বাড়ি নির্মাণের প্লান পাশের নামে অর্থ আদায় প্রতারক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বরিশাল সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে ভবন নির্মানের প্লান পাশ করিয়ে দেওয়ার নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফি’র থেকে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠা এক প্রতারককে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

সেই সাথে সিটি করপোরেশনের স্থপতি শাখার কর্মকর্তা হাসিব মাহমুদ টিপু বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলাও দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ওই মামলার আসামী “নীড ডিজাইন” নামক ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মের প্রকৌশলী পরিচয় দেয়া আকাশ চন্দ্র দাস (৩০) কে গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

গ্রেফতার আকাশ চন্দ্র দাস বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানাধীন ইছাকাঠী এলাকার বাবুল চন্দ্র দাসের ছেলে।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, গ্রেফতার আকাশ চন্দ্র দাস “নীড ডিজাইন” নামক ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মের নাম ব্যবহার করে বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে বাড়ি নির্মাণের প্লান পাশের কাজ করে থাকে। যার ধারাবাহিকতায় গ্রেফতার আকাশ চন্দ্র দাস বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে ল্যান্ড ইউজার সার্টিফিকেট (এলইউসি) এবং বাড়ি নির্মানের প্লান পাশ করানোর কথা বলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে নির্ধারিত ফি’র থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের লক্ষ্যে প্রতারণা করে আসছে।

এদিকে রোববার বিকেলে সিটি করপোরেশনের এনেক্স ভবনের তৃতীয় তলার প্লান শাখায় বরিশাল নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল সড়কের বাসিন্দা নিয়াজ খান তার বাবা ও মায়ের নামে যৌথ বাড়ির প্লান পাশ ও এলইউসির জন্য আসেন। ওই সময় প্রতারক আকাশ চন্দ্র দাস প্লান ও এলইউসি পাশ করিয়ে দেয়ার জন্য নিয়াজ খানের কাছ থেকে নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত ২৭ হাজার টাকা নেয়। যে টাকা মামলার বাদী, টাউন প্লানার, সার্ভেয়ার, সিটি করপোরেশনের মেয়রের একান্ত সচিব মোস্তফা জামানকে দিতে হবে বলে জানায়। বিষয়টিতে নিয়াজ খানের সাথে সন্দেহ হলে তিনি মামলার বাদী স্থপতি শাখার হাসিব মাহমুদ টিপুকে জানায়। তাৎক্ষনিক বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আকাশ চন্দ্র দাসকে আটক করেন স্থপতি শাখার কর্মকর্তারা।

স্থপতি শাখার কর্মকর্তারা জানান, আটকের পর আকাশ চন্দ্র দাসকে মেয়রের সামনে হাজির করা হয়। তখন সে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে, অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতারণাপূর্বক অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি। আর এর মাধ্যমে সিটি করপোরেশন ও মেয়র সেরনিয়বাত সাদিক আব্দুল্লাহর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করাসহ মানহানি করে আসছিলো প্রতারক আকাশ। পরবর্তীতে আকাশকে থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয় এবং মামলার জন্য লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।

এদিকে এই ঘটনার পর একাধিকবার রোববার ফেসবুক লাইভে এসে নগরবাসীকে সতর্ক করেন মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। এসময় তিনি প্লান পাশে কোন টাকার প্রয়োজন হয় না জানিয়ে বলেন, নিয়মানুযায়ী জেনুইন কাগজ থাকলে আপনাদের প্লান পাশ হবে। কাউকে প্লান পাশের নামে কোন টাকা দিলে সিটি করপোরেশনের কোন দায় থাকবে না। পাশাপাশি জনগনকে হয়রানি রোধে প্রয়োজনে সিটি করপোরেশন থেকে প্লান নির্মানের প্রকৌশলী নিয়োগ দেয়ার কথাও বলেন তিনি।

এসময় তিনি প্রতারকদের উদ্দেশ্যে বলেন, একজন চিটার ধরা পরেছে। বরিশালের জনগনকে যারা হয়রানি করে, সিটি করপোরেশনের ভাবমূর্তি যারা নষ্ট করে তাদের ধরতে পারলে সাথে সাথে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রসঙ্গত, বর্তমান পরিষদের আমলে ৩৮ শত এর অধিক প্লান অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থপতি শাখা।

Comments (০)
Add Comment