর্থ সামাজিক ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনছে। ঢাকা-ফরিদপুর-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৪৭০ মিটার দীর্ঘ ৪ লেনের ‘পায়রা সেতু এবং চট্টগ্রাম-বরিশাল-খুলনা-মোংলা মহাসড়কের বেকুটিয়াতে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা ৮ম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু দুটি চালু হয়েছে।

৪ লেনের ‘পায়রা সেতু’

বরিশাল-গোপালগঞ্জ-যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে ‘কালনা সেতুটিও উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব সেতু নিকট অতীতের নদ-নদী নির্ভর দক্ষিণাঞ্চলকে ফেরি বিহীন সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করছে। এমনকি এ সেতু ৩টি নির্মাণের ফলে দক্ষিণাঞ্চলসহ উপকূলের তিনটি বিভাগ প্রায় নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগের আওতায় আসছে। কালনা সেতুর মাধ্যমে বরিশাল ও খুলনা বিভাগসহ গোপালগঞ্জ হয়ে যশোর ছাড়াও দেশের বৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল ও ভোমড়ার সাথে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রায় ১ হাজার ৪৯৫ মিটার দীর্ঘ বেগম ফজিলাতুন্নেসা সেতুটি সুদূর চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা, মোংলা, বেনাপোল ও ভোমড়া স্থল বন্দরের সড়ক যোগাযোগ সহজতর করেছে। ফলে দেশের ৩টি সমুদ্র বন্দরের সড়ক যোগাযোগও অনেকটাই নির্বিঘ্ন হয়েছে।

পায়রা সেতুর মূল অংশের দুই প্রান্তে ৮৪০ মিটার ভায়াডাক্ট এ ৩০ মিটার করে ২৮টি স্প্যানে বর্ধিত অংশের ভার বহন করছে। সেতুটির ৩২টি স্প্যান দাঁড়িয়ে আছে ৩১টি পিলার এর ওপর। এ সেতুটি নির্মাণের ফলে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে মাত্র ৫ ঘন্টায় পায়রা বন্দরসহ সাগর পাড়ের কুয়াকাটায় পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। এদিকে প্রায় ১ হাজার ৪৯৪ মিটার দীর্ঘ ৯টি স্প্যান ও ৮টি পিলার বিশিষ্ট ৮ম চীন বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুও চালু হয়েছে।গত ৭ আগষ্ট চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই’র উপস্থিতিতে ৮ম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা উদ্বোধন করে।

দেশের প্রথম ৬ লেন ‘কালনা সেতু’

বরিশাল-গোপালগঞ্জ-যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের কালনাতে মধুমতি নদীর ওপর জাপানি সহায়তায় ৯৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম ৬ লেন ‘কালনা সেতু’ও উদ্বোধন হয়েছে। সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক ও ৫৯০ মিটার দীর্ঘ কালনা সেতুটির মধ্যবর্তী অংশে ভিয়েতনামে প্রস্তুত ১৫০ মিটার অংশ ‘নিয়েলসান লোস আর্থ’ টাইপ স্টিল স্ট্রাকচার স্থাপন করা হয়েছে। এ অংশটি বিযুক্ত অবস্থায় প্রকল্প এলাকায় নিয়ে এসে সংযুক্ত করা হয়েছে। ১২টি পিলারে ১৩টি স্প্যানের ওপর নির্মিত এ সেতুটির এবাটমেন্ট ছাড়াও সংযোগ সড়কে একাধিক কালভার্ট ও আন্ডারপাস নির্মান করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে বলতে হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মাসেতুর কথা। স্বনির্ভর বাংলাদেশের এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি এই পদ্মা সেতু। পুরো বাংলাদেশ যেন অপেক্ষায় ছিল এই সেতুর জন্য। নানান ষড়যন্ত্র আর বাধা বিপত্তি পেরিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে জানান দিচ্ছে বাঙালি জাতির দৃঢ়তার। দক্ষিণাঞ্চলসহ পুরো দেশের সঙ্গে রাজধানীর দূরত্ব ঘুচিয়ে দিয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় এনেছে বিপ্লব। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগকে শুধু নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্নই করছে না, এ অঞ্চলের উন্নয়নে সুদূর প্রসারী ইতিবাচক ফল দেবে বলে মনে করছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে বাকি অংশকে সরাসরি সংযুক্ত করেছে পদ্মা বহুমুখী সেতু, যা বাংলাদেশের মানুষের আত্মমর্যাদার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যে বাংলাদেশের মানুষকে দুর্নীতিপরায়ণ বলে কালিমালেপনের চেষ্টা চলেছিল, সেই কলঙ্ক থেকে উদ্ধার করে সমগ্র দেশের মানুষ তথা বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদায় উদ্ভাসিত করেছেন একমাত্র দূরদর্শী নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা সাহসী ও দৃঢ় মনোবলের ব্যক্তিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু সমগ্র দেশের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাকে সংযুক্ত করার মধ্য দিয়ে পূর্বাপর উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।

শেখ হাসিনা সেনানিবাস

একদিকে যেমন খুলনা বিভাগীয় জেলাগুলোর শিল্প, কৃষি, মৎস্য, চালনা সমুদ্রবন্দরসহ খাতভিত্তিক উন্নয়নের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। তেমনি আর একদিকে সমগ্র বরিশাল বিভাগীয় জেলাগুলোর তথা দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে সরাসরি প্রভাব অনুমেয়। দক্ষিণাঞ্চলের প্রান্তিক ও অবহেলিত জেলাগুলোর ওপর খাতভিত্তিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর জেলার অবস্থানকে আমলে নিয়ে পদ্মা সেতুর পূর্বাপর প্রভাব বিশ্লেষণটি গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণাঞ্চলের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের জন্য শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পর্যটন, জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধসহ সামগ্রিক বিষয়টি এখন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত।

প্রাসঙ্গিকভাবে বলা প্রয়োজন, বরিশাল বিভাগ তথা সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত। এই অঞ্চলে একটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে মাত্র ১১ বছর আগে। যদিও শিক্ষাক্ষেত্রে এই অঞ্চলের মানুষের অনন্য অবদান রয়েছে। এই শিক্ষাক্ষেত্রে বরিশাল অঞ্চলের ঐতিহ্যও দীর্ঘদিনের। তেমনিভাবে শিল্পক্ষেত্রেও বিশেষ কোনো অগ্রগতি নেই। নেই কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। পাশাপাশি সম্ভাবনাময় খাতগুলো পড়ে আছে অবহেলায়। যেমন কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত, জলপথের সুবিধা, মৎস্য উৎপাদনের সম্ভাবনা, স্থানীয় কাঁচামালনির্ভর কুটিরশিল্প স্থাপন ও সম্প্রসারণের সুবিধাসহ নানা বিষয় অনুপস্থিত। আর সড়ক ও রেলপথের বিষয়টি তো সবার জানা। রেলপথ নেই, সড়কগুলো সরু।

পায়রা বন্দর

এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, শেখ হাসিনা সেনানিবাস, অনেকগুলো সেতু নির্মাণসহ ফেরিহীন যোগাযোগ কুয়াকাটা পর্যন্ত, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, পায়রা সমুদ্রবন্দর স্থাপন, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা, তথ্যপ্রযুক্তি সম্প্রসারণে বরিশালে হাইটেক পার্ক তৈরি, মেরিন একাডেমি বরিশাল, বরিশাল ড্রেজার বেইজ স্টেশন,বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পিরোজপুরে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, পটুয়াখালীতে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন, ভোলায় গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার ও উত্তোলনসংশ্লিষ্ট নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এগুলো সবই হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও সুদূরপ্রসারী চিন্তা ও নেতৃত্বে। এই প্রাসঙ্গিকতায় আমরা যদি ফিরে দেখি, ২০০৯ সালের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো সেতু, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের (হাইটেক পার্ক স্থাপন) উদ্যোগসহ সবগুলোই দূরদর্শিতার পরিচায়ক। কেননা, পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই এই উদ্যোগগুলো নিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

হাইটেক পার্ক

তার দূরদর্শী নেতৃত্বে প্রমাণিত হয়েছে শুধু পদ্মা সেতুর মাধ্যমেই এই অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থাই নয় বরং পদ্মা সেতুর পূর্বাপর প্রভাব কাজে লাগানোর বিষয়টি। দেশের সমগ্র অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হওয়ার জন্য পদ্মা সেতুর পূর্বাপর প্রভাব দক্ষিণাঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ করতে দূরদর্শী পদক্ষেপ গ্রহণ।

বিস্তারিতভাবে আলোচনা করলে দেখা যায়, পদ্মা সেতু যেমন দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ও সুবিধা সৃষ্টি করেছে, তেমনিভাবে এই অঞ্চলের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদক্ষেপ, যা দূরদর্শিতার প্রতিফলন। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, শুধু পদ্মা সেতু দিয়ে সহজ যোগাযোগ হলেই সার্বিক উন্নয়ন ঘটবে তা কিন্তু নয়। কেননা, পদ্মা সেতু দিয়ে সহজে দক্ষিণাঞ্চলে এসে কেন উদ্যোক্তাগণ নতুন নতুন উদ্যোগ নেবেন, তার যৌক্তিক অবস্থা তুলে ধরতে হবে বিনিয়োগকারীসহ সব উদ্যোক্তার কাছে। যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য যেগুলো নিশ্চিত করা প্রয়োজন, তার মধ্যে প্রধান হলো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা।

বরিশাল ড্রেজার বেইজ স্টেশন

শিল্পোদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীগণ যখন নিশ্চিত হবেন দক্ষিণাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ প্রাপ্তির বিষয়টি, তখন সংগত কারণেই তাদের আগ্রহ তৈরি হবে বিনিয়োগ করার জন্য। ফলে নতুন নতুন শিল্পকারখানা ও সেবাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। ঠিক তেমনিভাবে শিক্ষার সম্প্রসারণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ রিসোর্স পারসন এবং শিক্ষা সম্পর্কিত রিসোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতাও নিশ্চিত হবে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে সহজ ও স্বল্প সময়ে যোগাযোগের কারণে।

পাশাপাশি সহজ ও স্বল্প সময়ে সড়ক যোগাযোগের কারণে পর্যটনশিল্প সম্প্রসারিত হবে দক্ষিণাঞ্চলের সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা এবং পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবনকে আবর্তিত করে। আরেকটি বিষয় :উৎপাদিত শিল্পদ্রব্য (বিশেষ করে গার্মেন্টসে উৎপাদিত পোশাকসামগ্রী) রপ্তানির জন্য আন্তর্জাতিক যোগাযোগে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার সহজলভ্য ও গুরুত্ববহ।

মেরিন একাডেমি

এক্ষেত্রে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চলে ইতিমধ্যে স্থাপিত পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্রবন্দর, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত এবং তথ্যপ্রযুক্তির কর্মসংস্থানের জন্য যে হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা অত্যন্ত সুদূরপ্রসারি ও দূরদর্শী নেতৃত্বের বহিঃপ্রকাশ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর পূর্বাপর প্রভাব বিবেচনা করে দক্ষিণাঞ্চলে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন, তার সুফল দক্ষিণাঞ্চলবাসী অতি দ্রুতই পাবে বলে অনুমিত হয়। সুতরাং, সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জন্য ইতিমধ্যে গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপই দূরদর্শী ও সুপরিকল্পিত বলে প্রতীয়মান হয়।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেতু (বেকুটিয়া সেতু)

প্রাসঙ্গিকভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের আরো দুটি দিক উল্লেখ করা প্রয়োজন, তা হলো সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক গতিশীলতা। প্রথমত, পদ্মা সেতুর পূর্বাপর প্রভাবে অর্থনৈতিক গতিশীলতা বহুগুণ বেড়ে যাবে, সেটা যেমন ক্ষুদ্র উৎপাদনকারী—কৃষি, মৎস্যসহ নানা খাতে, তেমনি ক্ষুদ্র ব্যবসা থেকে মাঝারি ও বৃহৎ ব্যবসায় সমান সুযোগ তৈরি হবে, যার সমন্বিত প্রতিফলন দেখা যাবে দ্রুত অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে।

দ্বিতীয়ত, পদ্মা সেতুর পূর্বাপর প্রভাবে সহজ যোগাযোগের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের আপামর মানুষের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সহজ সামাজিক যোগাযোগ ও সম্পর্ক তৈরিতে গতি বৃদ্ধি হবে, যার প্রতিফলন হবে দ্রুত সামাজিক গতিশীলতা বৃদ্ধিতে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক গতিশীলতা বৃদ্ধির সমন্বিত প্রভাব সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এটা অবধারিত।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

সবশেষে উল্লিখিত সামগ্রিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দক্ষিণাঞ্চলের বিভাগীয় জেলা বরিশাল হবে বাণিজ্যিক ও শিল্পনগরী। আর সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল হবে উন্নয়ন সম্ভাবনার সূচক, যা সমগ্র বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে, সেটা দূরদর্শী নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অনন্য আরেকটি মাইলফলক।

Comments (০)
Add Comment