নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশাল বিভাগে গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানির পশুর চাহিদা কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।
মহামারি করোনা, বৈশিক মন্দা ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ বিভিন্ন কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।শেষ সময়ে গিয়ে চাহিদায় পরিবর্তনও ঘটতে পারে বলে জানান ওই কর্মকর্তারা।
বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অফিস জানাচ্ছে, ২০২১-২২ সালে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় গবাদিপশুর চাহিদা ছিল চার লাখ ৯৮ হাজার ৯৩৭টি। আর এবার এই চাহিদা কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ১১ হাজার ২৯টি। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় ৮৮ হাজার পশুর চাহিদা কম।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, বরিশালের ছয় জেলায় ২০২১-২২ সালে যে পশু কোরবানি হয়, তার মধ্যে গাভী বা বকনা গরুর সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ৭১২টি, ষাঁড় বা বলদ গরুর সংখ্যা ছিল ০২ লাখ ২৮ হাজার ৩৩৪টি, মহিষ ছিল আট হাজার ৩৪১টি, ছাগল এক লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৪টি ও ভেড়া সাত হাজার ১০৮টি।এবারের প্রাথমিক হিসাবে এখন পর্যন্ত বিভাগের ২২ হাজার ৯৮৩ জন খামারির কাছে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া মিলিয়ে এক লাখ কোরবানির উপযোগী গবাদিপশু রয়েছে।
কোরবানি এই জুন মাসের শেষের দিকে হওয়ায় হিসাবটি এখনও পূর্ণাঙ্গ নয়, কারণ এতে সব গৃহস্থ ও খামারিদের গরুর সংখ্যা এখনও নির্ণয় হয়নি। গতবার শুধু স্থানীয় খামারিরা দেড় লাখের ওপরে কোরবানির উপযোগী গরুর জোগান দিয়েছিলেন।
এদিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এই প্রথম কোরবানির হাট ধরতে কালু ও চান্দু নামের বিশাল দেহের দুটি ষাঁড় প্রস্তুত রেখেছেন সিদ্দিক মীর নামের এক কৃষক।এর মধ্যে কালু দাম চাওয়া হচ্ছে ১১ লাখ টাকা আর চান্দুর জন্য হাঁকা হয়েছে সাত লাখ। এবার দক্ষিণাঞ্চলে কালু ও চান্দু কোরবানির বাজার কাঁপাবে বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী।
অন্যদিকে বিভাগের বিভিন্ন খামারে গরু, মহিষ ও ছাগলের বাচ্চা কিনে প্রায় নয় মাস লালন-পালন করছেন খামারিরা। খরকুটা ও কাঁচা ঘাসসহ প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে তাদের মোটাতাজা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। আর এখন কোরবানি সামনে রেখে খামারের প্রায় সব পশুই বিক্রির উপযোগী।
ঝালাকঠি শহরের নতুন কলাবাগান এলাকার গরুর খামারি ইলিয়াছ বেপারী বলেন, আমার খামারে ২০টি গরু সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা হয়। এর মধ্যে খামারে এসেই ছয়টি গরু কিনে নিয়েছেন ক্রেতারা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা. আব্দুস সবুর বলেন, আমাদের ধারণা, ২০ শতাংশের কিছু বেশি গরু বাইরের জেলা থেকে সরবরাহ করার প্রয়োজন হতে পারে। বাকি ৬০ শতাংশ পশু স্থানীয় খামারি এবং ২০ শতাংশ গৃহস্থালি পর্যায় থেকে জোগান দেওয়া সম্ভব হবে।এবার ভারতীয় গরু না এলে কোরবানির হাটে স্থানীয় গরুর দখলে থাকবে বলে জানান ওই পরিচালক।