কেন্দ্রীয় ভাবে কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় বরিশালের অভ্যন্তরীন রুটের বাস ভাড়া এখনও বাড়েনি, তবে কিছু নৌ-রুটে ভাড়া বাড়িয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
শনিবার সকালে বরিশাল নদী বন্দর থেকে ভোলাগামী লঞ্চের যাত্রী কামাল হোসেন বলেন, তেলের মূল্যবৃদ্ধির অযুহাতে এ রুটের লঞ্চে প্রায় ৪০-৫০ টাকার মতো বেশি নেয়া হচ্ছে। আগে এ রুটে ভাড়া ১২০ টাকা থাকলেও এখন নেয়া হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকা।
তবে লঞ্চের স্টাফরা বলছেন, এখন পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষনা পাননি তারা। তবে কিছু লঞ্চে ভাড়া বেশি নেয়া হচ্ছে। আর ভাড়া বেশি নেয়া না হলে, নতুন বাড়তি দামে কেনা তেলে খরচ পোষানো যাবে না বলে দাবি তাদের।
অপরদিকে বরিশাল- ভোলা রুটের চলাচলকারী স্পীড বোটগুলোতেও ৫০ টাকা করে জনপ্রতি ভাড়া বেশি নেয়া হচ্ছে। তারপরও খরচ পুষিয়ে ওঠা কঠিন হবে বলে দাবি স্পীডবোট চালকদের। এদিকে বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চগুলো সন্ধ্যার পরে চলাচল করায় এখন পর্যন্ত ভাড়া নিয়ে কিছু জানাতে চাননি তারা। তবে আজকের দিনের জন্য আগাম বিক্রি হওয়া কেবিনের ভাড়া পূর্বের নির্ধারিত থাকছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টারগুলো।
এমভি মানামী লঞ্চের সুপারভাইজার শুভ জানান, এখন পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত তারা পাননি। তবে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়া নতুন ভাড়া তালিকা ঠিক করা হবে। এতে কেবিনের ভাড়ায় তেমন প্রভাব না পরলেও ডেকের ভাড়ায় পরিবর্তন আসবে। যদিও বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও রুপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে সকালে যথানিয়মে চলাচল করছে বলে জানিয়েছেন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
যদিও যাত্রীরা বলছেন, অভ্যন্তরীন রুটে পরিবহনের সংখ্যা কমানো হয়েছে। সেইসাথে দুরপাল্লার বাসে ভাড়াও কিছুটা বেশি নেয়া হয়েছে। বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে জানান, এখনও কেন্দ্রীয়ভাবে বাস ভাড়া বৃদ্ধির কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার খরচ বেড়ে যাওয়ায় অভ্যন্তরীন রুটের বাস মালিকরা দ্রুত ভাড়া বৃদ্ধি করার জন্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না আসায় এখন পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে বসা হয়নি।
এদিকে গত শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষনার পর, বরিশাল নগরসহ আশপাশের ফিলিং স্টেশনগুলোতে মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনগুলো হুমড়ি খেয়ে পরেছিলো। নগরীর নতুন বাজারের ইসরাইল তালুকদার ফিলিং স্টেশন ও ভূইঞা ফিলিং স্টেশনে যানবাহনের ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয় রাত ১০টার পর। এতে বিএম কলেজ রোড এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে ভূইঞা ফিলিং স্টেশন তেল বিক্রি বন্ধ করে দিলে মোটরসাইকেল চালকরা বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে তেল বিক্রি শুরু করে কতৃপক্ষ।
এছাড়া রুপাতলীর ডোস্ট ফিলিং স্টেশনে যানবাহনের চাপের কারণে বরিশাল কুয়াকাটা সড়ক যানজট হয়। ওই পাম্প অধিক মুনাফার আশায় রাত ১০টার পর তেল বিক্রি বন্ধ করে দিয়ে রাত ১২ টার পর তেল বিক্রির কথা বলে। ১২টার মধ্যে তেল নিতে বাগবতিন্ডায় জড়ায় মোটরসাইকেল চালকরা। সাগরদী এলাকার বাসিন্দা সাফিন জানান,আমি সব সময় এই পাম্প থেকে আমার বাইকে তেল ভরি কিন্তু রাত ১০টায় এখানে আসার পর আমাকে বলে এখন তেল বিক্রি করা বন্ধ রাত ১২টার পর তেল বিক্রি করবে। ফিলিং স্টেশন কতৃপক্ষ বলছে তেলের দাম বৃদ্ধি শুনে সব গ্রাহকরা রাত ১২টার আগে মটর সাইকেল নিয়ে তেল নেয়ার জন্য পাম্পে ভীর জমিয়েছে গ্রাহকরা তাই পাম্প বন্ধ করে দিয়েছি রাত ১২টার পর পাম্প চালু করবো ।
গতকাল সকালে এমন দৃশ্য দেখা যায়নি পাম্পগুলোতে। বরং বেশিরভাগ পাম্পেই যানবাহনের চাপ ছিলো না, একেবারে। অনেক পাম্পে তো দীর্ঘ সময় ধরে যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে কর্মচারীদের।
ব্যক্তিগত যানবাহনের চালকরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম একবারে অনেক বেশি বাড়ায় এখন হিসেব কষে চলার পাশাপাশি বিকল্প চিন্তা ও করছেন তারা।