যে বয়সে স্কুলে থাকার কথা, লেখাপড়া করে বিকেলে বন্ধুদের সাথে খেলার মাঠ দাপিয়ে বেরানোর কথা। ঠিক সেই বয়সে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ভ্যান চালিয়ে অর্থ উপার্জন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত পিতার চিকিৎসার পাশাপাশি সংসারের দায়িত্ব নিতে হয়েছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী গ্রামের ১২ বছরের বাকপ্রতিবন্ধী শিশু আজিজুল ইসলাম আফাতের।
চাঁদশী গ্রামের মৃত লেহাজ উদ্দিন সরদারের মেয়ে আসমা বেগম জানান, আমার স্বামী হালিম সরদার (৫০) পুরান ঢাকার ধোলাইখাল এলাকার সোনা মিয়া সরদারের ছেলে। আমার শশুড় সোনা মিয়া সরদার দ্বিতীয় বিয়ে করায় শ্বাশুড়ি তার সন্তান হালিম সরদারকে রেখে অন্যত্র চলে যায়। দীর্ঘদিন পর আমার স্বামী হালিম সরদার জানতে পারেন, তার বাবার সব সম্পত্তি তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের নামে লিখে দিয়েছে।
পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আমরা ঢাকা ত্যাগ করে আমার বাবার বাড়ি গৌরনদীর চাঁদশী গ্রামে চলে আসি। বাবার বাড়িতে ছোট্ট একটি টিনের ঘরে আমরা বসবাস শুরু করি। এলাকায় এসে আমার স্বামী হালিম সরদার ভাড়ায় তিন চাকার ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালানো শুরু করে। গত দুইবছর পূর্বে হালিম হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পরলে তাকে বিভিন্নস্থানে চিকিৎসা করানো হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় হালিমের মরনব্যাধী ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপরই দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে আমাদের পাঁচ সদস্যের সংসারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।
তিনি (আসমা বেগম) আরও জানান, আমরা অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। বাবার জমিতে বসবাস করছি। ঘরে ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে। তারমধ্যে স্বামীর ক্যান্সার। এ অবস্থায় স্বামীর চিকিৎসাতো দূরের কথা পরিবারের আহারও জুটছেনা। তাই বাধ্য হয়েই আমার জন্মগত বাকপ্রতিবন্ধী শিশু সন্তান আজিজুল ইসলাম আফাত (১২) কে ভ্যান চালাতে বাধ্য করেছি। আসমা বেগম তার ক্যান্সার আক্রান্ত স্বামীর সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং অভাবী পরিবারের জন্য সাহায্য পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন।