নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষি কৃষক কুদ্দুস হাওলাদারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামিদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার, বাদি ও তার পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক আদালত কর্তৃক ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার দিয়ার চর গ্রামের নিহত কৃষকের স্ত্রী মোসা: আকলিমা আক্তার।
শনিবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১২ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মায়ের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেয়ে সাদিয়া আক্তার (১৬)।লিখিত বক্তব্য উল্লেখ রয়েছে, আমার স্বামী ছিলেন একজন কৃষক। অন্যের জমিতে বর্গাচাষ করতেন। চলতি বছর আমাদের বসত বাড়ির পাশে ৫০ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষাবাদ করেছিলেন। আমি এবং আমার স্বামী দুই জনে মিলে তরমুজ ক্ষেত দেখাশুনা করতাম। গত ০৩/০৪/২০২৫ তারিখ দুপুরে ক্ষেত থেকে তরমুজ চুরি করে নিয়ে যায় ১) মো. আনোয়ার হোসেন চৌকিদার (৩২), পিতা-মতিউর রহমান মানিক মাস্টার, ২) সানি (২০), পিতা-মৃত সুলতান চৌকিদার, ৩) মো. ফয়সাল চৌকিদার (২৮), ৪) হিরণ চৌকিদার (১৯), ৫) মাসুদ চৌকিদার (৩২), সর্ব পিতা-হারুন চৌকিদার, ৬) মিরাজ মোল্লা (২৯), পিতা-আলাউদ্দিন মোল্লা, ৭) সরোয়ার চৌকিদার (২৩), পিতা-মতিউর রহমান মানিক মাস্টার, ৮) মতিউর রহমান মানিক মাস্টার (৬৩), পিতা-মৃত আফতার আলী চৌকিদার, ৯) হারুন চৌকিদার (৫৫), পিতা-মৃত নজর আলী চৌকিদার, সর্ব সাং-মধ্য চরাদী, বিলাম ঘাট, ০৩নং ওয়ার্ড, ০২নং চরাদী ইউনিয়ন, থানা-বাকেরগঞ্জ, জেলা-বরিশাল সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন।
তরমুজ নিয়ে যাবার সময় আমার স্বামী কৃষক কুদ্দুস হাওলাদার তাদের বাঁধা দিলে তারা তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। ঘটনার পরই স্থানীয়রা আশংকাজনক অবস্থায় কৃষক কুদ্দুস কে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করলে গত ০৪/০৪/২০২৫ তারিখ রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় কৃষক কুদ্দুসের স্ত্রী বাদী হয়ে উপরোক্তদের আসামি করে গত ০৪/০৪/২০২৫ তারিখ বাকেরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো- এক মাস অতিক্রম হয়ে গেলও বাকেরগঞ্জ থানার পুলিশ একজন আসামিও ধরতে পারিনি। তবে অন্য এক ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ২নং আসামি জেলহাজতে রয়েছে। আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় তারা বিভিন্ন উপায়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছে, লোকমুখে শুনতে পাই মামলা না উঠালে বংশে প্রদীপ জ্বালানোর কেউ থাকবে না। বাদী ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। পরিবারে আয় করার মত কোনো ব্যক্তি নেই।
এমতাবস্থায় আসামিদের হুমকিতে বাদী ও তার পরিবারের সকলের জীবনের নিরাপত্তায় হুমকির সম্মুখীন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাকেরগঞ্জ থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. এনামুল হক বলেন, হত্যা মামলার মাস্টার মাইন্ড আসামি সানি গ্রেফতার আছে। ১৬৪ ধরায় তার জবান বন্দি নেয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপরাধীরা কেউ পার পাবে না, তাদের সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে। টেকনোলজির উপর পুলিশ সকল আসামির গতিবিধ নজরদারি রেখেছে।