নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশাল নগরীর ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্লেসমেন্ট অফিসার মো. মামুনুুর রশীদ কে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন’র কাছে লিখিত অভিযোগ জানান তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, বুধবার দুপুরে ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের রিসিপশন ডেস্কে প্লেসমেন্ট অফিসার মো. মামুনুুর রশীদ কর্মরত ছিলেন এসময় প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা মো. আমীর হোসাইন রিসিপশনের সামনে দিয়ে তার কক্ষের দিকে যাচ্ছিলেন। আমি (মামুনুর) কম্পিউটারে মনোযোগ সহকারে কাজ করছিলাম বিধায় তাকে লক্ষ্য করি নাই। এসময় তিনি আমার সামনে এসে অত্যন্ত রুঢ় ভাষায় রাগান্বিত স্বরে বলেন “এই, আপনি আমাকে সালাম দিলেন না কেন? বেয়াদবি এবং চামচামি কবে থেকে করছেন? আপনাকে ঘাড় ধরে এই প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেব, ভালো হয়ে যান।
এসময় আমি নম্রতা সহকারে যথাসম্ভব তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে “স্যার, আমিতো আপনার সাথে দেখা হলেই আপনাকে সালাম দিই। কিন্তু আজকে কম্পিউটারের স্ক্রীনে আমার চোখ থাকায় আপনাকে লক্ষ্য করি নাই। কিন্তু তিনি (আমীর হোসাইন) আমার কোন কথায় কর্ণপাত না করে, আমার কথা না শুনে উল্টো আমাকে গালিগালাজ করতে করতে তার রুমের দিকে চলে যান।
প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারী হিসেবে মো. আমীর হোসাইন-এর এ ধরণের ব্যবহারে আমি অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি। যেহেতু আপনি (জেলা প্রশাসক) আমাদের অভিবাবক তাই বিষয়টি আপনাকে জানানো উচিৎ বলে মনে করেছি। এদিকে বৃহস্পতিবার ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অত্র ইনিস্টিটিউটের অধ্যাক্ষ এম এ রহিম। এসময় সভায় নিন্দা প্রস্তাব ও অপ্রয়োজনে মো. আমীর হোসাইন ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করলে শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে যাওয়ার সিধান্ত নেয়া হয়।
সভায় এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, আরএস ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান সাব্বির আহমেদ–, সিভিল ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান চিন্ময় মিত্র, মেরিন ও শিপবিল্ডিং ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান –মোস্তাঈন বিল্লাহ, ইলেকট্রনিক্স ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান নুরুল হুদা, কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান ইমামুল ইসলাম, মেকানিক্যাল বিভাগীয় প্রধান মো. রাসেল হোসেন, টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান প্রণব হালদার সহ বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগন উপস্থিত ছিলেন।
অভিযুক্ত মো. আমির হোসেন জানান, এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। এসময় তিনি অপর উদ্যোক্তা ড. ইমরান চৌধুরীকে দায়ি করে বলেন, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আমার পিছনে লাগিয়ে দিয়েছে যাতে করে এ প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের কাজ যাতে না করতে পারি। আমার একটাই দাবি এ বিষয়ে যাতে সুষ্ঠ তদন্ত করা হয়।
ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উদ্যোক্তা ড. ইমরান চৌধুরী জানান, মো. আমীর হোসাইন ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনিস্টটিউটের একজন উদ্যোক্তা কিন্তু সে নিজেকে প্রতিষ্ঠানেরে একজন মালিক দাবি করে বিভিন্ন সময় অনিয়ম ও দুর্নীতি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে একটি ম্যানেজিং কমিটি করা হয়েছে সেটিও তিনি মানতে চাননা। তিনি প্রতিষ্ঠানের কোনও নিয়মনীতিও তোয়াক্কা করেন না। এমনকি একাধিকবার অধ্যাক্ষসহ শিক্ষক কর্মচারীদের সাথেও রুঢ় ব্যবহার করেছন। এ বিষয়ে তাকে একাধিকবার নিষেধ করা হলেও তিনি তা শোনেননি। বুধবার দুপুরে প্লেসমেন্ট মো. মামুনুর রশীদের সাথে যে ঘটনানাটি ঘটেছে তা নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছে। একই সাথে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরী সভায় নিন্দা ও কর্মবিরতির সিধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।