বরিশালে চুরির অপবাদ সইতে না পেরে কিশোরের আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক:  চুরির অপবাদ দেয়ায় ক্ষোভে বরিশাল নগরীর পলাশপুরে বাপ্পি খান (১৪) নামে এক কিশোরের গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে।

গত শুক্রবার গভীর রাতে নিজ বসায় ঘরের আড়ার সাথে সে গলায় ফাঁস দেয়।

পরবর্তীতে স্বজনেরা উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। বাপ্পি খান বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানাধীন নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশপুর এলাকার শাহিন খানের পুত্র এবং সে নগরীর বান্দরোড ভাটারখাল এলাকায় জমজম অটো মোটরসাইকেলের পার্টস বিক্রয়ের দোকানে কাজ করতো।

এ বিষয়ে দোকান মালিক ইকবাল বলেন, বাপ্পি গত দুই বছর যাবত আমার দোকানে কর্মরত ছিলো। সে নেশায় আসক্ত ছিল বিষয়টি গত দুই মাস আগে জানতে পারলে তাকে দোকান থেকে বাদ দেই। পরে বাপ্পি’র মায়ের অনুরোধে রোজার আগে পুনরায় তাকে দোকানে রাখি। এরপর থেকে দোকানে প্রায়ই তার বন্ধুদের নিয়ে আসত। শুধু তাই নয়, সবসময় সে পকেটে ধারালো ব্লেড নিয়ে চলাফেরা করত। বিষয়টি আমি নিষেধ করলেও সে শুনত না।

এ সময় দোকান মালিক আরো বলেন, ঘটনার দিন শুক্রবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় দোকানে এসে দেখি ক্যাশ বাক্সে টাকা নেই। পরে দোকানের সিসি ক্যামেরায় বাপ্পির চুরির ঘটনাটি ধরা পরে। পুরো ঘটনাটি তার মাকে ফোনে জানাই এবং দোকানে আসতে নিষেধ করি। কিন্তু তার মা ছেলের চুরির বিষয়টি অস্বীকার করেন। চুরির বিষয়টি নিয়ে বাপ্পির সাথে মোবাইলে কথা বলতে চাইলে তার মা জানায়, সে ঘুমায়। পরে তার মাকে আইনি পদক্ষেপের কথা জানিয়ে সংযোগ বিছিন্ন করে দেই।

এ বিষয়ে ওই কিশোরের মা জানিয়েছেন, বাপ্পি কিছুদিন ধরে নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে এবং সে মাদক ক্রয়ের টাকার জন্য প্রায়শই ঘরে অশান্তি করে আসছিল। গত শুক্রবার সন্ধ্যা রাতে দোকানের মালিক আমাকে ফোন করে জানায়, বাপ্পি তার দোকানের টাকা চুরি করেছে। পরে বিষয়টি নিয়ে তাকে গালমন্দ করলে সে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘরে আসে এবং সকলের অজান্তে ঘরের আড়ার সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। কিছুক্ষণ পর বিষয়টি টের পেয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু এর আগেই তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে চিকিৎসক।

হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম জানান, কিশোরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। বরিশাল কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল জানান, কিশোরের আত্মহত্যার খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশের টিম পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Comments (০)
Add Comment