এবার ডিএনএ নমুনা দিতে কলকাতা সিআইডি আনার-কন্যাকে ডেকেছে কলকাতায়

অনলাইন ডেস্ক: আনোয়ারুল আজীম আনারকে কলকাতায় এই ভবনের ফ্ল্যাটে হত্যা করা হয় বলে জানা গেছে।

আনারের পিএস আব্দুর রউফ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার কলকাতা সিআইডির এক কর্মকর্তা ফোন করে ডিএনএ নমুনা দিতে ডরিনকে এক সপ্তাহের মধ্যে কলকাতায় যেতে বলেছেন। আমরা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা ডিবির টিমের সঙ্গে ভারতে যাব।’

ভারতের কলকাতায় নিহত ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মরদেহের ফরেনসিক প্রতিবেদন পেয়েছে কলকাতার অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরপরই ডিএনএ (ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিয়িক এসিড) নমুনা দিতে আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনকে কলকাতায় ডেকেছে তারা।

নিহত এমপি আনারের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার কলকাতা সিআইডির এক কর্মকর্তা ফোন করে ডিএনএ নমুনা দিতে ডরিনকে এক সপ্তাহের মধ্যে কলকাতায় যেতে বলেছেন। আমরা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।

‘ডরিনের ভারতে যাওয়ার ভিসা রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা ডিবির একটি টিমের সঙ্গে ভারতে যাব।’

এদিকে এমপি আনার হত্যার ঘটনায় ভারতে দুজন ও বাংলাদেশে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের মধ্যে চারজনই আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

অপরজন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু এখন পর্যন্ত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। ১৩ জুন মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করেন। শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন মিন্টু।

আদালতকে মিন্টু বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এমপি নির্বাচনে মনোনয়ন চাওয়াটাই আমার অপরাধ।’

গত জাতীয় নির্বাচনে ঝিনাইদহ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন, বিষয়টি তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আনার হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার অন্যতম আসামি শিমুল ভূঁইয়ার আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর নামও উঠে আসে। আওয়ামী লীগ নেতা বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ও নাম আসে মিন্টুর। বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ নিশ্চিত হয় যে আনার হত্যার পেছনে মিন্টুর বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে। এ সংক্রান্ত একাধিক তথ্যও পায় ডিবি। পরে ১১ জুন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আটক করা হয় মিন্টুকে।

প্রসঙ্গত, এমপি আনার ১২ মে ভারতে যান। পরদিন ১৩ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন তিনি। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২২ মে। ওইদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আনারের মেয়ে ডরিন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ মামলা করেন।

তদন্তের নেমে কলকাতার ওই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক থেকে মাংসের টুকরো এবং খাল থেকে হাড় উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। উদ্ধার করা ওই মাংস ও হাড় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। প্রাথমিক পরীক্ষায় ও হাড় ও মাংস মানুষের বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সে কারণে আনার-কন্যা ডরিনকে কলকাতায় ডাকা হয়।

এছাড়া ভারতে একটি হত্যা মামলা হয়। দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে এ পর্যন্ত ১২ জনের নাম এসেছে।

 

Comments (০)
Add Comment