নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের পরে সারাদেশে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও ভাংচুর,ঘর বাড়িতে হামলা,সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও উপশানলয় ভাংচুর,ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর এর প্রতিবাদে প্রতিবাদ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বরিশাল‘র সমন্বায়করা।
আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য মুক্তিকামী ছাত্র জনতা রাজপথে থাকবো বলে ঘোষনা দেন তারা্। ৬ আগস্ট,মঙ্গলবার সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সমন্বায়ক লাবণ্য রহমান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্ট করে এই লড়াই জিতেছি। আমরা কলম ধরেছি যে হাতে সে হাতে কখনও অস্ত্র ধরবো না। সহিংসতা করে কিছু সুবিধাবাদী ছাত্র সমাজকে দায়ভার দিতে চাচ্ছে, তা আমরা কখনো নিব না। কারণ আমাদের ছাত্রসমাজের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ, যা সারা বিশ্ব দেখেছে। বরিশালবাসী, ছাত্র/ছাত্রী সহযোদ্ধা বন্ধুগণ, আমরা দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম, প্রতিবাদ প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করেছি। মহান রবের নিকট আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি তাদেরকে, এ আন্দোলনে যে সকল ভাই ও বোনেরা যারা শাহাদাত বরন করেছেন । রাষ্ট্রীয় সম্পদ আমাদের, এগুলো ধ্বংস করতে বা অরাজকতা সৃষ্টি করলে আমরা তাদের শক্ত হাতে দমন করার জন্য রাজপথে থাকবো।
সমন্বায়ক মো. মহিউদ্দিন বলেনপ্রিয় ছাত্র/ ছাত্রী ভাই ও বোনেরা- আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, আমাদের বিজয় অর্জনের পরেই দেশে অরাজকতা, নাশকতা করছে, ফ্যাসিস্ট এবং তাদের দোসররা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের স্থাপনায় হামলা হচ্ছে, ভাঙচুর হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। যারা বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এমনটা করছে তাদের সাথে আমাদের প্রত্যক্ষ পরোক্ষ কোন সম্পৃক্ততা নেই এবং তারা আমাদের সকলের শত্রু। আমরা মনে করি আমাদের ছাত্র নাগরিকদের যে অভ্যুত্থান তাকে নস্যাৎ করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ যেন রাষ্ট্রীয় সম্পদ, স্থাপনা, দোকানপাট, বাড়িঘরে আগুন দিতে না দিতে পারে, সে জন্য আমরা বরিশালের মুক্তিকামী ছাত্র জনতাকে সজাগ দৃষ্টি এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি ।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ- দেশে যে অরাজকতা হচ্ছে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। সে জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট আহ্বান জানাচ্ছি, দেশে আইন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নিন। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা মুক্তিকামী ছাত্র জনতা রাজপথে থাকবো । ইনশা আল্লাহ!
তিনি বলেন, আমরা সংবাদ পেয়েছি আমাদের পুলিশ ভাইয়েরা শঙ্কায় রয়েছে, সাংবাদিক ভাইদের ওপরও হামলা হচ্ছে, আমরা প্রতিটি বিষয়ে নিন্দা জ্ঞাপন করছি। আমাদের এই প্রোগ্রামের মধ্যেই বগুরা পুলিশ ফাঁড়িতে সেচ্ছাসেবক টিম পাঠিয়েছি, যাতে কেউ সেখানে কোন সহিংসতা করতে না পারে। আমাদের ভাইয়েরা গতরাতে না ঘুমিয়ে সংখ্যালঘুদের স্থাপনা পাহারা দিয়েছে। আমরা কোন সহিংসতা চাইনা।
এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকায় সাধুবাদ জানিয়ে মো. মহিউদ্দিন বলেন, আপনাদের বিষয় আমরা বুঝি, যেমন আমাদের অনেক শিক্ষক চাইলেও আমাদের সাথে থাকতে পারিনি, তবে পক্ষে থেকে আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, সেইসাথে দোআসহ অনেক সহযোগিতাও করেছেন। আমরা বিজয় পেয়েছি এখন সবাই মিলে সোনার বাংলা গড়বো। আর আপনাদের মাধ্যমেই সংবাদগুলো প্রচার হয়েছে। আমরা আপনাদের পাশে আছি, আপনারাও আমাদের পাশে ছিলেন ভবিষ্যতে থাকবেন। এখন আপনাদের কথা বলতে কোন বাধা নেই।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বায়ক সিরাজুল ইসলামসহ বরিশালের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমন্বায়করা উপস্থিত ছিলেন।