গণতন্ত্রের প্রতি অশ্রদ্ধা থেকেই বিএনপির সংলাপ বর্জন: তথ্যমন্ত্রী

গণতন্ত্রের প্রতি অশ্রদ্ধা থেকেই বিএনপি রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জন এবং সার্চ কমিটিকে অবজ্ঞা করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতারের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. হাছান বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হলে আমি মনে করি প্রথমত তাদের সংলাপে যাওয়া উচিত ছিল। সংলাপে গিয়ে তারা তাদের আপত্তির কথাগুলো বলতে পারতো। রাষ্ট্রপতির সংলাপে না গিয়ে তারা রাষ্ট্রপতি এবং রাষ্ট্রকে অবজ্ঞা করেছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপিসহ যারা রাষ্ট্রপতির সংলাপে যায়নি এমন অনেক দল এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সার্চ কমিটির সঙ্গে বসছেন, আলাপ করছেন। বিএনপিরও অনেকেই এখন অনুধাবন করতে সক্ষম হচ্ছেন যে, সংলাপে অংশ না নিয়ে বিএনপি ভুল করেছে। সেজন্যই বিএনপি ঘরোনার বুদ্ধিজীবী এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. জাফরুল্লাহসহ অনেক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সে অনুরোধ জানিয়েছেন।

ড. হাছান আরও বলেন, বিএনপির যদি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা থাকে এবং দেশে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অব্যাহত থাকুক যদি সেটি চায়, তাহলে সার্চ কমিটির কাছে তাদের নাম জমা দেওয়া উচিত। পরে সার্চ কমিটি বিবেচনা করে যোগ্যদের একটি শর্ট লিস্ট করে রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম পাঠাবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, কিন্তু বিএনপির গণতন্ত্রের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা নেই। কারণ, তাদের জন্মটাই তো অগণতান্ত্রিকভাবে ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে এবং অস্ত্র উঁচিয়ে।

হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছে, সারাদেশে ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা হয়েছে, জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে। তারা তো গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে না। সেজন্য এই গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি তাদের শ্রদ্ধাও নেই, তারা বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শন করছে।

তিনি বলেন, সংবিধানে বলা আছে, যে সরকার দায়িত্ব পালন করছে সেই সরকারই নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করবে, রুটিন কাজ করবে। অর্থাৎ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু মন্ত্রী বা অন্য কেউ তো দূরের কথা, প্রধানমন্ত্রীও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর কোনো কনস্টেবলও বদলি করতে পারেন না। সুতরাং নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলে তারা জনগণকে যে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে সেটি আসলে গণতন্ত্রের প্রতি অশ্রদ্ধারই শামিল।

‘সবাই মিলে বেতার শুনি, বেতারেই আস্থা রাখি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্ব বেতার দিবসের আলোচনায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে বেতার দ্বিতীয় ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করেছে। এটি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

মানুষের মানবিকতা ও নৈতিকতা রক্ষায় বাংলাদেশ বেতারের ভূমিকা অব্যাহত রাখতে নতুন নতুন অনুষ্ঠান নির্মাণের আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন বলেন, দেশ ও মানুষের কল্যাণে বেতারকে আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।

বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক আহমেদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে ইউনেসকোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি বিয়েট্রিস ক্যালদুন ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। সভা শেষে সাঈদা বাঁধন ও লাল্টু হোসেনের সঞ্চালনায় ছিল শিল্পীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

Comments (০)
Add Comment