বরিশালে আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বাংলাদেশে ভয়াবহ সিসা দূষণ বন্ধে আইনের যথযাথ প্রয়োগের দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে বুধবার বিকেলে নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের এই কর্মসূচি হয়।

ইয়ুথনেট, পিওর আর্থ ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি হয়েছে। সভা শেষে পরিবেশকর্মীরা সিসা দূষণ প্রতিরোধমূলক ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড জনসচেতনতামূলক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করে।

এসময় বক্তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ শিশুর রক্তে উচ্চ মাত্রায় সিসা পাওয়া গেছে। সিসা বিষক্রিয়ার শিকার শিশুদের বুদ্ধি কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন ক্ষতির পাশাপাশি প্রাপ্ত বয়স্করাও হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই সিসা দূষণ বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করেন বক্তারা।

এসময় বক্তৃতা দেন, বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সোহেল মাহমুদ, জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শেখ কামাল মেহেদী, নারীনেত্রী অধ্যাপক শাহ সাজেদা, ইয়ুথনেট গ্লোবালের কোডিনেটর আরিফুর রহমান শুভ, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ময়ূরী আক্তার টুম্পা, সমন্বয়কারী আশিকুর রহমান সাকিব প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বিশ্বে সর্বোচ্চ সিসা দূষিত দেশের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের মানুষদের রক্তে মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ শিশু অর্থাৎ দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ শিশুর রক্তে উচ্চ মাত্রায় সিসা আছে। সিসা বিষক্রিয়ার শিকার হলে শিশুদের বুদ্ধি কমে যায়, পড়ালেখায় পিছিয়ে পরে, মনোযোগে সমস্যা হয়, আচরণগত সমস্যা যেমন মেজাজ খিটখিটে, উচ্ছৃঙ্খলতা দেখা যায়।

সিসা দূষণের কারণে হৃদরোগে বছরে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ মারা যাচ্ছে। গর্ভবতী নারীদের রক্তে সিসার উপস্থিতি গর্ভপাত, মৃত সন্তান প্রসবসহ নানা ঝুঁকির সৃষ্টি করছে। বুদ্ধিমত্তা হ্রাস ও হৃদরোগে মৃত্যুর ফলে দেশের আর্থিক ক্ষতি হয় প্রায় ২৮,৬৩৩ মিলিয়ন আমেরিকান ডলার।

এই আর্থিক ক্ষতির কারণে দেশে বছরে ৬ থেকে ৯ শতাংশ পর্যন্ত জিডিপি ঘাটতি হয়। তাই সিসার বিষক্রিয়া প্রতিরোধে সরকার-নীতিনির্ধারণী মহলকে আইন ও নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ করে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়াও সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

Comments (০)
Add Comment