বরিশালে মুসলিম ইনস্টিটিউটের সাইনবোর্ডে স্টিকার লাগিয়েছে মোহামেডান ক্লাব

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন বরিশাল অডিটোরিয়ামের সামনের ফাঁকা মাঠে মুসলিম ইনস্টিটিউট মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। সাইনবোর্ডে লেখা হয়- মুসলিম ইনস্টিটিউট জামে মসজিদ। একদিনের ব্যবধানে সেই সাইবোর্ডের উপরে স্টিকার লাগিয়েছে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। তাতে লেখা হয়েছে মোহামেডান স্পোর্টি ক্লাব (মুসলিম ইনস্টিটিউট) বরিশাল।

বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায়, ১৯৩৭ সালে বরিশালের জমিদার সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী বরিশাল শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায় নিজের ৩৩ শতাংশ জমিতে মুসলিম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনেও এই মুসলিম ইনস্টিটিউট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পরবর্তীতে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরীর ওয়ারিশগণ এই জমির একাংশে মহামেডান স্পোটিং ক্লাব প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেন। সেই থেকে এই জমির একাংশে মোহামেডান ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। শওকত হোসেন হিরণ মেয়র থাকাকালে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরীর দান করা মুসলিম ইনস্টিটিউটের ৩৩ জায়গার কিছু অংশ দখল করে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র থাকাকালে রাতের আধারে মোহামেডান স্পোটিং কøাব ভেঙে ফেলা হয়।

জুলাই বিপ্লবের পর মুসলিম ইনস্টিটিউটের জায়গা পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া হয়। গঠিত হয় মুসলিম ইনস্টিটিউটের একটি কমিটি। এই কমিটির আহবায়ক নিযুক্ত হন বিএম কলেজের ইসলামী শিক্ষা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোহাম্মদ আবদুর রব। সদস্য সচিব হন সাবেক কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট সালাহউদ্দিন মাসুমসহ ইসলাম পন্থী নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

তারা ভূমি অফিসের রেকর্ড রুম থেকে অতীতের সকল কাগজপত্র উদ্ধার করে মুসলিম ইনস্টিটিউটের নামে থাকা সকল জমির খাজনা পরিশোধ করেন। সেখানে দেখা যায় এসএ দাগে কিছু জমি মুসলিম ইনস্টিটিউটের নামে আবার বিএস দাগে কিছু জমি মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের নামে। কাগজপত্র অনুযায়ী জায়গাটির অধিকাংশ মালিকানা মুসলিম ইনস্টিটিউটের। যার দানপত্র রয়েছে বর্তমান কমিটির হাতে। মুসলিম ইনস্টিটিউটের নেতৃবৃন্দ দালিলিক কাগজ দেখিয়ে জানালেন, এখানে মোট ৩৩ শতাংশ জায়গা থেকে ২৬ শতাংশ এখন অবশিষ্ট রয়েছে।

আবার বরিশাল অডিটোরিয়ামের ভিতর চলে গেছে ৭ শতাংশ জমি। এমতাবস্থায় বাকী জমি যাতে বেহাত না হয় সেজন্য সিটি করপোরেশন মুসলিম ইনস্টিটিউটকে ২৬ শতক বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে দাবী করেন কমিটির নেতারা।

সরেজমিনে মসজিদ নির্মাণের কাজ চলতে দেখা যায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমাম সমিতির মহানগর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, নতুন এই মসজিদে যোহরের নামাজ আদায় হয়েছে। কিন্তু আসরের নামাজ আদায় করতে দেয়নি মোহামেডান ক্লাবের নেতারা।

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের জমি উদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক এবায়েদুল হক চান বলেন, তাদের জায়গা এখনো চূড়ান্ত ফয়সালা হয়নি। যদি হয়েও থাকে তাহলে এখানে শহীদ মিনার, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যক্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ মেনে নেওয়া যায়না।

Comments (০)
Add Comment