স্টাফ রিপোর্টার: বিয়ের নামে প্রতারণা ও ধর্ষণের অভিযোগে এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী কর্মকর্তার দায়ের করা মামলার চার্জ গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. ইয়ারব হোসেন চার্জ গঠন করেন বলে বেঞ্চ সহকারী কাজী হুমায়ুন কবির জানান।
তিনি জানান, বাদী ও মামলার বিবাদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ফেরদৌসের উপস্থিতিতে মামলার চার্জ গঠন করা হয়েছে। বিবাদীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আমলে নিয়ে চার্জ গঠন করা হয়। আগামী ৩০ জুন সাক্ষ্য নেওয়ার দিন ধার্য হয়েছে। সেদিন বাদীর সাক্ষ্য নেওয়া হবে।
বেঞ্চ সহকারী আরও জানান, মামলার বাদীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে একই দিন বিবাদীর জামিন বাতিলের আবেদন আমলে নিয়েছেন বিচারক। মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে করা ওই আবেদন তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেবেন বিচারক।
বিবাদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান দশম বরিশাল আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত।
নালিশি মামলার বরাতে বেঞ্চ সহকারী জানান, বাদী ও বিবাদী একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতেন। সেই সূত্রে তারা পূর্বপরিচিত। বরিশাল এসে তাদের মধ্যে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি নারী কর্মকর্তার স্বামী জানতে পেরে গত বছরের জানুয়ারিতে ডিভোর্স দেন।
অভিযোগে দাবি করা হয়, ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দশম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের বাংলোতে ‘ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী’ ওই নারীর সঙ্গে মাহমুদুল হাসানের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অনুষ্ঠানে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অংশ নেন। তবে ২০২২ সালের মার্চে মাহমুদুলের প্রথম স্ত্রী সন্তানসহ ওই বাংলাতে আসেন, তখন বাদীও সেখানে যান। বিয়ে নিবন্ধনের জন্য চাপ দিলে তখন তাকে মারধর করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২২ সালের ২২ জুলাই পুলিশ কর্মকর্তা ওই নারীকে নিয়ে ঢাকার ইস্কাটনে পুলিশ অফিসার্স মেসে যান। ২৫ জুলাই গুলশানের এক বন্ধুর বাসায় তাদের বিয়ে নিবন্ধন হয়। পরে তারা বরিশালে ফিরে আসেন।
তবে এরপর কাবিননামা চাইলেও তা পাননি জানিয়ে বাদী বলন, গত বছরের ৮ অক্টোবর মাহমুদুল হাসান বরিশাল থেকে চলে যান। এরপর যোগাযোগ করা হলে তিনি বিয়ের কথা ‘ভুলে যেতে’ বলেন এবং বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন।
এরপর ২০ নভেম্বর স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে ওই নারী আইনি নোটিশ পাঠান। জবাব না পেয়ে ২৭ নভেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেন। তখন পুলিশ আদালতে মামলার পরামর্শ দেয়। আদালত অভিযোগ বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আল ফয়সাল গত মার্চে তদন্ত করে প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেন।