স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভাগ-বাটোয়ারা দ্বন্দ্বে ফাঁস হয়ে গেছে আল্লাহর নামে মানত করে ছেড়ে দেয়া ষাঁড় জবাই করার ঘটনা।
বিষয়টি প্রকাশ পাওয়া মাত্রই আশেপাশের এলাকা থেকে আরো ২টি আল্লাহর ষাঁড় গায়েবসহ ক’ব্যক্তির চুরি হওয়া গরুগুলোর পেছনে কসাই সুজন খান জড়িত রয়েছে বলে আলোচনার ঝড় বইছে। বরিশাল নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ড সোনা মিয়ার পুল বাজার কসাই জিয়ার দোকানের সামনে আল্লাহর ষাঁড় জবাই করে মাংস বিক্রি করার কয়েক মাস পর বন্টন দ্বন্দ্বে উপরোক্ত ঘটনাগুলোর সূত্রপাত ঘটেছে।
স্থানীয় মোঃ মোসলেম খানের কসাই তিন ছেলে জিয়া, হেমায়েত ও সুজন সোনামিয়ার পুল বাজার কমিটির সেক্রটারী শিপনের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে এ সব অপকর্ম করে আসছে বলে জানা গেছে। শিপন জানিয়েছে, এ সব বিষয়ে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই এবং তিনি কিছুই জানেন না। কসাই জিয়া বলেন, তার দোকানের সামনে তার ভাই কসাই সুজন ও হেমায়েত আল্লাহর ষাঁড় জবাই দেয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না। কারণ, সুজন গরু চুরি করে মামলার আসামি হয়েছিল। সেই মামলায় জেল হাজতে যাবার পর সম্পর্ক নেই।
প্রত্যক্ষদর্শী বাবলু বলেন, মাস কয়েক পূর্বে দিনটি ছিল সোমবার। সেই দিন ভোরে কসাই জিয়ার দোকানের সামনে একটি বলদ গরু জবাই করে সুজন ও হেমায়েত দু’ভাই। এ সময় তিনি দেখতে পান গরুর চামড়ার উপর ক্রোস চিহ্ন দেয়া। প্রতিবাদ করলে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জোর করে ২৮ হাজার টাকা দেয়। টাকা নেয়ার পর বিষয়টি এবং আল্লাহর ষাঁড় জবাই করে মাংস বিক্রির ঘটনাটি এলাকার কিছু যুবকদের মধ্যে প্রকাশ পায়। তখন সুজন ওই ২৮ হাজার টাকা থেকে ১৮ হাজার টাকা নিয়ে হৈ-হুল্লা করা যুবকদের দিয়ে শান্ত করে। বিষয়টি নিয়ে তিনি সোনামিয়ার পুল বাজার কমিটির সভাপতি আ. ছালাম মিয়ার কাছে যান। কিন্তু সভাপতি ঘটনা শুনে সালিশ-মীমাংসায় বসেননি। কারণ হিসেবে আ. ছালাম মিয়া জানান, আল্লাহর ষাঁড় জবাইয়ের বিচার আমি করতে পারবো না।
২৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মনিরুজ্জমান তালুকদার বলেছেন বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়া হবে। স্থানীয় বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ড হরিনাফুলিয়া ও নতুন বাজার এলাকায় মাস কয়েক পূর্বে একটি সাদা রং এর আল্লাহর ষাঁড় এবং পিঠে উপর (চুট) কালো বর্ণের ছিল। মাস ৬/৭ মাস পূর্বে ষাঁড়টি নতুন বাজার এলাকায় আসার পর ওই এলাকার স্থানীয় সুজন নামের এক ব্যক্তির সহযোগিতায় কসাই হেমায়েত সোনামিয়ার পুল বাজারে নিয়ে আসে। ওই দিন ভোরে কসাই সুজন ও তার ভাই হেমায়েত মিলে ষাঁড়টি জবাই করে। পরে বরিশাল হাতেম আলী কলেজ সংলগ্ন চৌমাথা বাজারে আব্দুল্লাহ জবাই করা সেই ষাঁড়ের মাংস বিক্রি করে। এরপর কড়াপুর রায়পাশা স্কুল সংলগ্ন এলাকা থেকে একটি আল্লাহর ষাঁড় নিখোঁজ হয়ে যায়। উত্তর কড়াপুর গ্রামের নদীরপাড় থেকে একটি আল্লাহর ষাঁড় নিখোঁজ হয়ে যায়। এরপরপরই উত্তর কড়াপুর বারুখায়ের দীঘির পাড় এলাকা থেকে ৩/৪ বাড়ির ৬/৭টা গুরু চুরির ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বিভিন্ন এলাকার নেশাগ্রস্ত যুবকদের অল্প কিছু টাকার বিনিময় সোর্স মারফত ব্যবহার করে আল্লাহর ষাঁড় চুরি করে জবাই করছে। যে কারণে দিন দিন আল্লাহর ষাঁড়ের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। স্থানীয় অনেক বাসিন্দা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছে।