জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর এবার লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছে। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়েছে বলে জানিয়েছে লঞ্চ মালিক সমিতি।
মঙ্গলবার লঞ্চ ভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়। যার ধারাবাহিকতায় আজ থেকেই বরিশাল থেকে ঢাকা নৌপথে লঞ্চ ভাড়া বৃদ্ধি হবে। তবে অভ্যন্তরীণ রুটে জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির দিন থেকেই ৩০ থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে নিচ্ছে লঞ্চ মালিকরা।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে জ্বালানী তেলের দামের সমন্বয়ের জন্য ৩০ ভাগ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে করে প্রথম ১’শ কিলোমিটারের প্রতি কিলোমিটার ৩ টাকা করে। আর ১’শ কিলোমিটার পরবর্তী দূরত্বের জন্য ২টাকা ৬০ পয়সা প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া নির্ধারিত হয়েছে।
লঞ্চ মালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সহ সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, আমাদের দাবী ছিল ৪২ ভাগ ভাড়া বাড়ানোর। সেক্ষেত্রে ৩০ ভাগ ভাড়া বাড়িয়েছে মন্ত্রণালয়। এতে করে বরিশাল ঢাকা রুটে আগে ডেকে ৩৫২ টাকা ভাড়া হলেও এখন বৃদ্ধি পেয়ে ৪৫৮ টাকা হয়েছে। তবে আমরা ৪৫০ টাকা করে ভাড়া আদায় করবো। আর কেবিনের ভাড়া নিয়ম অনুযায়ী ডেকের ভাড়ার চেয়ে ৪ গুন নেয়া যাবে। তারপরও যাত্রীদের কথা বিবেচনায় এনে আমরা মালিকরা বসে সিদ্ধান্ত নিবো কেবিনের ভাড়া কি পরিমাণ বাড়াবো।
এদিকে জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির পরপরই পূর্বে সরকার নির্ধারিত ৩৫২ টাকা ডেকের ভাড়া আদায় করছিলো লঞ্চ কতৃপক্ষ। তবে কিছু লঞ্চ পদ্মা সেতু চালুর পর যে ২শ টাকা করে ডেকের ভাড়া নিতো, সেই লঞ্চগুলো ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২৫০ টাকা ভাড়া আদায় করতো। অপরদিকে সিঙ্গেল ও ডাবল কেবিনর ভাড়া পদ্মা সেতু চালুর পর যেটা নেওয়া হতো জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর তার থেকে ১ থেকে ২শ টাকা বাড়িয়ে রাখা হতো।
ঢাকা বরিশাল নৌ রুটের এমভি মানামী লঞ্চের সুপারভাইজার শাহাদাৎ ইসলাম শুভ বলেন, ডেকের ভাড়া ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। তবে মনে হয় না ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার বেশি ভাড়া নিতে পারবো যাত্রীদের কাছ থেকে। সিঙ্গেল এসি কেবিন ১১০০, নন এসি কেবিন ১০০০, ডাবল এসি কেবিন ২২০০, নন এসি ২০০০ ও সোফা ৭০০ টাকা করে নির্ধারণ করেছি আমরা। অর্থাৎ পদ্মা সেতু চালুর পর আমরা যে ভাড়াটা নিতাম, সেটার থেকে ১শ থেকে ২শ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এর বেশি ভাড়া নিলে যাত্রী পাবো না। এমনিতেই যাত্রী কম, এর মধে্য ভাড়া আরও বাড়লে যাত্রী যা আছে তাও পাওয়া যাবে না। জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর সামান্য লাভ নিয়ে লঞ্চ চালাতে হচ্ছে।
অপরদিকে বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চগুলোতে এখন পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারন হয়নি। জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর এই লঞ্চগুলোতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা করে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। বরিশাল থেকে লালমোহন রুটে ২৮০ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩শ টাকা করে। পাশাপাশি বরিশাল থেকে ভোলায় ১২০ টাকার ভাড়া ১৫০, বরিশাল থেকে পাতারহাটে লঞ্চে ১০০ টাকার ভাড়া ডেক ১২০ ও বিলাস ১৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এমন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তবে বুধবার থেকে সঠিক ভাড়া নির্ধারণ হবে বলে জানিয়েছে লঞ্চের মাস্টাররা।