নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালের কর্তৃত্ব নিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম অনুসারী শ্রমিক নেতাকর্মীর উপর হামলা ও অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
তবে মেয়র অনুসারীরা বলছেন হামলা তারা নয়, তাদের উপর একাধিকবার হামলা চালানো হয়েছে।
উভয় পক্ষের অভিযোগ মতে এই ঘটনায় আহত হয়েছে ৬ জন।
আহতরা হলো, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী অনুসারী বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান মাহামুদ, তার অনুসারী শ্রমিক মানিক, শামীম, নাসির এবং পাল্টা কমিটি বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী পরিমল চন্দ্র দাসের সমর্থক কালাম ও দিপু সিকদার।
রোবরার দুপুর ১টার দিকে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীরা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে রুপাতলী বাস টার্মিনাল সংলগ্ন সুলতান মাহামুদের অফিসে ভাঙচুর করে এবং তার উপর হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীদের সাথে আগ্নেয় ও ধারালো অস্ত্র ছিলো বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
আহত সুলতান মাহামুদ বলেন, আমি আমার ব্যক্তিগত অফিসে বসা ছিলাম। হঠাৎ করে শ্রমিক নেতা দাবীদার রইজ আহম্মেদ মান্না, জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সাজ্জাদ, মুনিম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিবসহ দুইশতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী শর্টগান ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমার উপর হামলা করে এতে আমি সহ আমার সাথে থাকা কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। এরা সব মেয়র সাদিকের কথায় আমার উপর হামলা চালিয়েছে। সাদিক রুপাতলী বাস টার্মিনাল কন্ট্রোলে নিতে পারছে না আমার কারণে, যে জন্য আমার উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। আমার অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ দাড়িয়ে দাড়িয়ে সিনেমা দেখেছে। সুলতান বলেন, আমি এবং আমার অনুসারীরা কেউ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার সাহস পাচ্ছে না, যে কারণে আমার নিজ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছি। হাসপাতালে ভর্তি হলে আমাদের উপর আবার হামলা করা হবে।
অপরদিকে সিটি মেয়র অনুসারী বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাস জানান, আমরা কারো উপর হামলা করিনি। যাদের নাম বলছে তারা তো টার্মিনালেই আসেনি। বরংচ সুলতান মাহামুদ আমাদের উপর হামলা চালিয়ে আমাদের দুই শ্রমিককে আহত করেছে। তাদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার বাবু বলেন, আমরা সকাল থেকে টার্মিনালে ছিলাম, কিন্তু কোথাও কোনো ঝামেলার খবর শুনিনি। উল্টো আমাদের উপর হামলা হয়েছে। যেখানে আমাদের শ্রমিক পাচ্ছে সেখানেই মারধর করা হচ্ছে। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সুলতান মাহামুদের অফিস সংলগ্ন অগ্রনী ব্যাংকের ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, গন্ডগোল দেখে আমি ব্যাংকের গেট আটকে দেই। কারা ভাঙচুর করছে সেটা বলতে পারবো না।
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার সহকারি কমিশনার শারমিন সুলতানা রাখি বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এনামুল হক বলেন, এখানে এসে একটি অফিস ভাঙচুর অবস্থায় দেখতে পেয়েছি। বিচ্ছিন্ন ভাবে এসে এই ঘটনা ঘটনো হয়েছে। যারাই এই অপরাধ করেছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজগুলো পর্যালোচনা করে দেখবো আমরা। পুলিশের সামনে এই ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ ছিলো তবে ঘটনাস্থলে নয়, তাছাড়া পুলিশের কোনো গাফলতি নেই।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ কয়েকদিন ধরেই রুপাতলী মিনিবাস টার্মিনাল দখল নিয়ে প্রতিমন্ত্রী ও মেয়র সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছিলো। শনিবার দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।