মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে যেসব নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক: নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। এতে  সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে তিনি একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন।

বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। বিশেষ করে আগামী পবিত্র রমজান মাসে যাতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একইসঙ্গে রমজান সংশ্লিষ্ট পণ্য যেটার চাহিদা বেড়ে যায় সেগুলো সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে সে ব্যাপারেও কাজ করার জন্য তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন।’

‘আরেকটি নির্দেশনা ওনার ছিল যে আপনারা জানেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে একটি নির্বাচনী ইশতেহার দেওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন, ইশতেহারে ওই মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে ভিত্তি করে তারা যেন এখনই কর্মপরিকল্পনা নেন। এবং সেই কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে মনিটরিং করার জন্য তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কৃষি উৎপাদনের কথা তিনি বলেছেন। কৃষি উৎপাদন যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন এবং একইসঙ্গে কৃষিপূর্ণ সংরক্ষণের সংরক্ষণাগার এরইমধ্যে কিছু তৈরি করা হয়েছে আরো তৈরি করার জন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশনা দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য চারটি স্তম্ভের কথা আমরা জানি। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট জনগণ- এই চারটি স্তম্ভকে কেন্দ্র করে ভিত্তি করে সব মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে যে ওই মন্ত্রণালয় যে অংশের সঙ্গে জড়িত, সেই অংশটুকু যেন তারা পরিকল্পনা এবং সেই অনুযায়ী বাস্তবায়ন করে।’

সচিব বলেন, ‘সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতার কথা বলেছেন এবং জানিয়ে দিয়েছেন যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ওনার জিরো টলারেন্স থাকবে। এবং সবাইকে একই নীতি অনুসরণ করার জন্য তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি যেগুলো আছে সেগুলো যাতে প্রকৃত উপকারভোগীরা পায় সেটি মনিটরিং করার জন্য উনি নির্দেশনা দিয়েছেন।’

মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আরেকটি কথা তিনি বলেছেন যে, যে প্রকল্প প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে সেগুলো দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন- এমন তথ্য জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নতুন প্রকল্প নেওয়ার আগে সেটি কীভাবে জনগণের কল্যাণে লাগবে, সেটি খুব ভালোভাবে পরীক্ষা করতে বলেছেন এবং সম্ভাব্যতা যাচাই করে যেন প্রকল্প প্রণয়ন করা হয় এবং সে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয় সেজন্য তিনি বলেছেন।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সরকারি যে শূন্য পদগুলো আছে, সেগুলোতে নিয়োগের ব্যবস্থা করার জন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশনা দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘নারী উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়নে সাফল্যের যে ধারা তৈরি হয়েছে সেটি যেন কোনো অবস্থাতেই ব্যাহত না হয়, সেদিকে নজর দিতে বলেছেন। রপ্তানি বহুমুখী করণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। নতুন-নতুন বাজার অনুসন্ধান এবং সে বাজারে প্রবেশের জন্য কীভাবে সহায়তা করা যায় সে নির্দেশনা তিনি দিয়েছেন।’

‘বিশেষ করে তিনটি পণ্যের ক্ষেত্রে তিনি বলেছেন চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাতপণ্য এবং কৃষিজাত পণ্য- এই তিনটি পণ্য। গার্মেন্টসকে যেভাবে সহায়তা করা হয়েছিল বিকাশে, প্রয়োজনে সেরকম সহায়তা দিয়ে তিনটি ক্ষেত্রে যেন বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছেন।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি বলেছেন যে, আইসিটি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া, যাতে করে সেটি যেন কর্মমুখী হয়। ফ্রিল্যান্সিং যেন আরও বাড়তে পারে সেদিকে তিনি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। আরেকটা বলেছেন যুব সমাজকে খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নিতে বলেছেন। যাতে করে তারা মাদক সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে পারে।’

‘আরেকটি বলেছেন অগ্নি-সন্ত্রাস, নাশকতার বিরুদ্ধে, কোনোরকম কোনো…। উনি বলেছেন এটিকে সমন্বিতভাবে মোকাবিলা করার জন্য। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন।’

 

Comments (০)
Add Comment