জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন ও বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ শেষে নিউ ইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সময় শনিবার দুপুরে নিউ ইয়র্ক ত্যাগ করে সন্ধ্যায় তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছান।
আগের দিন শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে বাংলায় বক্তৃতা করেন শেখ হাসিনা। বিশ্বের সঙ্কটময় পরিস্থিতি তুলে ধরে যুদ্ধ আর পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মত বৈরীপন্থা কখনও কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। আলাপ-আলোচনাই সঙ্কট ও বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বোত্তম উপায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বাণিজ্যিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে উভয় দেশের সরকারপ্রধান সম্মত হন।
একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক আন্তোনিও ভিতোরিনোর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। কসোভোর প্রেসিডেন্ট ভিজোসা ওসমানি সদরিউর সঙ্গেও বৈঠক করেন। সেখানে বাংলাদেশ ও কসোভোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়।
২১ সেপ্টেম্বর সকালে টেকসই আবাসন বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক সম্মেলনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ, বতসোয়ানা, স্লোভাক রিপাবলিক এবং ইউএন হ্যাবিট্যাট যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। টেকসই আবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও অভিজ্ঞতা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস সোয়াব এদিন সাক্ষাত করেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। মহামারী ও ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়নশীল দেশগুলো খাদ্য ও জ্বালানি সংকটসহ আর্থিক ও বাণিজ্যিক দিক দিয়ে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে, সে বিষয়ে বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।এদিন গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের উচ্চ পর্যায়ের সভাতেও অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ মহাসচিব, জার্মানির চ্যান্সেলর, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট, আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট, বারবাডোসের প্রধানমন্ত্রী এবং ইন্দোনেশিয়া ও ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও অংশ নেন এ সভায়।
ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য এবং জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে দুই সপ্তাহের সফরে ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯ সেপ্টেম্বর রানির শেষকৃত্যে অংশ নেওয়ার পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের উদ্দেশে নিউ ইয়র্কে যান প্রধানমন্ত্রী।
সফর শেষে আগামী ৪ অক্টোবর লন্ডন হয়ে দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।